তেলশুর গাছ-Telshur সম্পাদনা

তেলশুর Dipterocarpaceae পরিবারের Hopea গণের একটি বড় আধা- পর্ণমোচী গাছ, যার উচ্চতা সাধারণত ২৫-৩০ মিটার। তেলশুর বনের একটি ভালো কাঠের গাছ, যা চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং সিলেটে পাওয়া যায়। গাছটির আদি নিবাস দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। এই সুন্দর সবল গাছটি ছায়া বৃক্ষ হিসেবে রাস্তার ধারে বাংলাদেশের সর্বত্র রয়েছে। গাছটি কাঠের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, ভবন নির্মাণের জন্য উপযুক্ত।

ইংরেজি নাম:Telshur or White thingan

বৈজ্ঞানিক নাম: Hopea odorata

বর্ণনা সম্পাদনা

তেলশুরের কান্ড সরল, দীর্ঘ ও গোলাকৃতির। বাকলের রঙ গাঢ় ধূসর এবং অজস্র ফাটলে রুক্ষ হয়ে থাকে। সবুজ রঙের খানিকটা সরু পাতাগুলো ডালের আগায় গুচ্ছবদ্ধভাবে ঝুলে থাকে। এই গাছের শাখাগুলো ঊর্ধ্বমুখী হলেও প্রশাখাগুলো বেশ নোয়ানো ধরনের। শীতের শুরুতে গাছের সব পাতা ঝরে পড়ে। তখন গাছ একেবারে রিক্ত, নিঃস্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। বসন্তের প্রথম দিকেই অসংখ্য কচিপাতার সবুজে ভরে ওঠে গাছ। একই সময়ে ফুলগুলোও ফুটতে শুরু করে।

পাতা সম্পাদনা

পরিপক্ক পাতার রঙ সবুজ। পাতা গুলো লম্বা ও সম্পূর্ণ পাতার মার্জি সহ ডিম্বাকার।

ফুল সম্পাদনা

ফুল আকারে কিছুটা ক্ষুদ্র হলেও মঞ্জরির উপচেপড়া প্রাচুর্য সেই দীনতা অনেকটাই মুছে দেয়। ফুলের রঙ ম্লান-হলুদ। এই ফুল সুগন্ধি হওয়ায় পুষ্পিত বীথির সান্নিধ্য বেশ লোভনীয়।

ফল সম্পাদনা

ফল ফুল করে পড়ার পরপরই অসংখ্য ফলে ভরে ওঠে গাছ। কাঁচা ফলের রঙ সবুজ, পরিণত ফল দেখতে বাদামি রঙের। ফল দেখতে ততটা আকর্ষণীয় না হলেও সংখ্যায় বেশি হওয়ার ফলের আড়ালে কিছুদিন পাতার রঙ প্রায় অদৃশ্য থাকে। বর্ষার প্রথমভাগে ফলের ভারে নুয়ে পড়া গাছ বেশ সুদৃশ্য হয়ে ওঠে। ফল গোলাকার, লম্বাটে এবং ফলের পরিমাপ প্রায় ৬-৫ মিমি। এটির ২ টি লম্বা ডানা এবং ৩ টি ছোট ডানা রয়েছে যা বাতাসের মাধ্যমে বীজ ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।

আবাসস্থল সম্পাদনা

আবাসস্থল ৬০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতার নিম্নভূমি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বন এবং চিরহরিৎ বনের গভীর সমৃদ্ধ মাটিতে পাওয়া যায়। সাধারণত স্রোত এবং নদীর কাছাকাছি অবস্থিত।

বিস্তৃতি সম্পাদনা

এটি বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, ভারত, লাওস, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামে পাওয়া যায়।