ডরোথি নোয়েল 'ডর্ফ'বোনার্জী (১৮৯৪–১৯৮৩) ছিলেন একজন ভারতীয় কবি এবং শিল্পী, যিনি ছাত্র অবস্থায় ওয়েল্‌সের বার্ডিক চেয়ারে ভূষিত হয়েছিলেন এবং এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন থেকে প্রথম মহিলা অভ্যন্তরীণ ছাত্র হিসেবে আইনের ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।।[১]

ডরোথি বোনার্জী
পুত্র ডেনিসের সাথে ডরোথি বোনার্জি - আনুমানিক ১৯২২ সাল
জন্ম১৮৯৪
মৃত্যু১৯৮৩
জাতীয়তাভারতীয়

জীবনী সম্পাদনা

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

১৮৯৪ সালের আগস্টে উত্তর ভারতের বরেলিতে একটি বাঙালি খ্রিস্টান পরিবারে বোনার্জী জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[২] তাঁর বাবা আইনজীবী ছিলেন। ভাইদের সাথে বোনার্জি তাঁর শৈশবকালীন বেশিরভাগ সময় দক্ষিণ লন্ডনে কাটিয়েছিলেন এবং তাঁর শিক্ষার বেশিরভাগ অংশই ইংল্যান্ডে থেকে হয়েছিল।[৩]

উচ্চ শিক্ষা এবং কবিতা সম্পাদনা

১৯১২ সালে, বোনার্জি অ্যাবেরিস্টউইথের ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ ওয়েলসে ফরাসি ভাষা নিয়ে পড়ার জন্য নাম লেখান। ছাত্র থাকাকালীন তিনি কলেজ পত্রিকা দ্য ড্রাগন এবং ওয়েলশ আউটলুকে কবিতা প্রকাশ করেছিলেন। ১৯১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ছদ্মনামে জমা দেওয়া একটি কবিতার জন্য তাঁকে কলেজের ইস্টেডফড বার্ডিক চেয়ারে ভূষিত করা হয়।[৪] তিনি প্রথম মহিলা এবং প্রথম অ-ইউরোপীয় যিনি কলেজ ইস্টেডফড জিতেছিলেন। অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত তাঁর বাবা, সমাবেশে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁদের সম্বোধন করার দাবিতে সম্মত হন। তাঁরা যেভাবে 'ভিন্ন জাতি এবং দেশের সফল প্রতিযোগী'কে গ্রহণ করেছেন তার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।[৫] বোনার্জির লেখাগুলির মধ্যে ষাটটিরও বেশি ছাপা এবং পান্ডুলিপি কবিতা রয়েছে। এর পাশাপাশি একটি টীকা রয়েছে: '২২ বছর বয়সে লেখা যখন একটি ওয়েলশ শিক্ষার্থী ৩ বছরের গোপন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার পরে আমাকে ত্যাগ করে, কারণ তার বাবা-মা বলেছিলেন যে "মেয়েটি খুব সুন্দরী এবং বুদ্ধিমতী কিন্তু সে ভারতীয়।"'[৫]

বোনার্জীর কবিতার সমালোচনায় উৎসর্গীকৃত একটি নিবন্ধে মন্তব্য করা হয়েছে যে 'সন্দেহাতীতভাবে তাঁর সামনে একটি উজ্জ্বল এবং আশাবাদী কর্মজীবন রয়েছে'।[৬] বোনার্জি লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজে আইন পড়তে গিয়েছিলেন, সেখানে ১৯১৭ সালে তিনি প্রথম মহিলা অভ্যন্তরীণ ছাত্র হিসাবে আইন ডিগ্রি লাভ করেছিলেন (এলএলবি)।[৭][৮] - কিন্তু তিনি কোনদিন আইনের অনুশীলন করেননি।[৯]

পরবর্তী জীবন সম্পাদনা

বোনার্জি মহিলাদের ভোটাধিকারের সমর্থক ছিলেন এবং ১৯১৯ সালে নিজের মায়ের সাথে ভারতীয় মহিলাদের ভোটাধিকার ঠিকানায় স্বাক্ষর করেছিলেন।[৯]

ভারতে মা-বাবার কাছে চলে আসার বদলে, ১৯২১ সালে বনার্জি ফরাসি শিল্পী পল সুর্টেলকে বিবাহ করেছিলেন। তাঁরা ফ্রান্সের প্রোভেন্সে থাকতেন। এই দম্পতির দুটি সন্তান ছিল - ডেনিস এবং ক্লেয়ার অরুণা। ডেনিস শৈশবে মারা গিয়েছিল। এরপর তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল।[২] বোনার্জি বিশেষভাবে স্থির জীবন এবং ভূদৃশ্য এঁকেছেন। তিনি ১৯৮৩ সালে মারা যান।

স্মৃতি সম্পাদনা

২০২০ সালের ডিসেম্বরে, বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে, ডরোথি বোনার্জিকে নিয়ে 'দ্য হিন্দু বার্ড' নামে একটি রেডিও তথ্য-নির্ভর অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়েছিল।[১০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "'She is beautiful but she is Indian': The student who became a Welsh bard at 19"BBC। ২৮ ডিসেম্বর ২০২০। 
  2. Whitehead, Andrew (২০২০)। "Dorothy Bonarjee: Bard of Aberystwyth" Planet238: 70–76। 
  3. Bonarjee, N.B. (১৯৭০)। Under Two Masters Oxford University Press। পৃষ্ঠা 37-57। ওসিএলসি 473638554 
  4. "Hindu Lady Chaired"Cambria Daily Leader। মার্চ ২, ১৯১৪। 
  5. Whitehead, Andrew। "'She is beautiful but she is Indian': The student who became a Welsh bard at 19"। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ 
  6. Harihar Das, 'The Poetry of Dorothy Noel Bonarjee' The Indus, November 1922, pp50-53
  7. Auchmuty, Rosemary (এপ্রিল ৪, ২০০৮)। "Early Women Law Students at Cambridge and Oxford" The Journal of Legal History (ইংরেজি ভাষায়)। 29 (1): 63–97। আইএসএসএন 0144-0365ডিওআই:10.1080/01440360801903588 
  8. "Index of Graduates by Surname"। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২৮, ২০২০ 
  9. Jenkins, Beth R.। "Bonarjee, Dorothy Noel"Dictionary of Welsh Biography। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  10. "The Hindu Bard"। BBC World Service। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা