ময়ূর সিংহাসন
ময়ূর সিংহাসন বা তখত তাউস মোগল বাদশাহ শাহ জাহান কর্তৃক নির্মিত একটি সিংহাসন। একে দুনিয়ার সবচেয়ে দামী সিংহাসন হিসাবে দাবি করা হয়। বাদশাহ শাহজাহানের সিংহাসনের সংখ্যা ছিল ৭টি এবং এগুলোর মধ্যে ময়ূর সিংহাসনই ছিল সবচেয়ে দামী ও জমকালো। প্রায় আট বছর (১৬২৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৬৩৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত) তখনকার আট কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মান করা হয় এ সিংহাসনটি। বেবাদল খাঁর তত্ত্বাবধানে নির্মান করা হয় এ সিংহাসনটি। আগ্রার তাজমহলের চেয়েও দ্বিগুণ অর্থ ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় সিংহাসনটি। এটি ছিল দুর্লভ স্বর্ণ, হীরা ও মরকত মণিখচিত।
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/4/47/Portrait_of_Shah_Jahan_on_the_Peacock_Throne.jpg/330px-Portrait_of_Shah_Jahan_on_the_Peacock_Throne.jpg)
ময়ূর সিংহাসনের শেষ পরিণাম সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে দিল্লির বাদশাহ আওরঙ্গজেবের ১৭০৭ সালে মৃত্যু হলে মোগলদের শক্তি কমে যেতে শুরু করে। এমন সময় সিংহাসনটি ১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দে পারস্যের সম্রাট নাদির শাহ ভারতবর্ষ অভিযানকালে লুট করেন। দিল্লি থেকে ফিরে যাওয়ার সময় তিনি বিখ্যাত কোহিনূর হীরাও লুট করেন। পরবর্তীতে নাদির শাহ এটা নিয়ে যান পারস্যে। অনেকের মতে, নাদির শাহ দিল্লিতে অবস্থানের সময় ময়ূর সিংহাসনের মতো আরেকটি সিংহাসন বানিয়েছিলেন। এবং যাওয়ার সময় তিনি দুটি সিংহাসনই পারস্যে নিয়ে যান। ধারণা করা হয়, নাদির শাহ কোহিনূর হীরাটি সযত্নে রাখেন এবং পরবর্তীতে ময়ূর সিংহাসন ও কোহিনূর হীরার জন্য প্রতিপক্ষের কাছে খুন হতে হয় তাকে। তবে দুটি জিনিসের একটিও এখন আর পারস্যে নেই। বিভিন্নভাবে হাত বদল হতে হতে তখত তাউস বর্তমানে রয়েছে ইরানে। তবে ময়ূর সিংহাসনে বসানো বিশ্বখ্যাত কোহিনূর হীরা এক পর্যায়ে ব্রিটিশদের হাত ধরে ইংল্যান্ডে চলে যায়। বর্তমানে যা লন্ডনের টাওয়ারে সংরক্ষিত রয়েছে।[১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "যুগান্তর, ২ মার্চ ২০১৬"। ২৯ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২০।