তাইওয়ান–বাংলাদেশ সম্পর্ক
তাইওয়ান–বাংলাদেশ সম্পর্ক হল বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক বা তাইওয়ানের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ এবং তাইওয়ানের মধ্যে কোনো প্রকার সম্পর্ক নেই।
প্রজাতন্ত্রী চীন |
বাংলাদেশ |
---|
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৭৫ সালের ৪ই অক্টোবর, বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী চীনকে স্বীকৃতি দেয় এবং তাইওয়ানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।অর্থাৎ বাংলাদেশ তাইওয়ান/গণপ্রজাতন্ত্রী চীনকে স্বীকৃতি দেয় না।[১] জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের রেজোল্যুশন ২৭৫৮-এ বাংলাদেশ পিআরসি দ্বারা আরওসির প্রতিস্থাপনকেও সমর্থন দেয়।
২০০৪ সালে তাইওয়ান সরকার কর্তৃক রাজধানী ঢাকায় "তাইপেই অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অফিস, বাংলাদেশ" ("তাইপেই ইকোনোমিক অ্যান্ড কালচারাল অফিস ইন বাংলাদেশ") প্রতিষ্ঠা করে। দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশে এটি চালু হয়।[২]
তবে বাংলাদেশ সরকারের বাধার কারণে এ কেন্দ্র থেকে ভিসা সেবা দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে প্রতিষ্ঠানটি তাদের সরকারের নমনীয় কূটনীতি অনুযায়ী সরকারি অর্থের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য ২০০৯ সালের ৩০শে জুন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তখন সারা বিশ্বে তাইওয়ানের এ রকম প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১২০-এ গিয়ে দাঁড়ায়।[৩] অফিসটি বন্ধ হয়ে যাবার পর থেকে বাংলাদেশ বিষয়ক সকল কিছু যৌথভাবে নিউ দিল্লিতে অবস্থিত তাইপেই ইকোনোমিক অ্যান্ড কালচারাল সেন্টার ইন ইন্ডিয়া এবং ব্যাংককে অবস্থিত তাইপেই ইকোনোমিক অ্যান্ড কালচারাল সেন্টার ইন থাইল্যান্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।[৪]
ভিসা নীতি
সম্পাদনাবাংলাদেশের ভিসা নীতি অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রী চীনের পাসপোর্টধারী তাইওয়ানের নাগরিকদের আগমনী ভিসা (অন এরাইভাল ভিসা) দেওয়া হবে, তবে তাইওয়ানের ভিসা নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিকদের নিউ দিল্লি বা ব্যাংকক থেকে ভিসা নিতে হবে।[৫]
অর্থনৈতিক সম্পর্ক
সম্পাদনাতাইওয়ান বাংলাদেশে যে সমস্ত পণ্য রপ্তানি করে তার মধ্যে রয়েছে পেট্রোলিয়াম, স্টেইন স্টিল, সিন্থেটিক ফাইবার, ভিনাইল ক্লোরাইড, পলিঅ্যাসিটাল, ইপোক্সি, কাপড় এবং সেলাই করবার যন্ত্র ইত্যাদি। বাংলাদেশ থেকে তাইওয়ানে রপ্তানিকৃত পণ্যসমূহ হল কাঁকড়া, বাগদা চিংড়ি, তামা, কাপড় এবং জুতা।[৬] বাংলাদেশে প্রায় ৪০টিরও বেশি তাইওয়ানিজ কোম্পানি কর্মরত আছে। তারা কাপড় প্রক্রিয়াজাতকরণ, জুতা প্রক্রিয়াজাতকরণ, অ্যাকোয়াকালচার, আসবাবপত্র প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে কর্মরত আছেন। জুতা প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানির বেশিরভাগই চট্টগ্রামে কর্মরত আছে, বাকিরা ঢাকা জেলার আশেপাশের অঞ্চলে কর্মরত আছেন।[৭]
বাংলাদেশের বৃহত্তম তাইওয়ানিজ বিনিয়োগকারী কোম্পানি হল রান জিং টেক্সটাইল কোম্পানি (潤興紡織), এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম কোম্পানি হল পউ চেন কর্পোরেশন, যারা নাইক, এডিডাস এবং পুমার মত কোম্পানির জুতা তৈরি করে থাকে।[৮] চীনে বেতনবৃদ্ধির পর এবং ২০১৪ সালে ভিয়েতনামের চীনবিরোধী আন্দোলনের পর তাইওয়ানিজ কোম্পানি কম বেতন এবং স্থির পরিবেশের জন্য বাংলাদেশে চলে আসার সিদ্ধান্তগ্রহণ করে।[৯]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ কলিন ম্যাকারাস, অমন্দ ইয়র্ক (১৯৯১)। দ্য ক্যামব্রিজ হ্যান্ডবুক অব কন্টেমপোরারি চায়না। ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ১৫১।
- ↑ তাইপেই টাইমস। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ http://www.taipeitimes.com/News/front/archives/2004/02/28/2003100417। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৬।
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ "Foreign ministry closes its rep office in Bangladesh"। দ্য চায়না পোস্ট। ১ জুলাই ২০০৯। ৫ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Asia Pacific Area, Bureau of Consular Affairs,"। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (চীন)। ১১ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "孟加拉 - 外交部領事事務局全球資訊網"। boca.gov.tw। ৭ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "Trade Profile of Taiwan and Bangladesh by the Ministry of Economic, ROC"।
- ↑ "Taiwan Trade Center, Dhaka - 投資孟加拉Q&A"। ১৬ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "台商網 - 孟加拉 - 投資環境簡介"। nat.gov.tw। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "Jing Mao Tou Shi: The light of Taiwan in Bangladesh"। ৬ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৬।