তানজানিয়ায় শিশুশ্রম

তানজানিয়াতে লক্ষ লক্ষ শিশু শিশুশ্রমের সাথে জড়িত।[১]:page ৫৯৩ তানজানিয়াতে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মাঝে শিশুশ্রম বেশি দেখা যায়। মেয়েদের প্রধানত গৃহপরিচারিকা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, কখনো কখনো জোর পূর্বক ভাবে।[২] বিশেষত দরিদ্র শিশুদের দেশের আভ্যন্তরেই অন্যত্র পাচার করা হয় বানিজ্যিক যৌন শোষন কাজে ব্যাবহারের জন্য। তানজানিয়া ১৯৯১ সালে শিশু অধিকার কনভেনশনের অনুমোদন দিয়েছে।[৩] এবং ২০০৩ সালে তারা আফ্রিকান শিশু অধিকার ও কল্যাণ সনদেরও অনুমোদন দিয়েছে।[৪] তানজানিয়া ২০০৯ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করে।[৫] এই আইনের বাস্তবায়নের জন্য এবং শিশু অধীকার লঙ্ঘনের অভিযোগ গ্রহণের জন্য সারা দেশ ব্যাপী উন্মুক্ত হট লাইন চালু করা হয়েছে।[৬] জাঞ্জিবারের স্থানীয় সরকার শ্রম পরিদর্শকদের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে। তবে মার্কিন শ্রম বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তানজানিয়া সরকারের শ্রম এবং ফৌজদারই অপরাধ বিষয়ক তথ্য প্রকাশ না করা এবং আইনি জটলতা ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব, শিশুদের নিরাপত্তা বিধান না করতে পারা, বিশেষত অবৈধ কাজে জড়িত ও গৃহকর্মে নিয়ুক্ত শিশুদের নিরাপত্তার ঘাটতি, পরিদর্শকদের শাস্তি বিধানের ক্ষমতা না থাকা এবং অপর্যাপ্ত পরিদর্শক সংখ্যার সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।[৭]

তানজানিয়ার দারুস সালামে একটি বিল্ডিং ইয়ার্ডে কিছু অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু এবং কিশোররা কাজ করছে

২০১৩ সালে মার্কিন শ্রম বিভাগ তাদের খারাপতম শিশুশ্রম খোঁজ শির্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করেছে যে ৫ থে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের ২৫ শতাংশই কর্মজীবী হিসেবে জীবন অতিবাহিত করছে। যা কিনা সংখ্যার বিচারে প্রায় একত্রিশ লক্ষাধিক।[৮] প্রতিবেদনে বলা হয়েছে শিশুশ্রম রোধে সরকারের তুলনামূলক অগ্রগতি সত্ত্বেও, তানজানিয়ার শিশুরা কৃষিক্ষেত্রে এবং খনিতে কর্মজীবী শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে। ২০১৪ সালের মার্কিন শ্রম বিভাগের অধিভুক্ত আই.ল্যাব. এর শিশুশ্রম দ্বারা উৎপাদিত পণ্যের তালিকায় তানজানিয়ার এমন ৮ টি পণ্যের নাম রয়েছে। এগুলোর অধিকাংশই কৃষিপণ্য। কর্মজীবী শিশুদের ৯৪ শতাংশই কৃষিশ্রমিক। প্রধাণত কফি, সিসাল, চা এবং তামাক উৎপাদনে শিশুদের ব্যবহার করা হয়। বাকি পণ্য গুলো হলো স্বর্ণ ও তানজানাইট জাতীয়। [৭] খনি শিল্প বিশেষত স্বর্ন খনির ১৮ শতাংশ কর্মিই শিশু। এই খনিগুলোর ৯৮ ভাগেই পারদের বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক পদার্থ ব্যবহার করা হয় আকরিক সংগ্রহে। এই বিষাক্ত পদার্থ সমূহ মানুষের স্বাভাবিক শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের অন্তরায়।[৯]

তানজানিয়ার শিশুদের ওপরে শিশুশ্রমের সুদূরপ্রসারি প্রভাব রয়েছে। ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তানজানিয়ার শিশুদের প্রায় ৩০ শতাংশ শিশুশ্রমিক, শিশুদের ৩০ শতাংশই স্কুলে যায়না এবং প্রায় ২০ শতাংশ শিশুকে একি সাথে কাজ করতে এবং পড়ালেখা করতে হয়।[১০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "'2011 Findings on the Worst Forms of Child Labor – Tanzania" (পিডিএফ)। U.S. Department of Labor। অক্টোবর ২২, ২০১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  2. Florence Kondylis (April 2010). "School Proximity and Child Labor Evidence from Rural Tanzania" (PDF). Professor Marco Manacorda, Queen Mary University of London.
  3. "Convention on the Rights of the Child"। United Nations। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  4. "Ratification Table / African Charter on the Rights and Welfare of the Child"। African Commission on Human and Peoples' Rights। ২০ আগস্ট ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  5. "The Law of the Child Act, 2009" (পিডিএফ)। Parliamentary On-Line Information System। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  6. "welcome to C-Sema"। C-Sema। ৩ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  7. https://www.dol.gov/agencies/ilab/resources/reports/child-labor/tanzania
  8. "Tanzania, 2013 Findings on the Worst Forms of Child Labor"। ১৯ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০২১ 
  9. https://www.humanium.org/en/tanzania/
  10. https://www.unicef-irc.org/publications/1112-impact-of-the-united-republic-of-tanzanias-p-productive-social-safety-net-on-child.html