দ্রবণ

পদার্থের জলীয় মিশ্রণ

দ্রবণ (ইংরেজি: Solution) হলো দুই বা ততোধিক পদার্থের এমন মিশ্রণ যেখানে পদার্থগুলো নিজ নিজ আণবিক রাসায়নিক ধর্ম বজায় রেখে একসাথে সূক্ষ্মভাবে মিশে একটি সমসত্ত এবং একটিমাত্র দশাসম্পন্ন মিশ্রণ উৎপন্ন করে এবং উপাদানগুলির আপেক্ষিক পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত পরিবর্তন করা যায়। দ্রবণে সাধারণত দুটি অংশ থাকে:

  1. দ্রাবক বা সলভেন্ট
  2. দ্রাব বা সলিউট
এন্ডোথেরমিক সলিউশন গঠনের সাথে যুক্ত এনটহালপি পরিবর্তনগুলি প্রদর্শন করে এনার্জি লেভেল ডায়াগ্রাম

যে উপাদানটির ভৌত অবস্থা উৎপন্ন দ্রবণটির ভৌত অবস্থা নির্ধারণ করে তাকে দ্রাবক বলে। সাধারণত দ্রাবক, দ্রাব্যের থেকে বেশি বেশি পরিমাণে থাকে; যেমন: চিনি, জলে দ্রবীভূত হয়ে সমসত্ত মিশ্রণ উৎপন্ন করে। এখানে চিনি হল দ্রাব এবং জল দ্রাবক। আবার ১০০ গ্রাম জলে ১১০ গ্রাম পটাশিয়াম নাইট্রেট দ্রবীভূত করলে, দ্রবণে পটাশিয়াম নাইট্রেটের চেয়ে জলের পরিমাণ কম হলেও, পটাসিয়াম নাইট্রেটের ভৌত অবস্থা জলের মত তরল হয় বলে দ্রবণটির দ্রাবক হবে জল।

সাধারণত দ্রবীভবন প্রক্রিয়া ঘটবার সময় দ্রাবক দ্বারা দ্রাব অণুর পারিপার্শিক পরিবর্তনের সময় শক্তির আদান প্রদান ঘটে - যা তাপমোচী বা তাপশোষী প্রকারের হতে পারে।

দ্রবণের প্রকারভেদসম্পাদনা

দ্রবণে উপস্থিত উপাদানের সংখ্যার উপর নির্ভর করে: দ্রবণে উপস্থিত সংখ্যার উপর নির্ভর করে দ্রবনকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। দ্রবণে দুটি উপাদান থাকলে সেটিকে বলে যুগ্ম দ্রবণ (binary solution),দ্রবণে তিনটি উপাদান উপস্থিত থাকলে সেটিকে বলে ত্রিসংখ্যক দ্রবণ(ternary solution) এবং দ্রবণে চারটি উপাদান উপস্থিত থাকলে তাকে বলে চতু:সংখ্যক দ্রবণ(quaternary solution)

দ্রাব ও দ্রাবকের ভৌত প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে: দ্রাব ও দ্রাবকের ভৌত অবস্থার ওপর নির্ভর করে দ্রবণগুলিকে নিম্নলিখিত নয়টি ভাগে ভাগ করা যায়-


তরলে কঠিনের দ্রবণসম্পাদনা

তরল দ্রাবকের মধ্যে কঠিন দ্রাব্য মেশালে তরলে কঠিনের দ্রবণ উৎপন্ন হয়। যেমন-জলে চিনি, তুঁতে, সাধারণ লবণ দ্রবীভূত হয়ে যথাক্রমে চিনির, তুঁতের এবং লবনের জলীয় দ্রবণ উৎপন্ন করে। কার্বন ডাইসালফাইডে সালফার বা ফসফরাস দ্রবীভূত হয়ে এরকম দ্রবণ উৎপন্ন করে। গালা বা রজন জলে অদ্রাব্য কিন্তু অ্যালকোহল দ্রবীভূত হয়ে দ্রবণ উৎপন্ন করে।

তরলে তরলের দ্রবণসম্পাদনা

তরল দ্রাবকের মধ্যে তরল দ্রাব্য মেশালে এই রকম দ্রবণ উৎপন্ন হয়। যেমন-জলে অ্যালকোহল বা গ্লিসারিন মেশালে এই রকম দ্রবণ তৈরি হয়।

তরলে গ্যাসের দ্রবণসম্পাদনা

তরল দ্রাবকের মধ্যে কোন গ্যাসীয় দ্রাব্য মেশালে এই রকম দ্রবণ উৎপন্ন হয়। যেমন- কার্বন ডাইঅক্সাইড, অ্যামোনিয়া গ্যাস জলে দ্রবীভূত হয়ে এইরকম দ্রবণ উৎপন্ন করে। বায়ুর অক্সিজেন জলে দ্রবীভূত হয় বলেই জলাশয়ের জলচর প্রাণীরা দ্রবীভূত অক্সিজেন নিয়ে বেঁচে থাকে। সোডাজল হল অতিরিক্ত চাপে যে জলে দ্রবীভূত কার্বন ডাইঅক্সাইড এর জলীয় দ্রবণ।

প্রকৃত দ্রবণসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা