দূরবীক্ষণ যন্ত্র
দূরবীক্ষণ যন্ত্র তথা দূরবীন (টেলিস্কোপ) এমন একটি যন্ত্র যা দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তু দর্শনের জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি দূরবর্তী বস্তু থেকে নির্গত বিকিরণ সংগ্রহ, পরিমাপ এবং বিশ্লেষণ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। সাধারণ দূরবীক্ষণ যন্ত্র তৈরি করা হয় লেন্স এবং দর্পণের সাহায্যে। এ ধরনের দুরবিনের সাহায্যে দূরের বস্তু আরো উজ্জ্বলভাবে বা অস্পষ্ট বস্তু আরো স্পষ্ট করে দেখা যায়। আবার বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে ব্যবহৃত দূরবীক্ষণ যন্ত্র বলতে এমন কৌশল বুঝায় যার সাহায্যে সীমিত দিক থেকে আগত তড়িচ্চুম্বক বিকিরণ বা কণা-বিকিরণ হিসেবে আগত বিকিরণ সংগ্রহ করা যায়।
ইতিহাস
সম্পাদনাপ্রথম দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি তৈরি করেছিলেন হ্যান্স লিপারশে, ১৬০৮ সালে। ১৬০৯ সালে দূরবর্তী তারা পর্যবেক্ষণের জন্য গ্যালিলিও গ্যালিলি একটি দুরবিন তৈরি করেন। তিনি এই যন্ত্র তৈরির ধারণা লাভ করেছিলেন এক চশমা নির্মাতার কাছ থেকে। ঐ চশমা নির্মাতা একদিন লক্ষ্য করেন, তার দোকানে বসানো স্থির লেন্স পদ্ধতির মধ্য দিয়ে দেখলে দূরের বাতাসের দিক নির্ধারক যন্ত্রটি বিবর্ধিত দেখা যায়। গ্যালিলি তার দুরবিনের মাধ্যমে বৃহস্পতির উপগ্রহ এবং শনির বলয় পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। ১৬১১ সালে ইয়োহানেস কেপলার একটি দূরবীক্ষণ যন্ত্র নির্মাণ করেন যা অনেকটা জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক দূরবীক্ষণ যন্ত্রের মতো ছিল।[১][২][৩] তখন পর্যন্ত প্রতিসরণ দূরবীক্ষণ যন্ত্রের যুগ চলছিল। ১৭৩৩ সালে জেমস গ্রেগরি একটি অ্যাক্রোমেটিক ডাবলেট অবজেক্টিভ তৈরি করেন যার মাধ্যমে প্রতিসরণ দুরবিনের প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়।
প্রতিফলন দূরবীক্ষণ যন্ত্র উদ্ভাবন করেন জেমস গ্রেগরি। আইজাক নিউটন-ও একটি প্রতিফলন দুরবিন তৈরি করেছিলেন। বর্ণীল অপেরণমুক্ত সাধারণ লেন্স নির্মাণ বেশ কষ্টসাধ্য হওয়ায় নিউটন এ ধরনের দুরবিন তৈরিতে উৎসাহিত হয়েছিলেন। তার মতে, প্রতিসরণ দূরবীক্ষণ যন্ত্রে যেখানে অবজেক্টিভের স্থানে লেন্স ব্যবহার করা সেখানেই দর্পণ ব্যবহার করা সম্ভব; কারণ দর্পণে ঠিক একইভাবে সকল বর্ণের আলো প্রতিফলিত হয়। বড় আকারের দূরবীক্ষণের অবজেক্টিভের স্থানে ব্যবহৃত দর্পণগুলো পরাবৃত্তীয় আকারের হয়ে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পালমার মানমন্দিরে স্থাপিত প্রতিফলন দূরবীক্ষণ যন্ত্রের অবজেক্টিভে ব্যবহৃত দর্পণের ব্যাস হল ৫০০ সেন্টিমিটার।[৪]
প্রকারভেদ
সম্পাদনা'কলামনার'দূরবীন
সম্পাদনামহাকাশ দেখার জন্য বেশি ব্যবহার হয়।
বাইনকুলার বা দোনলা দূরবীন
সম্পাদনাভূমিতে ব্যবহার্য দুচোখে লাগাবার দুনলা ছোটো টেলিস্কোপ (বাইনকুলার)- প্রতিরক্ষা বাহিনী, পশুপাখি পর্যবেক্ষণে ব্যবহার হয়। গোয়েন্দা বিভাগেও ব্যবহার করা হয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ archive.org "Galileo His Life And Work" BY J. J. FAHIE "Galileo usually called the telescope occhicde or cannocchiale ; and now he calls the microscope occhialino. The name telescope was first suggested by Demisiani in 1612"
- ↑ Sobel (2000, p.43), Drake (1978, p.196)
- ↑ Rosen, Edward, The Naming of the Telescope (1947)
- ↑ A Textbook of Optics - রচনা করেছেন এন সুব্রামানিয়াম ও ব্রিজ লাল। পৃষ্ঠা: ১৬২ - Telescopes
আরো পড়ুন
সম্পাদনা- Contemporary Astronomy – Second Edition, Jay Pasachoff, Saunders Colleges Publishing – 1981, আইএসবিএন ০-০৩-০৫৭৮৬১-২
- Elliott, Robert S. (১৯৬৬), Electromagnetics, McGraw-Hill
- Rashed, Roshdi; Morelon, Régis (১৯৯৬), Encyclopedia of the History of Arabic Science, 1 & 3, Routledge, আইএসবিএন 0-415-12410-7
- Wade, Nicholas J.; Finger, Stanley (২০০১), "The eye as an optical instrument: from camera obscura to Helmholtz's perspective", Perception, 30 (10): 1157–1177, ডিওআই:10.1068/p3210, পিএমআইডি 11721819
- Sabra, A. I. & Hogendijk, J. P. (2003), The Enterprise of Science in Islam: New Perspectives, MIT Press, pp. 85–118, আইএসবিএন ০-২৬২-১৯৪৮২-১
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Galileo to Gamma Cephei – The History of the Telescope
- The Galileo Project – The Telescope by Al Van Helden
- "The First Telescopes". Part of an exhibit from Cosmic Journey: A History of Scientific Cosmology by the American Institute of Physics
- Timeline of telescopic technology ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে
- Outside the Optical: Other Kinds of Telescopes
- Gray, Meghan (২০০৯)। "Telescope Diameter"। Sixty Symbols। Brady Haran for the University of Nottingham। অজানা প্যারামিটার
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)