টোটোপাড়া

ভারতের একটি গ্রাম

টোটোপাড়া বা তোতোপাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আলিপুরদুয়ার জেলার একটি ছোট পাহাড়ী গ্রাম, যা ভারত-ভুটান সীমান্তে তাদিং পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। গ্রামটি একটি নৃতাত্ত্বিক পর্যটনস্থল। এটি বিশ্বে টোটো উপজাতির একমাত্র আবাসস্থল। এ গ্রাম ছাড়া বিশ্বের অন্য কোথাও এ উপজাতির বসবাস নেই। গ্রামটি মাদারিহাট থেকে প্রায় ২২ কিমি দূরে অবস্থিত, যা প্রাণী ও উদ্ভিদ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ১৯৪১ সালে অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষিত বিখ্যাত জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের প্রবেশদ্বার। এর উত্তরে ভুটানের সীমান্ত তাদিং পাহাড়ের পাদদেশ, পূর্বে তোরষা নদী এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে হাওরি নদী এবং তিতি বনাঞ্চল যাকে হাওরি নদী বিভক্ত করেছে।[১]

টোটোপাড়া
তোতোপাড়া
গ্রাম
টোটোপাড়া পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
টোটোপাড়া
টোটোপাড়া
টোটোপাড়া ভারত-এ অবস্থিত
টোটোপাড়া
টোটোপাড়া
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৬°৫০′ উত্তর ৮৯°১৯′ পূর্ব / ২৬.৮৩° উত্তর ৮৯.৩১° পূর্ব / 26.83; 89.31
দেশ ভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
জেলাআলিপুরদুয়ার
সরকার
 • ধরনপঞ্চায়েত রাজ (ভারত)
 • শাসকগ্রাম পঞ্চায়েত
ভাষা
 • দাপ্তরিকবাংলা, ইংরেজি, নেপালি
সময় অঞ্চলআইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০)
আইএসও ৩১৬৬ কোডIN-WB
যানবাহন নিবন্ধনWB
ওয়েবসাইটwb.gov.in

নামকরণ সম্পাদনা

টোটোপাড়া গ্রামের নাম টোটো উপজাতির নাম থেকে এসেছে। গ্রামে বসবাসকারী মানুষের অধিকাংশই টোটো উপজাতি। গ্রামে টোটোদের আধিপত্য ও পৃথিবীতে তাদের একমাত্র আবাসস্থলের কারণে এ নামকরণ হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।

ভূগোল ও জনসংখ্যা সম্পাদনা

 
টোটোপাড়া গ্রামের বাঁশের ঘর

টোটোপাড়া গ্রাম ভারতে আলিপুরদুয়ার জেলার সদর থেকে উত্তর দিকে এবং মাদারিহাট থানা থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে, ভারত ও ভুটান সীমান্তে তাদিং পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। এটি ৮৯°২০' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ এবং ২৬°৫০' উত্তর অক্ষাংশে অবস্থিত।[২] এর উত্তরে ভুটান, পূর্বে তোরষা নদী, দক্ষিণ ও পশ্চিমে হাওরি নদী। গ্রামের আয়তন প্রায় ৮.০৮ বর্গকিলোমিটার।

গ্রামের মোট জনসংখ্যা ৫,০০০ জন। অধিবাসীদের অধিকাংশই টোটো উপজাতি হলেও একটি নেপালী বসতি রয়েছে। অধিবাসীদের অধিকাংশেরই প্রাথমিক পেশা হল সুপারি চাষ। এছাড়া তারা কমলালেবু চাষ ও পশু-পাখি পালন করেন। গ্রামের মানুষেরা টোটো, বাংলা ও নেপালি ভাষায় কথা বলে।

প্রশাসনিক বিন্যাস সম্পাদনা

প্রশাসনিকভাবে এই গ্রামটি মাদারিহাট থানার অন্তর্গত। টোটোপাড়া গ্রাম ছয়টি পাড়ায় বিভক্ত; পঞ্চাযতগাঁও, মণ্ডলগাঁও, সুব্বাগাঁও, মিত্রঙগাঁও, পূজাগাঁও এবং ধুমচিগাঁও।[৩] এটি গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতি দ্বারা শাসিত হয়।

যোগাযোগ সম্পাদনা

টোটোপাড়ার নিকবর্তী গ্রাম বল্লালগুড়ি, যা টোটোপাড়া থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। হন্তপাড়া হয়ে জাতীয় সড়ক ৩১ থেকে এই গ্রামে যাওয়ার জন্য এক লেনের একটি গাড়ী চলার রাস্তা রয়েছে। জেলাসদর আলিপুরদুয়ার থেকে এর দুরত্ব ৫৫ কিলোমিটার এবং মাদারিপুর থানা থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সম্পাদনা

১৯৯০ সালে গ্রামের বাচ্চাদের শিক্ষাদানের জন্য একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করা হয়েছিল এবং ১৯৯৯ সালে ছাত্রাবাসের সুবিধাসহ একটি উচ্চ বিদ্যালয় চালু করা হয়েছে। টোটোপাড়া এবং পার্শবর্তী বিদ্যালয় গুলোতে বাংলা এবং নেপালী ভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদান করা হয়। গ্রামে একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. HolidayIQ.com। "Totopara Village in Jaldapara - Video Reviews, Photos, History"HolidayIQ। ২০১৯-১০-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৩ 
  2. "Yahoo maps location of Totopara"। Yahoo maps f। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-০৭ 
  3. Sanyal, Charu Chandra, (1973) The Meches and the Totos - Two Sub-Himalayan Tribes of North Bengal. A North Bengal University publication

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা