কনফেসর থিওফেনস

(থিওফেনিস থেকে পুনর্নির্দেশিত)

কনফেসর থিওফেনস (গ্রিক: Θεοφάνης Ὁμολογητής; আনুমানিক ৭৫৮/৭৬০ - ১২ মার্চ ৮১৭/৮১৮) বাইজেন্টাইন অভিজাত সম্প্রদায়ের একজন সদস্য ছিলেন, যিনি সন্ন্যাসী ও ক্রনিকলার (ইতিহাসবিদ) হিসেবে গণ্য হন। ধর্মীয় জীবনে প্রবেশের আগে তিনি সম্রাট চতুর্থ লিও দ্য খাজারের রাজসভায় কাজ করতেন। থিওফেনস ৭৮৭ সালে দ্বিতীয় নাইসিয়া কাউন্সিলে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং পঞ্চম লিও দ্য আর্মেনিয়ানের আইকনোক্লাজমের (ধর্মীয় মূর্তি ধ্বংস নীতি) বিরোধিতা করেছিলেন, যার কারণে তাকে কারাবরণ করতে হয়। কারামুক্তির কিছুদিন পরেই তাঁর মৃত্যু হয়।


Theophanes the Confessor
Confessor
জন্মc. 758–760
Constantinople, Byzantine Empire
মৃত্যু12 March 817 (aged 57–59)
Samothrace, Thrace, Byzantine Empire
শ্রদ্ধাজ্ঞাপনRoman Catholic Church; Eastern Orthodox Church
উৎসব12 March (Catholic Church); 12 March (Julian Calendar for Orthodox Church)

পূর্ব অর্থোডক্স এবং রোমান ক্যাথলিক উভয় চার্চে ১২ই মার্চ পালিত কনফেসর থিওফেনসকে ১১ই অক্টোবর স্মরণীয় থিওফেনস অফ নাইসিয়ার সাথে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়।

জীবনী সম্পাদনা

থিওফেনিস সম্ভ্রান্ত ও আইকনোডিউল পিতামাতার ঘরে কনস্টান্টিনোপলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতা, আইজ্যাক আইজিন সাগরের দ্বীপপুঞ্জের গভর্নর ছিলেন এবং তার মাতা থিওডোরা সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় না। মাত্র তিন বছর বয়সে থিওফেনিস তার পিতাকে হারান এবং পরবর্তীতে বাইজেন্টাইন সম্রাট পঞ্চম কনস্টান্টাইন (৭৪০-৭৭৫ খ্রিস্টাব্দ) ছেলেটির শিক্ষা এবং রাজদরবারে লালন-পালনের ব্যবস্থা করেন। চতুর্থ লিও খাজারের অধীনে থিওফেনিস বেশ কয়েকটি দপ্তরের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

তিনি মাত্র আঠারো বছর বয়সে বিয়ে করেন। কিন্তু তিনি তার স্ত্রীকে কুমারী জীবনযাপন করার জন্য রাজি করান। ৭৭৯ খ্রিস্টাব্দে শ্বশুরের মৃত্যুর পরে, তারা উভয়েই পারস্পরিক সম্মতিতে ধর্মীয় জীবন গ্রহণ করেন। থিওফেনিসের স্ত্রী কনস্টান্টিনোপলের কাছে একটি দ্বীপের কনভেন্টে যান এবং তিনি এশিয়ার মারমারা সাগরের তীরে সিজিকাসের কাছে সিগ্রিয়ানো জেলায় অবস্থিত পলিক্রোনিয়াস মঠে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে, তিনি ক্যালোনিমাস দ্বীপে (বর্তমান ক্যালোমিও) নিজস্ব জমিতে একটি মঠ নির্মাণ করেন, যেখানে তিনি পাণ্ডুলিপি লিপিকারের কাজে উচ্চ দক্ষতা অর্জন করেন।

ছয় বছর পর তিনি সিগ্রিয়ানোতে ফিরে আসেন এবং "বৃহৎ বন্দোবস্ত" নামে পরিচিত একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে তিনি অ্যাবট বা মঠাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নেতৃত্বের এই অবস্থান থেকে, তিনি ৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে নাইসিয়ার দ্বিতীয় কাউন্সিলে উপস্থিত ছিলেন এবং আইকন **(পবিত্র চিত্র বা মূর্তি) ভক্তির পক্ষে ফরমানে স্বাক্ষর করেন।

যখন সম্রাট পঞ্চম লিও আর্মেনিয়ান (৮১৩-৮২০ খ্রিস্টাব্দ) পুনরায় আইকন-বিরোধী সংগ্রাম শুরু করেন, তখন তিনি থিওফেনিসকে কনস্টান্টিনোপলে আনার নির্দেশ দেন। সম্রাট কাউন্সিল কর্তৃক সমর্থিত সেই আইকন পূজাকে নিন্দা করার জন্য থিওফেনিসকে প্ররোচিত করার বৃথা চেষ্টা করেছিলেন। এরপর থিওফেনিসকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয় এবং পরবর্তী দুই বছর তিনি নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হন। মুক্তির পর, ৮১৭ খ্রিস্টাব্দে তাকে সামোথ্রেসে নির্বাসিত করা হয় এবং কষ্টের ভারে জর্জরিত হয়ে সেখানে তিনি মাত্র সতেরো দিন বেঁচে ছিলেন। মৃত্যুর পরেও তার মাধ্যমে অনেক অলৌকিক ঘটনা ঘটেছিল বলে জানা যায়। তাঁর স্মরণে রোমান শহীদ-বিবরণীতে ১২ই মার্চ, সম্ভবত তার মৃত্যুর দিন, হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।