নাফাখুম জলপ্রপাত
নাফাখুম জলপ্রপাত বান্দরবান জেলায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত। নাফাখুম শব্দটি মারমা শব্দ "ঙাফা-খোং" থেকে এসেছে। "ঙাফা" অর্থ 'মাছ' আর "খোং" অর্থ 'জলপ্রপাত'। রেমাক্রী নদীতে এক ধরনের মাছ পাওয়া যায়, যার নাম নাফা মাছ। এই মাছ সবসময় স্রোতের ঠিক বিপরীত দিকে চলে। বিপরীত দিকে চলতে চলতে মাছগুলো যখন লাফিয়ে ঝর্ণা পার হতে যায় ঠিক তখনই আদিবাসীরা লাফিয়ে ওঠা মাছগুলোকে জাল বা কাপড় দিয়ে ধরে ফেলে। এ থেকে এই ঝর্ণার নাম দেওয়া হয়েছে নাফাখুম ঝর্ণা। এটিকে আমিয়াখুম জলপ্রপাতের পরই বাংলাদেশের দ্বিতীয় বড় জলপ্রপাত হিসেবে ধরা হয়। অনিন্দ্য সুন্দর এই জলপ্রপাতটি রেমাক্রি থেকে মাত্র আড়াই ঘণ্টা হাঁটার পথ দূরত্বে অবস্থিত।
নাফাখুম জলপ্রপাত | |
---|---|
অবস্থান | থানচি উপজেলা, বান্দরবান |
স্থানাঙ্ক | ২১°৪৩′১৩″ উত্তর ৯২°৩২′০১″ পূর্ব / ২১.৭২০৩° উত্তর ৯২.৫৩৩৭° পূর্ব |
অবস্থান
সম্পাদনাবান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নে এই জলপ্রপাতটি অবস্থিত[১]। বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি একটি মারমা অধু্যসিত এলাকা। বান্দরবান হতে ৭৯ কি.মি. দুরে অবস্থিত থানচি। সাঙ্গু নদীর পাড়ে অবস্থিত থানচি বাজার। এই সাঙ্গু নদী ধরে রেমাক্রীর দিকে ধীরে ধীরে উপরে উঠতে হয় নৌকা বেঁয়ে। কারণ নদীটি রেমাক্রী হতে থানচির দিকে ধীরে ধীরে ঢালু হয়ে এসেছে এবং এই জন্য এখানে অনেক স্রোত থাকে। নদীর কিছুদূর পর পর ১-২ ফুট এমন কি কোথাও কোথাও ৪/৫ ফুট পর্যন্ত ঢালু হয়ে নিচে নেমেছে। নদীর দুপাশে সবুজে মোড়ানো উচু উচু পাহাড় রয়েছে। কোন কোন পাহাড় এতই উচু যে তার চূড়া ঢেকে থাকে মেঘের আস্তরে। সবুজে ঘেরা সে পাহাড়ে মাঝে মাঝে দু একটি উপজাতী বসতঘর দেখা যায়। পাহাড়ের ঢালুতে টিন আর বেড়ার ঘর গুলো মারমা ভাষায় বলে ‘খুম’ মানে হচ্ছে জলপ্রপাত। রেমাক্রি থেকে তিন ঘণ্টার হাঁটা পথ দূরত্বে এই জলপ্রপাত।
পরিবহন ব্যবস্থা
সম্পাদনাবান্দরবান শহর থেকে থানচি উপজেলা সদরের দূরত্ব ৭৯ কি.মি.। রিজার্ভ চাঁদের গাড়ীতে বান্দরবান থেকে থানচি যেতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা। বর্ষায় ইঞ্জিনবোটে থানচি থেকে তিন্দু যেতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা। তিন্দু থেকে রেমাক্রি যেতে লাগবে আরও আড়াই ঘণ্টা। শীতের সময় ইঞ্জিন বোট চলার মত নদীতে যথেষ্ট গভীরতা থাকেনা। তখন ঠ্যালা নৌকাই একমাত্র বাহন। রেমাক্রি বাজার থেকে দুইভাবে নাফাখুম-এ যাওয়া পথ আছে। এক ঘণ্টা উঁচু-নিচু পাহাড়ী পথ মাড়িয়ে (পাহাড় ডিঙিয়ে) তারপর রেমাক্রি খালের পাড় ধরে বাকিটা হেঁটে এই পথে চার ঘণ্টা লাগে নাফাখুমে পৌঁছাতে। এতে রেমাক্রি খাল ক্রস করতে হয় তিন বার এবং শেষের দিকে সাঁতার পানি পেরুতে হয়। অপরদিকে আবার পাহাড় না ডিঙিয়ে গোটা পথই রেমাক্রি খালের পাশ দিয়েও যাওয়া যায়।[২]
আবাসন ব্যবস্থা
সম্পাদনারাতে থাকার জন্য যেতে হয় তিন্দু, রেমাক্রি। মারমাদের বাঁশ-কাঠের বাড়ীতে সেখানে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে।
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
নাফাখুম জলপ্রপাত
-
নাফাখুম জলপ্রপাত
-
নাফাখুম জলপ্রপাত
-
সাঙ্গু নদী
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "দর্শনীয় স্থান"। bangladesh.gov.bd.com।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "জলপ্রপাত নাফাখুম"।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- বান্দরবান জেলার সরকারি ওয়েব জেলা তথ্য বাতায়ন