জামা (দক্ষিণ ভারতীয় বস্ত্র)

জামা শব্দটি (হিন্দি: जामा , উর্দু: جام‎‎ ; বাংলা: জামা; ওড়িয়া: ଜାମା ) একটি লম্বা কোট বোঝায় যা মুঘল আমলে দক্ষিণ এশিয়ায় জনপ্রিয় ছিল।

শৈলী সম্পাদনা

 
১৮২৯ সালে মহারাজা রঞ্জিত সিং পোশাকটি পরে। জামার শিখ ধরনটি অপেক্ষাকৃত ছোট ছিল।
 
জামার একটি দক্ষিণী ধরন। মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টThe Metropolitan Museum of Art

বিভিন্ন ধরণ সম্পাদনা

জামার কিছু ধরন দেহকান্ডের চারপাশে আঁটসাঁট ছিল তবে হাঁটু বা গোড়ালির নীচে ঘাঘরার মতো ছড়িয়ে পড়ত।

চাকমান জামা, হাঁটুর চারপাশ অবধি বিস্তৃত হত। হাতাগুলি সম্পূর্ণ হাতার ধরনের ছিল।[১] এই জামা উভয় পাশে তন্তু দিয়ে বেঁধে দেওয়া হত এবং সামনের দিকে কিছু ধরনে খোলা ছিল।[২] মূলত পুরুষদের পোশাকটি এমন মহিলাদের দ্বারাও গ্রহণ করা হত যারা ওড়না এবং আঁটসাঁট পায়জামা সহ জামা পরতেন। [৩] জামার উপরের অর্ধেকের বন্ধনগুলি বগলের নীচে এবং বুকজুড়ে নেওয়া হয়। অন্যদিকে, চাকদার জামা চাক সহ জামা (কুঁচি করা) জামার একটি বিশেষ ধরন ছিল। এটি ছিল সাধারণ মুঘল জামার মতো, কিন্তু ঘাঘরার অংশটি মুঘল জামার বৃত্তাকার হেমের পরিবর্তে চার থেকে ছয় পয়েন্টে পড়েছিল। এই জামা রাজপুত দরবারের তাকুচিয়াহ থেকে উদ্ভূত হতে পারে এবং তাই এটি স্থানীয় উৎস হতে পারে। শিখ শাসনামলে জামা আর বিস্তৃত ছিল না বরং ছোট ছিল এবং প্রায়শই চলাচলের স্বাধীনতার জন্য কোমরের চারপাশে আটকে থাকত। চোল নামে পরিচিত একটি অনুরূপ পোশাক শিখ গুরুরা পরিধান করতেন। [৪][৫] ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ ভারতের উত্তর (উপরের) অংশে জামা শার্টের মতো পোশাকে পরিণত হয়। [৬] আবার, ফারজি (কোট) ছিল ছোট হাতা এবং পশমের কলার যুক্ত একটি কোট, যা সামনে খোলা ছিল। দৈর্ঘ্য জামার চেয়ে ছোট ছিল। ফারজি ছিল শীতের পোশাক। মুঘল সম্রাট এবং দরবারীরা জামার উপরে এটি পরিধান করতেন, একটি সজ্জিত কাপড়ের টুকরো দিয়ে বেঁধে রাখতেন, অর্থাৎ কোমরের চারপাশে আলগা ঝুলন্ত প্রান্ত দিয়ে কাটজেব। তাছাড়া, হিন্দু ও মুসলিম জামা ছিল যা হিন্দু ও মুসলমানরা একইরকমভাবে পরতেন কিন্তু একটু ভিন্ন ধরনে। হিন্দুরা জামাকে শরীরের বাম দিকে বেঁধে রাখতেন এবং মুসলমানরা ডান দিকে বেঁধে রাখতেন। [৭][৮] নিমজামা (নিম বা নিমা) শরীরের উপরের অংশের জন্য একটি অন্তর্বাস ছিল। দরবারীরা জামা (কোট) এর মতো পোশাকের নীচে এটি পরিধান করতেন। ধরনটি একটি খাটো হাতা গেঞ্জিজাতীয় পোশাকের অনুরূপ ছিল। নিমাজামাকে সামনে বাঁধার জন্য তন্তু দিয়ে সহায়তা করত; দৈর্ঘ্য কেবল হাঁটু পর্যন্ত ছিল, যা ছিল জামার চেয়ে ছোট। এটি মুঘল পোশাকের একটি অপরিহার্য অংশ ছিল।

চিত্র সম্ভার সম্পাদনা

আধুনিক ব্যবহার সম্পাদনা

গুজরাটে, জামা ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করে তবে, কচ্ছের কিছু অংশে পুরুষরা এখনও আঙ্গারখা নামে পরিচিত জামা পরেন যার স্কার্টটি নিতম্বের চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। [৯] [১০] [১১] তবে, কিছু শৈলীতে জামাগুলি হাঁটুর নীচে পড়ে।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Lewandowski, E.J. (২০১১)। The Complete Costume Dictionary। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 148। আইএসবিএন 9780810877856। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-৩০ 
  2. Goverdhan Panchal (1983) Bhavāī and Its Typical Āhārya: Costume, Make-up, and Props in Bhavāī, the Traditional Dramatic Form of Gujarāt [১]
  3. Sumathi, G.J. (২০০৭)। Elements of Fashion and Apparel Design। New Age International। পৃষ্ঠা 139। আইএসবিএন 9788122413717। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-৩০ 
  4. Condra, Jill (2008) The Greenwood Encyclopedia of Clothing Through World History: 1501–1800 [২]
  5. Krishna Chaitanya (1992) History of Indian Painting: Rajasthani Traditions [৩]
  6. Kumar, Raj (2006) Paintings and Lifestyles of Jammu Region: From 17th to 19th Century A.D. [৪]
  7. Kumar, Ritu (২০০৬)। Costumes and Textiles of Royal India (ইংরেজি ভাষায়)। Antique Collectors' Club। পৃষ্ঠা 39। আইএসবিএন 978-1-85149-509-2 
  8. The India Magazine of Her People and Culture (ইংরেজি ভাষায়)। A. H. Advani। ১৯৯২। পৃষ্ঠা 21। 
  9. Ghurye, G.S. (১৯৬৬)। Indian Costume। Popular Prakashan। পৃষ্ঠা 154। আইএসবিএন 9788171544035। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-৩০ 
  10. Tierney, T. (২০১৩)। Fashions from India। Dover Publications। পৃষ্ঠা 4। আইএসবিএন 9780486430409। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-৩০ 
  11. "The Tribune - Windows - Featured story"tribuneindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-৩০ 

টেমপ্লেট:Clothing in South Asia টেমপ্লেট:Punjabi clothing