ঝালাইপট্টি
ঝালাইপট্টি (ইংরেজি: Jhalaipotti) বাংলাদেশের রাজবাড়ী জেলা শহরের উত্তর-মধ্য অংশের একটি অঞ্চল। ঝালাইপট্টিকে কেন্দ্র করে রাজবাড়ী শহরের গুচ্ছভিত্তিক বাণিজ্যকেন্দ্রগুলি গড়ে ওঠে যা স্থানীয়ভাবে "পট্টি" নামে পরিচিত। এ সকল অঞ্চলকে একত্রে বৃহত্তর ঝালাইপট্টি নামে অভিহিত করা হয়। ঝালাইপট্টিকে কেন্দ্র করে পুরনো রাজবাড়ী শহরের আয়তন ক্রমবর্ধিত হয়। ঝালাইপট্টিতে হালকা থেকে শুরু করে মাঝারি ধাতব শিল্পের কাজ হয়ে থাকে। এর বাইরে এখানে দুগ্ধজাত পণ্য, মিষ্টি, মিঠাই, খাদ্যশস্য, মৃত্তিকা নির্মিত পণ্য ইত্যাদির বাণিজ্য চলে।
ঝালাইপট্টি | |
---|---|
শহর | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৪৫′৪৯″ উত্তর ৮৯°৩৮′৪১″ পূর্ব / ২৩.৭৬৩৬১° উত্তর ৮৯.৬৪৪৭২° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ঢাকা |
বৃহত্তর জেলা | ফরিদপুর |
জেলা | রাজবাড়ী |
শহর | রাজবাড়ী |
ওয়ার্ড | ৮ |
আয়তন ঝালাইপট্টি রাজবাড়ী পুরনো শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চল | |
• মোট | ০.১১ বর্গকিমি (০.০৪ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ৭ মিটার (২৩ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১,৩৫৭ |
• জনঘনত্ব | ১২,৩৩৬/বর্গকিমি (৩১,৯৫০/বর্গমাইল) |
ডাকঘর ক্রমাঙ্ক | ৭৭০০ |
নামকরণ
সম্পাদনা"ঝালাই" শব্দটির শাব্দিক অর্থ দুইটি ধাতব খণ্ডকে একসাথে জুড়ে দেওয়া। এখানে মূলত লৌহ ও টিনভিত্তিক অসংখ্য দোকান গড়ে ওঠে। স্থানীয়ভাবে সমগোত্রীয় একাধিক দোকানের সমাহার "পট্টি" নামে পরিচিত। এ থেকেই অঞ্চলের নাম ঝালাইপট্টি। তবে কালক্রমে ঝালাইপট্টির আয়তন সংকুচিত হয়ে আসে এবং অন্যান্য পট্টির সৃষ্টি হয়।
বৃহত্তর ঝালাইপট্টি
সম্পাদনাব্রিটিশ আমলে লৌহ শিল্পের জন্য ঝালাইপট্টি বঙ্গ অঞ্চলে প্রসিদ্ধ ছিল। তৎকালীন সময়ে ঝালাইপট্টি বলতে একটি উত্তর রাজবাড়ীর একটি বড়ো অঞ্চলকে বোঝাত। কালক্রমে ঝালাইপট্টিতে লৌহভিত্তিক ব্যবসার পরিমাণ কমে আসে। ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতের ওড়িশা থেকে আগত জনগোষ্ঠী, মাড়োয়াড়ি জনগোষ্ঠী, এবং বঙ্গদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষেরা এখানে নানান ব্যবসা গড়ে তোলে।
কালক্রমে তৎকালীন ঝালাইপট্টি অঞ্চল ঘোষপট্টি, মাড়োয়াড়িপট্টি, টিনপট্টি, বাদামপট্টি, স্বর্ণপট্টি, লৌহপট্টি, ঘাসপট্টি, পালপট্টি, চামড়াপট্টি (পূর্বতন 'ম্যাকলিওড স্ট্রিট') সহ ক্ষুদ্রতর বিভিন্ন পট্টিতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এসকল পট্টি তথা রাজবাড়ী শহরেরর সমবেত ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে "বৃহত্তর ঝালাইপট্টি ঐক্য পরিষদ"।
পরিবহণ ব্যবস্থা
সম্পাদনাবৃহত্তর ঝালাইপট্টির যোগাযোগব্যবস্থা সড়ককেন্দ্রিক। অঞ্চলের অধিকাংশ সড়ক অপ্রশস্ত হওয়ায় গণপরিবহণসহ ভারী যানবাহক অবাধে চলাচলের সুযোগ কম। ছোটো বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় এখানে মালামাল পরিবহণে পিক আপ ও সাইকেল ভ্যানের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়। মনুষ্য পরিবহণে সাইকেল, পায়ে চালানো রিকশা, মোটরচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়। খলিফাপট্টি অংশে উন্মুক্ত জায়গা থাকার কারণে বাইক পার্কিং এর জন্য জায়গাটি বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়। রবিবার ও বৃহস্পতিবার হাট থাকার কারণে এখানকার সরু রাস্তাগুলিতে তীব্র যানজট পরিলক্ষিত হয়। কেবলমাত্র ম্যাকলিওড স্ট্রিট অংশে রিকশা ও ইজি বাইক স্ট্যান্ড রয়েছে। যেখান থেকে শহর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করা যায়।
ধর্ম ও সংস্কৃতি
সম্পাদনাবৃহত্তর ঝালাইপট্টির মাড়োয়ারি পট্টির মসজিদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এটি শহরের অন্যতম প্রাচীন একটি মসজিদ। মন্দিরসমূহের মধ্যে পান বাজার দুর্গামন্দির ও মাড়োয়ারিপট্টি কালী মন্দিরের নাম উল্লেখযোগ্য।
এ অঞ্চলে সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লখযোগ্য খলিফাপট্টিতে অবস্থিত আঞ্জুমান-ই-কাদেরিয়া এর নাম। এ প্রতিষ্ঠানটি শতাধিক বছরের ঐতিহ্য বহন করছে। এর ব্যবস্থাপনায় রাজবাড়ী-মেদিনিপুর ওরশ স্পেশাল আন্তর্জাতিক ট্রেন পরিচালনা হয়ে থাকে।
ব্যবসা-বাণিজ্য
সম্পাদনা- লৌহভিত্তিক কর্ম
- জুয়েলার্স
- দুগ্ধজাত পণ্য
- হিন্দুধর্মীয় পূজাসামগ্রী
- বাদাম
- বাতাসা
- গো-খাদ্য
- মৃত্তিকা নির্মিত সামগ্রী
- চামড়া
- হার্ডওয়্যার
বিখ্যাত খাবার
সম্পাদনা১। নির্মল মিষ্টান্ন ভাণ্ডার
২। শংকর মিষ্টান্ন ভাণ্ডার
৩। ঘোষপট্টি মোড়ের বিখ্যাত দুধ কুলফি