জিতেন্দ্রমোহন সেন

অধ্যাপক জিতেন্দ্রমোহন সেন (২৫ এপ্রিল, ১৮৯–৩০ আগস্ট, ১৯৫৬) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় শিক্ষাব্রতী। [১]

জিতেন্দ্রমোহন সেন
130x173
জিতেন্দ্রমোহন সেন
জন্ম(১৮৯২-০৪-২৫)২৫ এপ্রিল ১৮৯২
মৃত্যু৩০ আগস্ট ১৯৫৬(1956-08-30) (বয়স ৬৪)
পেশাঅধ্যাপনা
কর্মজীবন১৯২২-১৯৫৬

জন্ম ও শিক্ষা জীবন সম্পাদনা

জিতেন্দ্রমোহন সেনের জন্ম ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দের ২৫ এপ্রিল ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের তৎকালীন ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জে। পিতা জ্ঞানেন্দ্রমোহন সেন। জিতেন্দ্রমোহনের বিদ্যালয়ের পাঠ কলকাতার সিটি কলেজিয়েট স্কুলে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানে স্নাতক হন প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে। কিছুদিন কলকাতার কেশব অ্যাকাডেমিতে প্রধান শিক্ষকের কাজ করেন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে উচ্চ শিক্ষার্থে লন্ডন যান। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে সেখানকার লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এডুকেশনে এম.এড ডিগ্রি লাভ করেন। [২]

কর্মজীবন সম্পাদনা

১৯২২ খ্রিস্টাব্দে দেশে ফেরার পর কলকাতার ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজে প্রথমে অধ্যাপক ও পরে অধ্যক্ষপদে প্রতিষ্ঠিত হন। এই সময়ে তিনি গঙ্গাচরণ দাশগুপ্তর সঙ্গে যৌথভাবে মানব মনের মনস্বিতা নির্ণয়ের জন্য রচনা করেন মনস্বিতা মাপ শীর্ষক একটি গ্রন্থ। বাংলা ভাষায় মনোমান-বিজ্ঞানের প্রথম বই এটি। ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে বৃত্তি লাভ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং সেখানকার প্রাথমিক শিক্ষাপদ্ধতি পরিদর্শন করে আসেন এবং এডুকেশনের উপর পড়াশোনা ও গবেষণার কাজ করেন। বাংলা ও ইংরাজীতে শিক্ষা ও শিক্ষাপদ্ধতির উপর গ্রন্থ রচনা করেন। কিছুদিন তিনি শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বশীল (সহকারী অধিকর্তা) পদে ছিলেন। এরপর ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে কৃষ্ণনগর কলেজের অধ্যক্ষের পদে নিযুক্ত হন। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ হতে ছয় বৎসর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষণশিক্ষা বিভাগে এবং ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটে মনস্তত্ত্ব বিভাগে কাজ করেন।

অন্যান্য অবদান সম্পাদনা

রচিত গ্রন্থ—
  • মেজারমেন্ট অফ ইন্টেলিজেন্স (১৯৩৬), শ্রী গৌরাঙ্গ প্রেস
  • হিস্ট্রি অফ এলিমেন্টারি এডুকেশন ইন ইন্ডিয়া (১৯৩৩), মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়
  • মনস্বিতার মাপ (১৯২৪) শ্রী নরসিং প্রেস ( গঙ্গাচরণ দাশগুপ্তর সঙ্গে যৌথভাবে)

সম্মাননা সম্পাদনা

অধ্যাপক জিতেন্দ্রমোহন সেন ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে ইন্দোরে অনুষ্ঠিত ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের তেইশতম অধিবেশনে মনস্তত্ত্ব বিভাগের সভাপতি ছিলেন।[২] সভাপতির ভাষণে তিনি Measurement of Inteligence তথা মনস্বিতার মাপের উপর বক্তব্য রাখেন। তিনি ১৯৫০-৫৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদকের সাম্মানিক পদে ছিলেন। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর ফেলো নির্বাচিত হন। এছাড়াও তিনি ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ হতে আমৃত্যু কলকাতার কেশব অ্যাকাডেমির সাম্মানিক সম্পাদক ছিলেন। [২]

অধ্যাপক জিতেন্দ্রমোহন সেন কলকাতার ১ নম্বর গিরিশ বিদ্যারত্ন লেনের পৈতৃক বাড়ি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানমন্দির নির্মাণের জন্য দান করে যান। [১]

১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০ শে আগস্ট শিক্ষাব্রতী জিতেন্দ্রমোহন সেন কলকাতায় প্রয়াত হন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ২৪৫, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. "Deceased Fellow - JM Sen"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-২৪