নিউটনের শীতলীকরণ সূত্র

তাপ স্থানান্তরের প্রক্রিয়ায়, নিউটনের শীতলীকরণ সূত্র হলো একটি ভৌত নিয়ম যা নির্দেশ করে ।

কোনো বস্তুর তাপ হারানোর হার বস্তু এবং তার পারিপার্শ্বিকের তাপমাত্রার পার্থক্যের সাথে সরাসরি সমানুপাতিক।

নিউটনের শীতলীকরণ সূত্র

এখানে,

Q = শরীর থেকে তাপ স্থানান্তরের হার

h = তাপ স্থানান্তর সহগ

A = তাপ স্থানান্তর পৃষ্ঠ ক্ষেত্রফল

T = বস্তুর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা

T(env)= পরিবেশের তাপমাত্রা

T(t) = সময়-নির্ভর তাপমাত্রা

এই সূত্রটি তখনই প্রয়োগ করা যাবে যখন তাপমাত্রার পার্থক্য খুব কম হয় এবং তাপ স্থানান্তরের প্রকৃতি একই থাকে। যেমন, সূত্রটি তাপ স্থানান্তর সহগ (যা তাপ হ্রাস এবং তাপমাত্রার পার্থক্যের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে) একটি ধ্রুব রাশি -এই বিবৃতির সমতুল্য।

তাপ সঞ্চালনে, নিউটনের সূত্র সাধারণত ফুরিয়ারের সূত্রের ফলস্বরূপ অনুসরণ করা হয়। বেশিরভাগ পদার্থের তাপ পরিবাহিতা শুধুমাত্র তাপমাত্রার উপর দুর্বলভাবে নির্ভর করে, ফলে তাপ স্থানান্তর সহগের ধ্রুব থাকার শর্তটি পূরণ সম্ভব হয়। পরিচলন পদ্ধতিতে, নিউটনের সূত্র বলপ্রয়োগকৃত বায়ু বা পাম্প করা তরল শীতলীকরণের জন্য অনুসরণ করা হয়, যেখানে তরলের বৈশিষ্ট্যসমূহ তাপমাত্রার সাথে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত বা ভিন্ন হয় না। তবে এই সূত্র প্লবতা-পরিচালিত পরিচলনের ক্ষেত্রে প্রায় সত্য হয়, যেখানে প্রবাহের বেগ বৃদ্ধি পায় তাপমাত্রা পার্থক্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে। বিকিরণ পদ্ধতিতে তাপ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে, নিউটনের শীতলীকরণ সূত্র শুধুমাত্র খুব সামান্য তাপমাত্রার পার্থক্যের জন্য কার্যকর হয়।

একই পরিবেশে কোন পদার্থের তাপ হারাবার হার ওই পদার্থের তাপমাত্রা এবং তার পারিপার্শ্বিকের তাপমাত্রার পার্থক্যের সমানুপাতিক। এটিই হলো শীতলীকরণ পদ্ধতির মূলনীতি।তাপমাত্রার পার্থক্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলতে গেলে, নিউটনের সূত্রকে (অনুমিত ধারণাসমূহকে সরলীকরণ করে, যেমন নিম্ন বায়োট সংখ্যা এবং তাপমাত্রা- অনির্ভর তাপ ধারকত্ব বিবেচনা করে) একটি সরল ডিফারেনশিয়াল সমীকরণ আকারে প্রকাশ করা যায় যেখানে তাপমাত্রার পার্থক্যকে সময়ের ফাংশন হিসেবে বর্ণনা করা হয়। উক্ত সমীকরণের সমাধান সময়ের সাথে তাপমাত্রা-পার্থক্যের সূচকীয় হ্রাসকে বর্ণনা করে। তাপমাত্রার পার্থক্যের এই বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হ্রাস নিউটনের শীতলীকরণ সূত্রের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।

নিউটনের সূত্রের গাণিতিক রূপ সম্পাদনা

তাপ স্থানান্তরবিদ্যায় ব্যবহৃত নিউটনের সূত্রের বিবৃতিটি গাণিতিক সম্পর্ক স্থাপনে ব্যবহৃত হয়। যা হলো একটি বস্তুর তাপ হ্রাসের হার বস্তু এবং তার পারিপার্শ্বিকের তাপমাত্রার পার্থক্যের সমানুপাতিক। তাপমাত্রা-অনির্ভর তাপ স্থানান্তর সহগের জন্য, এর গাণিতিক রূপটি হলো:

যেখানে-

  • হলো বস্তু থেকে তাপ স্থানান্তরের হার (এসআই একক: ওয়াট ),
  • হলো তাপ স্থানান্তর সহগ (এক্ষেত্রে T-অনির্ভর ধরে নেওয়া হয় এবং বস্তুর পৃষ্ঠের গড়মান ব্যবহার করা হয়) (এসআই একক: W/m 2 ⋅K),
  • হলো তাপ স্থানান্তরের পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল (এসআই একক: m 2 ),
  • হলো বস্তুর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা (এসআই একক: K),
  • হলো পরিবেশের তাপমাত্রা; অর্থাৎ, বস্তুর পৃষ্ঠ থেকে যথাযথ দূরের তাপমাত্রা (এসআই একক: K),
  • হলো পরিবেশ এবং বস্তুর মধ্যে সময়-নির্ভর তাপমাত্রার পার্থক্য (এসআই একক: K)।

তাপ স্থানান্তর সহগ h তরলের ভৌত বৈশিষ্ট্য এবং পরিচলন ঘটে এমন ভৌত পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। অতএব , একটি একক ব্যবহারযোগ্য তাপ স্থানান্তর সহগ (যা শীতলীকরণ এবং উত্তপ্ত করার সময় তাপমাত্রার পার্থক্যের পরিসীমায় উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয় না) প্রতিটি সিস্টেমের জন্য প্রতিপাদন করতে হবে বা পরীক্ষালব্ধ মান খুঁজতে হবে যেন সেটি সহজেই বিশ্লেষণ করা যায়।

সাধারণ কনফিগারেশন এবং তরলসমূহের জন্য তাপ স্থানান্তর সহগ গণনা করার জন্য বিভিন্ন সূত্র এবং পারস্পরিক সম্পর্ক আছে। ল্যামিনার প্রবাহের ক্ষেত্রে, তাপ স্থানান্তর সহগ সাধারণত অশান্ত প্রবাহের তুলনায় ছোট হয় কারণ অশান্ত প্রবাহের তাপ স্থানান্তর পৃষ্ঠের সীমানা স্তরের সাথে শক্তিশালী মিশ্রণ থাকে। [১] যখন ল্যামিনার থেকে অশান্ত প্রবাহে রূপান্তর ঘটে তখন একটি সিস্টেমের তাপ স্থানান্তর সহগের পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করুন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Lienhard, John H. IV; Lienhard, John H., V (২০১৯)। "Laminar and turbulent boundary layers"। A Heat Transfer Textbook (5th সংস্করণ)। Dover Publications। পৃষ্ঠা 271–347। আইএসবিএন 978-0-486-83735-2