দর্শন রঙ্গনাথন
দর্শন রঙ্গনাথন (৪ঠা জুন ১৯৪১ – ৪ঠা জুন ২০০১), ছিলেন ভারতের একজন জৈব রসায়নবিদ। জীব-জৈব রসায়নে তার অবদান এবং প্রোটিন ফোল্ডিংএর মত বিষয়ে অগ্রণী কাজের জন্য তিনি পরিচিত ছিলেন। [২] তিনি তার "অধি আণবিক সমাহার (সুপ্রামলিকিলার অ্যাসেম্বলিজ), আণবিক নকশা, বিশেষ জৈব প্রক্রিয়ার রাসায়নিক অনুকরণ, কার্যকরী হাইব্রিড পেপটাইড এর সংশ্লেষণ এবং ন্যানো টিউব এর সংশ্লেষণ" ইত্যাদি কাজের জন্যও বিখ্যাত হয়ে আছেন।[৩]
দর্শন রঙ্গনাথন | |
---|---|
জন্ম | ৪ জুন ১৯৪১ |
মৃত্যু | ৪ জুন ২০০১ | (বয়স ৬০)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | এটিপি-ইমিডাজল চক্র, ইউরিয়া চক্র, প্রোটিন টেরিটরি কাঠামো তৈরী |
দাম্পত্য সঙ্গী | সুব্রমনিয়া রঙ্গনাথন |
পুরস্কার | ইন্ডিয়ান একাডেমী অফ সায়েন্সেসএর সদস্য; রসায়নে টোয়াস (টিডব্লিউএএস পুরস্কার), ১৯৯৯;[১] ১৮৫১ সালের প্রদর্শনীর জন্য রয়েল কমিশনের সিনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ, এ.ভি. রামা রাও ফাউন্ডেশন পুরস্কার, জওহরলাল নেহরু জন্ম শতাব্দীর অনাবাসিক ফেলোশিপ, এবং সুখ দেব বৃত্তিমূলক বক্তৃতা। |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | জৈব রসায়ন |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | আইআইটি, কানপুর |
অভিসন্দর্ভের শিরোনাম | (১৯৬৭) |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | টি.আর. শেষাদ্রি |
প্রথম জীবন
সম্পাদনা৪ঠা জুন ১৯৪১ সালে, দিল্লিতে দর্শন মারকান, (পরে দর্শন রঙ্গনাথন), এর জন্ম হয়। তার মায়ের নাম ছিল বিদ্যাবতী মারকান এবং বাবার নাম শান্তি স্বরূপ। তার শিক্ষাজীবন দিল্লিতেই এবং ১৯৬৭ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি রসায়নে পিএইচডি পান। প্রথমে একজন অধ্যাপক হিসেবে তাকে নেওয়া হলেও, পরে তিনি দিল্লির মিরান্ডা কলেজে রসায়ন বিভাগের প্রধান হয়েছিলেন। তিনি ১৮৫১ সালের রয়েল কমিশনের প্রদর্শনীর থেকে ১৮৫১ গবেষণা ফেলোশিপ পান,[৪] এবং তার ফলে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজে, প্রফেসর ডি.এইচ.আর. বার্টন এর সঙ্গে পোস্টডক্টরালাল কাজ করার সুযোগ হয় তার।[৫]
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৭০ সালে, তিনি ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান, কানপুরে (আইআইটি, কানপুর) তার গবেষণার কাজ শুরু করেন। সেই বছরেই, তিনি সুব্রমনিয়া রঙ্গনাথনকে বিবাহ করেন। তাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি লেখেন, চ্যালেঞ্জিং প্রবলেমস ইন অর্গানিক রিঅ্যাকশন মেকানিজম (১৯৭২), আর্ট ইন বায়োসিন্থেসিস: দ্য সিন্থেটিক কেমিস্ট'স চ্যালেঞ্জ (১৯৭৬), এবং ফার্দার চ্যালেঞ্জিং প্রবলেমস ইন অর্গানিক রিঅ্যাকশন মেকানিজমস (১৯৮০)—পাশাপাশি একটি চলমান সিরিজ "কারেন্ট অর্গানিক কেমিস্ট্রি হাইলাইটস" সম্পাদনা করেন।[৫]
তিনি ফেলোশিপের ভিত্তিতে আইআইটি কানপুরে গবেষণা চালিয়ে যান। অলিখিত নিয়মে তাকে অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি কারণ তার স্বামী ইতিমধ্যেই সেখানে অধ্যাপক ছিলেন।[৩][৫][৬]
তিনি ১৯৯৩ সালে ত্রিবান্দ্রমের আঞ্চলিক গবেষণাগারে কাজ শুরু করলেন, এবং ১৯৯৮ সালে গেলেন হায়দ্রাবাদের আইআইসিআইসিতে ডেপুটি ডিরেক্টর হয়ে।[২][৩] সেই বছরেই, ইউ.এস. নৌ গবেষণাগারে তিনি ইসাবেলা কার্লের সাথে একটি নিরন্তর সহযোগিতামূলক কাজ শুরু করলেন।[৫]
১৯৯৭ সালে দর্শনের স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে, এবং ২০০১ সালে তার ৬০তম জন্মদিনে তিনি মারা যান।[৫]
২০০১ সালে তার স্বামী তার স্মৃতিতে দ্বিবার্ষিক "অধ্যাপক দর্শন রঙ্গনাথন স্মারক বক্তৃতা" চালু করেন। এটি "একজন মহিলা বিজ্ঞানী, যাঁর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান আছে" তিনিই শুধু দেন।[৭]
উল্লেখযোগ্য সম্মান অর্জন
সম্পাদনাতিনি ন্যাশনাল একাডেমী অফ সায়েন্সেসের সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি এ.ভি. রামা রাও ফাউন্ডেশন পুরস্কার, জওহরলাল নেহরু জন্ম শতাব্দীর অনাবাসিক ফেলোশিপ, জীব-জৈব রসায়নে তার কাজের জন্য, ১৯৯৯ সালে, তৃতীয় ওয়ার্ল্ড একাডেমী অফ সায়েন্স ইন কেমিস্ট্রি পুরস্কার, এবং সুখ দেব বৃত্তিমূলক বক্তৃতা পুরস্কার পেয়েছেন।[৮]
তার মৃত্যুর সময়, তিনি ভারতে সবচেয়ে ফলপ্রসূ জৈব রসায়নবিদ ছিলেন, তার শেষের পাঁচ বছরে, দ্য জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটিতে বারোটি লেখা, জৈব রসায়নের জার্নালে ছয়টি এবং আরো অনেকগুলিতে বারোটি রচনা প্রকাশিত হয়েছিল। তার পাহাড় প্রমাণ অবদান অ্যাকাউন্টস অফ কেমিক্যাল রিসার্চ, পাশাপাশি অন্যান্য অনেক লেখা, তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছে।
কাজ
সম্পাদনারঙ্গনাথনের বিশেষ ভাল লাগার কাজ ছিল, প্রাকৃতিক জৈবরাসায়নিক প্রক্রিয়াগুলি পরীক্ষাগারে করা। তিনি রসায়নাগারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইমিডাজল তৈরি করার উপায় আবিষ্কার করেছিলেন। এটি হিস্টাডাইন এবং হিস্টামাইনএর একটি উপাদান, যাদের ঔষধ তৈরীতে যথেষ্ট গুরুত্ব আছে।[৯] তিনি ইউরিয়া চক্রের একটি কার্যকরী অনুকরণও তৈরি করেছিলেন। যত তার কর্মজীবন উন্নত হচ্ছিল, তিনি প্রোটিনের বিভিন্ন ধরনের কাঠামো সহ প্রোটিন ডিজাইনে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন, এবং স্ব-সংযোজিত পেপটাইড গুলি ব্যবহার করে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কাঠামো তৈরী করেন।[৫][১০]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Recipients of TWAS Awards/Prizes"। Third World Academy of Sciences Portal। ২০১২-১০-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১০-২০।
- ↑ ক খ "StreeShakti - The Parallel Force"। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১০-২০।
- ↑ ক খ গ S Ranganathan। "She Was a Star" (পিডিএফ)। Lilavat's daughters। পৃষ্ঠা 27–30। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১০-১৯।
- ↑ 1851 Royal Commission Archives টেমপ্লেট:Fcn
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ Balasubramanian, D. (২৫ জুলাই ২০০১)। "Darshan Ranganathan – A tribute" (পিডিএফ)। Current Science। 81 (2): 217–219। ২১ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ Venkatraman, Vijaysree। "Book Review : Forgotten daughters"। The Hindu : Literary Review। ২০০৯-০৪-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১০-২০।
- ↑ "Academy Awards - Subjectwise Medals / Lectures / Awards"। Indian National Science Academy। ২০১৩-০৪-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১০-২০।
- ↑ "StreeShakti - The Parallel Force"। streeshakti.com। ২০১৭-০৩-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-২৭।
- ↑ Ranganathan, Darshan; Rathi, Ramesh (১৯৮৬)। "Imidazole synthesis on a solid support"। Tetrahedron Letters। 27 (22): 2491–2492। ডিওআই:10.1016/S0040-4039(00)84565-7।
- ↑ Ranganathan, Darshan (১৯৯৬)। "Design and synthesis of self-assembling peptides" (PDF)। Pure and Applied Chemistry। 68 (3): 671–674। ডিওআই:10.1351/pac199668030671।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Publications by Darshan Ranganathan আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ৪ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে, Microsoft Academic Search