দিগুল নদী

ইন্দোনেশিয়ার নদী

দিগুল (ওলন্দাজ: Digoel) ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ পাপুয়া প্রদেশের নিউ গিনি দ্বীপের একটি প্রধান নদী[১] এই নদীর তীরবর্তী অঞ্চলেই পাপুয়া নিউ গিনি জনবসতি গড়ে উঠেছে। এর নিকটবর্তী অঞ্চলে মাম্বেরামো, টেডি, ফ্লাই, স্পেইক নদী প্রবাহিত হয়।

সুঙ্গাই দিগুল
ওয়েয়াম্বা রিভিয়ার, দিগোয়েল-রিভিয়ার, অয়েইম্বো, দিগোয়েল অয়েইম্বো, দিগোয়েল-কিয়ান, উইম্বু, দিগুল
প্রায় পূর্ব দিকমুখী ডিগ্রুল মোহনার নাসা ল্যান্ডস্যাট চিত্র (বর্ধিত)
স্থানীয় নামদিগুল নদী {{স্থানীয় নামের পরীক্ষক}} ত্রুটি: প্যারামিটারের মান ত্রুটিপূর্ণ (সাহায্য)
অবস্থান
দেশইন্দোনেশিয়া
প্রদেশপাপুয়া
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
উৎসমাওক পাহাড়
মোহনা 
 • অবস্থান
আরাফুয়া সাগর
 • স্থানাঙ্ক
৭°৭′ দক্ষিণ ১৩৮°৪২′ পূর্ব / ৭.১১৭° দক্ষিণ ১৩৮.৭০০° পূর্ব / -7.117; 138.700
দৈর্ঘ্য৫২৫ কিমি (৩২৬ মা)

ইতিহাস সম্পাদনা

জলাভূমির উজানগুলো বোভেন-ডিগোয়েল (ডাচ: ডিগুলের উপরে) নামে পরিচিত ছিল। তবে বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে যখন ইন্দোনেশিয়া হল্যান্ডের একটি উপনিবেশ ছিল তখন তানাহমের শহরে (রেড আর্থ) একটি পেনাল কলোনি ছিল, যেখানে দন্ডিতদের নির্বাসনে পাঠানো হত। ইন্দোনেশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি (পিকেআই) কর্তৃক ১৯২৬ সালে বিদ্রোহ সংঘটিত করে। ফলস্বরূপ ডাচরা এখানকার সবচেয়ে দূর্বৃত্ত বিপ্লবীদের মধ্যে ৮৩৩ জনকে দিগুলে নির্বাসিত করেছিল।[২] সারা বছর ধরেই ইন্দোনেশিয়ার এই নদীটি পূর্ণ থাকে, তবে বর্ষার পর তার স্তর অনেক মিটার দ্বারা বৃদ্ধি পায়।

জীববৈচিত্র্য সম্পাদনা

নদীটি এই জন্য বিখ্যাত যে নিউ গিনির অনেক আদিবাসী মানুষ দীর্ঘসময় ধরে এর তীরে বসবাস করেছেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা সভ্যতার সাথে পরিচিত ছিল না। ইন্দোনেশিয়ার বিস্তীর্ণ নদীটিতে অনেক চ্যানেল রয়েছে, যার তলদেশগুলো জীববৈচিত্র্যপূর্ণ।

অনেক পরিবেশবিদ বিশ্বাস করেন যে, দিগুল সমগ্র এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে সবচেয়ে বড় জলাভূমি যা মানুষের প্রভাব দ্বারা এখনও প্রভাবিত হয় নি।

পানি ব্যবস্থাপনা সম্পাদনা

দিগুল নদীর উৎপত্তি মাওক পর্বতমালায়। মাওক পর্বতমালা থেকে দিগুল নদী প্রথমে দক্ষিণে এবং তারপরে পশ্চিমে প্রবাহিত হয়। শেষত নদীটি আরাফুরা সাগরে পতিত হয়। এর দৈর্ঘ্যের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিস্তীর্ণ জলাভূমির নিম্ন অঞ্চল জুড়ে ভ্রমণ করে। ডোলক যা ফ্রেডেরিক হেন্ডরিক দ্বীপ নামেও পরিচিত তার নিকটে দিগুল নদী একটি ব-দ্বীপ তৈরি করে। নদীর বর্তমান দৈর্ঘ্য ৫২৫ কিলোমিটার (৩২৬ মা) এবং তানাহমেরাহ শহর পর্যন্ত নাব্যতা বজায় আছে।

ভূগোল ও জলবায়ু সম্পাদনা

সুনগাই দিগুল
জলবায়ু লেখচিত্র
জাফেমামেজুজুসেডি
 
 
৪৬৪
 
২৫
১৯
 
 
৩৯৬
 
২২
২০
 
 
৩৪২
 
২৩
২২
 
 
৩৪৬
 
২৪
২৩
 
 
২৪৯
 
২৪
২১
 
 
১৭৮
 
২২
১৮
 
 
২৮
 
২২
২০
 
 
৫১
 
২৪
২১
 
 
৯৩
 
২৫
২২
 
 
২৩৫
 
২৫
২৩
 
 
৩৩৬
 
২৫
২১
 
 
৩৫৫
 
২৫
২৩
সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সর্বোচ্চ এবং সর্বোনিম্ন গড়
মিলিমিটারে বৃষ্টিপাতের মোট পরিমাণ

দিগুল নদী পাপুয়া প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়। মূলত এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বর্ষা জলবায়ুর অন্তর্ভুক্ত, যা ক্যাপেন-গিজার জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাসে আম হিসাবে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত।[৩] নদীটির পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা হল ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অঞ্চলে উষ্ণতম মাস হল এপ্রিল। এ সময় গড় তাপমাত্রা প্রায় ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌছায় এবং সবচেয়ে শীতল মাস হল জুন। এ সময় গড় তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে।[৪] দিগুল অঞ্চলে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত হয় ৩,০৭২ মিমি। নদীর সবচেয়ে আর্দ্রতম মাস হল জানুয়ারি মাস। এ মাসে গড় ৪৬৪ মিমি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে এবং সবচেয়ে শুষ্কতম হল জুলাই মাস। জুলাই মাসে মাত্র ২৮ মিমি বৃষ্টিপাত হয়।[৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Sungai Digul - Geonames.org.
  2. Brackman, A.C., Indonesian Communism: A History, 1963, Praeger Press
  3. Peel, M C; Finlayson, B L (২০০৭)। "Updated world map of the Köppen-Geiger climate classification"ডিওআই:10.5194/hess-11-1633-2007 
  4. "NASA Earth Observations Data Set Index"। NASA। ৩০ জানুয়ারি ২০১৬। ১ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৯ 
  5. "NASA Earth Observations: Rainfall (1 month - TRMM)"। NASA/Tropical Rainfall Monitoring Mission। ৩০ জানুয়ারি ২০১৬। ১৯ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৯