'দ্য শেখ (['The Sheik, দ্য শেইক] ত্রুটি: {{Lang-xx}}: text has italic markup (সাহায্য)) বিংশ শতাব্দীর প্রথম পাদের বিশিষ্ট ইংরেজ সাহিত্যিক এডিথ মড হুল রচিত একটি উপন্যাস।[] এই উপন্যাসখানি তার রচিত অন্যান্য উপন্যাসের মতোই। তবে এটি তার সর্বাধিক জনপ্রিয় গ্রন্থ। একই চলচ্চিত্রায়িতও হয়েছিল এই বইখানি। দ্য শেখ উপন্যাসখানি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১৯ সালে। কিন্তু আজও বইটি মুদ্রিত অবস্থায় পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে বইখানি কপিরাইটমুক্ত এবং বর্তমানে এটি ই-বই ফরম্যাটেও সহজলভ্য।[]

বিস্ক্যায় বালুঝড়।

কাহিনি-সারাংশ

সম্পাদনা

ঘটনার সূত্রপাত আলজিয়ার্সের ব্রিস্কা শহরের এক হোটেলে ডায়ানা মায়ো ও তার ভাইয়ের আয়োজিত এক ড্যান্স-পার্টিতে। উপন্যাসের এক অপ্রধান চরিত্র লেডি কনওয়ের কথোপকথন থেকে ডায়ানার ইতিবৃত্ত প্রকাশিত হয়। কনওয়ে ডায়ানাকে পছন্দ করতেন না। আসলে ডায়ানা মরুভূমিতে একটি এক মাসের ট্রিপের আয়োজন করেছিল। এই যাত্রায় তার সঙ্গী হবার কথা ছিল কেবল এক আরব গাইডের। কেউই এই কাজটিকে বুদ্ধিমানের কাজ বলে মানতে চাননি। লেডি কনওয়ে মনে করতেন ডায়ানার “স্ক্যান্ডালাস” লালনপালনকেই এর জন্য দায়ী করেন। ডায়ানার মা তাকে জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান ও বাবা সেই দুঃখে আত্মহত্যা করেন। সেই কারণেই অনাথা ডায়ানা একজন পুরুষের মতো করে বেড়ে উঠেছিল বলে কনওয়ে মনে করতেন।

এরপর কয়েকটি ছোটোখাটো ঘটনা ঘটে যা কেবল ডায়ানার চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলতেই সাহায্য করে। যেমন একটি বিবাহ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ডায়ানা বলে যে সে প্রেম কি তা জানে না এবং জানতেও চান না। এরপর সে বেরিয়ে পড়ে মরুভূমিতে। কিন্তু কিছুদূর যাবার পরেই শেখ আহমেদ বেন হাসেন তাকে অপহরণ করে। পরে জানা যায়, তার গাইডটি ঘুষ খেয়ে এই অপহরণে মদত দিয়েছিল।

শেখ তাকে নিজের তাঁবুতে নিয়ে এসে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ব্যাপারটি যদিও উপন্যাসে সরাসরি বর্ণিত হয়নি। তবুও গল্পের সূত্র থেকে সেটি পরিষ্কার। কয়েক মাস ডায়ানা শেখের তাঁবুতে কাটায় এবং নিয়মিত সেখানে ধর্ষিতা হয়। ডায়ানা শেখকে ঘৃণা করতে থাকে। আর এই সূত্রে তার চরিত্রও অনেকখানি প্রকাশিত হয়।

কিছুদিন বাদে ডায়ানাকে শেখের চাকর গ্যাস্টনের তত্ত্বাবধানে মরুভূমিতে বেড়ানোর অনুমতি দেওয়া হলে ডায়ানা পালিয়ে যাবার ছক কষে। একদিন বেড়ানোর সময় ডায়ানা তার রুমালটি মাটিতে ফেলে দেয়। গ্যাস্টন ভদ্রতা করে সেটি তুলবার জন্য ঘোড়া থেকে নামলে ডায়ানা ঘোড়া নিয়ে পালিয়ে যায়। যদিও আহমেদ ডায়ানাকে ধরে ফেলে। আহমেদের সঙ্গে এক ঘোড়ায় ফিরে আসার পথে ডায়ানা হঠাৎ অনুভব করে যে সে শেখকে ভালবেসে ফেলেছে। তবে সে কিছু বলে না। কারণ সে জানত ভালবাসা শেখের কাছে এক বিরক্তিকর ব্যাপার। জানতে পারলে শেখ তাকে তাড়িয়ে দেবে।

ডায়ানা শেখের জোর জবরদস্তির কাছে নতি স্বীকার করে। তখন দুজনের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস গড়ে ওঠে। আমরা এটুকুই জানতে পারে, ডায়ানা ইংরেজ বলেই শেখ তার প্রতি এমন দুর্ব্যবহার করছে। কিন্তু তার সঠিক কারণ কি তা জানা যায় না। এরপর আবার তাকে বেড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়। এই বার আহমেদের এক প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ তাকে অপহরণ করে। এরপরেই আহমেদ ডায়ানার প্রতি তার ভালবাসা অনুভব করতে থাকে। সে তাকে ফিরিয়ে আনতে যায়। ফিরিয়েও আনে। কিন্তু এই কাজ করতে গিয়ে জখম হয়। কয়েক সপ্তাহ তাঁবুতে অসুস্থ শরীরে পড়ে থাকে সে। তখন তার এক বন্ধু ডায়ানার কাছে ব্যাখ্যা করে কেন সে ইংরেজদের এত ঘৃণা করত। তার বাবা ছিল ইংরেজ এবং মা স্প্যানিশ। শেখের বাবা শেখের মায়ের প্রতি অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেছিল। সেই থেকে তার রাগ ইংরেজ জাতটার উপর।

সেরে উঠে এক উত্তেজনাময় মুহুর্তে আহমেদ বলে যে সে ডায়ানাকে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে। এর কারণ হিসেবে সে জানায় যে ডায়ানাকে সে ভালবেসে ফেলেছে। তাই আর তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। মন খারাপ হয়ে যায় ডায়ানার। সে মিনতি করে। ব্যক্ত করে নিজের প্রেম। তবু সিদ্ধান্তে অটল থাকে আহমেদ। শেষে নিজের বাবার পথ ধরে নিজেকে শেষ করে দিতে যায় ডায়ানা। তখনই আহমেদ ছুটে এসে তার বন্দুকটি কেড়ে নেয়। বুকে জড়িয়ে ধরে তাকে। বলে সে কখনও যেতে দেবে না ডায়ানাকে। বইটির সমাপ্তি ঘটে তাদের সুমধুর প্রেমের ঘোষণার মধ্যে দিয়ে।

সমালোচনা

সম্পাদনা

এই বইটির উপজীব্য ছিল এক স্বাধীনচেতা স্বনির্ভর নারী কীভাবে এক পুরুষের হাতে বন্দী হয়ে তার হাতে নির্যাতিত ও ধর্ষিত হয়। এই কারণে বইটি যথেষ্ট সমালোচিতও হয়। তার উপরে আবার মেয়েটি তার ধর্ষকের প্রেমে পড়ে। এই বক্তব্যটি আরও খারাপ সমালোচনার দিকে বইটিকে ঠেলে দেয়। অন্যদিকে উইলিয়াম শেক্সপিয়র রচিত টেমিং অফ দ্য শ্রু নাটকের প্লটের সঙ্গেও এই কাহিনির সাদৃশ্য দেখা যায়।

পাদটীকা

সম্পাদনা