টি. এ. সরস্বতী আম্মা

টেকাথ আমায়ানকট্টুকুরুচ্চি কালাথিল সরস্বতী(ইং-Tekkath Amayankottukurussi Kalathil Sarasvati) সংক্ষিপ্ত টি.এ. সরস্বতী আম্মা (জন্ম-২৬ ডিসেম্বর ১৯১৮[১] – ১৫ আগস্ট ২০০০)[২] একজন ভারতীয় শিক্ষাবিদ, পণ্ডিত, গবেষক, গণিতজ্ঞ। তাঁর জন্ম হয়েছিল কেরালার পালাক্কাড় জেলার চেরপুলাচ্চেরীতে। তিনি গণিতের ইতিহাস এবং সংস্কৃতে উল্লেখযোগ্য অবদানসম্পন্ন গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ লিখে গিয়েছেন। গ্রন্থের নাম -প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় ভারতে জ্যামিতি[২]

টি.এ. সরস্বতী আম্মা
জন্ম২৬ ডিসেম্বর,১৯১৮
চেরপুলাচেরী, পালাক্কাড় জেলা, কেরেলা
মৃত্যু১৫ আগস্ট ২০০০
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বভারতীয়
পরিচিতির কারণ"প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় ভারতে জ্যামিতি" শীর্ষক গ্রন্থ
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রগণিতর ইতিহাস, সংস্কত
প্রতিষ্ঠানসমূহশ্রী কেরেলা বার্মা মহাবিদ্যালয়, ত্রিশূর, মহারাজা কলেজ,
শ্রী শ্রী নারায়ণ ন্যাস মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষা(১৯৭৩-৮০)
ডক্টরাল উপদেষ্টাভি. রাঘবন

সংক্ষিপ্ত জীবন সম্পাদনা

সরস্বতী আম্মার জন্ম হয়েছিল কেরেলার পালাকাড় জেলার চেরপুলাচেরীতে। তিনি ছিলেন মাতা কুটিমালু আম্মা এবং পিতা মারাথ আচুথা মেননের দ্বিতীয় সন্তান। [২] তিনি মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত এবং পদার্থ বিজ্ঞানের ডিগ্রী অর্জন করেন। তারপরে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি গবেষণা করেন ভি. রাঘবনের অধীনে। তিনি ছিলেন একজন সংস্কৃত পণ্ডিত। সরস্বতী আম্মাই শ্রী কেরেলা বার্মা মহাবিদ্যালয়, ত্রিশূর, মহারাজা কলেজ, আর্নেকুলাম এবং রাঁচীর মহিলা কলেজে পড়িয়েছিলেন। তিনি ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে থাকা শ্রী শ্রী নারায়ণ ন্যাস মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষা হিসেবে ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত কার্যনির্বাহ করেছিলেন। অবসরের পর তিনি নিজের গৃহ শহর অট্টাপালামে অতিবাহিত করেন। [২] ২০০০ সালের ১৫ আগস্টের দিন তিনি মৃত্যুকে বরণ করে নেন। তাঁর কনিষ্ঠ ভগ্নী টি.এ. রাজালক্ষ্মী মালায়ালম ভাষার একজন প্রখ্যাত গল্পকার এবং ঔপন্যাসিক। কিন্তু ১৯৬৫ সালে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। [২]

স্বীকৃতি এবং সম্মান সম্পাদনা

২০০২ সালে কেরেলা গাণিতিক সমাজে তাঁদের বার্ষিক সম্মিলনীতে প্রফেসর টি.এ. সরস্বতী আম্মা স্মারক বক্তৃতা শীর্ষক এক নিয়মিত বক্তৃতার আরম্ভ করেন। [২][৩] মিচ্ছিউ ইয়ানু- যিনি সরস্বতী আম্মার প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় ভারতে জ্যামিতি শীর্ষক গ্রন্থটি পর্যালোচনা করেছিলেন, বলেছিলেন যে- "বইটি ভারতীয় জ্যামিতি অধ্যয়নের জন্য এক শক্তিশালী ভিত্তি নির্মাণ করেছেন।".[৪]

তাঁর গ্রন্থ প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় ভারতে জ্যামিতিতে ভারতের সংস্কৃত, প্রাকৃত বৈজ্ঞানিক, এবং অর্ধ-বৈজ্ঞানিক সাহিত্য সম্বন্ধীয় জরীপ সন্নিবিষ্ট করা হয়েছে। বৈদিক সাহিত্য থেকে তিনি আরম্ভ করেছেন এবং সতের শতকের প্রারম্ভিক পর্যায়ে শেষ করেছেন। বৈদিক সাহিত্যর বিষয়ে তিনি সুগভীর আলোচনা করেছেন যেখানে জৈন আনুশাসনিক কর্মত গণিতের অংশীদারিত্ব, হিন্দু সিদ্ধান্তের সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছে। আর্যভট্ট-প্রথম এবং দ্বিতীয়, ভাস্কর প্রথম এবং দ্বিতীয়, পরমেশ্বর, নীলকণ্ঠ, সংগামাগ্রম মাধবের জ্যামিতির ক্ষেত্রটিতে অবদানের বিষয়েও তিনি আলোকপাত করেছেন। গণিতজ্ঞ মহাবীর, শ্রীধর, নারায়ণ পণ্ডিত, বাক্সালী পান্ডুলিপির বিষয়েও অধ্যয়ণ করা হয়েছে। এই কর্মটির দ্বারা পূর্বের এক মতবাদকে প্রত্যাহ্বান জানাতে চাওয়া হয়েছিল যেখানে বলা হয়েছিল যে ভারতের গাণিতিক জিনিয়াস মূলত বীজগণিত এবং গণনার দ্বারা অবদমিত হয়ে ছিলেন; প্রমাণ তথা পক্ষপাতিত্বহীনতাকে তাঁরা বর্জন করেছিলেন। সেইসময়ে ভারতে একটি বিদ্যালয়ও ছিল যেখানে বীজগাণিতীক ফলাফলকে জ্যামিতির মাধ্যমে প্রকাশ করা হত।[৫]

নির্বাচিত প্রকাশন সম্পাদনা

বই সম্পাদনা

  • টি.এ. সরস্বতী আম্মা (২০০৭)। প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় ভারতে জ্যামিতি। মতিলাল বানারসীদাস প্রকাশন লিমিটেড। পৃষ্ঠা ২৭৭। আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-২০৮-১৩৪৪-১ |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য) 

গবেষণাপত্র সম্পাদনা

  • টি.এ. সরস্বতী আম্মা (১৯৫৮–৫৯)। "Sredi-kshetras Or Diagrammatic representations of mathematical series"। Journal of Oriental Research২৮: ৭৪–৮৫। 
  • টি.এ. সরস্বতী আম্মা (১৯৬১)। "The Cyclic Quadrilateral in Indian Mathematics"। Proceedings of the All-India Oriental Conference২১: ২৯৫–৩১০। 
  • টি.এ. সরস্বতী আম্মা (১৯৬১–৬২)। "The Mathematics of the First Four Mahadhikaras of Trilokaprajnapati"। গঙ্গানাথ ঝা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পত্রিকা১৮: ২৭–৫১। 
  • টি.এ. সরস্বতী আম্মা (১৯৬২)। "Mahavira's Treatment of Series"। রাঁচী বিশ্ববিদ্যালয়ের পত্রিকা: ৩৯–৫০। 
  • টি.এ. সরস্বতী আম্মা (১৯৬৯)। "ভারতে গাণিতিক ধারণার বিকাশ"। বিজ্ঞান ইতিহাসর ভারতীয় পত্রিকা: ৫৯–৭৮। 

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. 1094 of the Kollam Era translates to 26 December 1918. See https://www.mobilepanchang.com/malayalam/malayalam-month-calendar.html?date=26/12/1918 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে
  2. Gupta, R.C. (২০০৩)। "Obituary: T.A. Sarasvati Amma" (পিডিএফ)Indian Journal of History of Science38 (3): 317–320। ১৬ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. Fraser, Craig। "Report on the Awarding of the Kenneth O. May Prize"International Commission on the History of Mathematics। ২১ জুলাই ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১০ 
  4. Yano, Michio (১৯৮৩)। "Review of Geometry of Ancient and Medieval India by T. A. Sarasvati Amma"। Historia Mathematica10: 467–470। ডিওআই:10.1016/0315-0860(83)90014-9 
  5. Book Review by Google। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০১০