জহুর হোসেন চৌধুরী
জহুর হোসেন চৌধুরী (জন্মঃ ২৭ জুন , ১৯২২ - মুত্যুঃ ১১ ডিসেম্বর, ১৯৮০) একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী সাংবাদিক। তিনি একাধারে একজন সাংবাদিক, সম্পাদক, কলাম লেখক ও রাজনীতিবিদ। তিনি আজীবন তিনি দৈনিক সংবাদের অন্যতম পরিচালক ছিলেন।
জহুর হোসেন চৌধুরী | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ২৭ জুন , ১৯২২, ফেনী জেলায় ফেনী জেলায় |
মৃত্যু | ১১ ডিসেম্বর, ১৯৮০ |
পেশা | সাংবাদিক, সম্পাদক, কলামিস্ট ও রাজনীতিবিদ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার |
|
জন্ম ও শিক্ষাজীবনসম্পাদনা
সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরীর জন্ম ১৯২২ সালের ২৭ জুন। বর্তমান ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার রামনগর গ্রামে। তার বাবা ছিলেন সরকারি চাকুরীজীবী। তিনি ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট। তার বাবার কর্মস্থল সিরাজগঞ্জে।
পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে। তারপর পাঠশালা ও প্রাইমারী। এরপর তিনি ভর্তি হন সিরাজগঞ্জের এক উচ্চ বিদ্যালয়ে। এই বিদ্যালয় থেকে জহুর হোসেন চৌধুরী ১৯৩৮ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। তারপর জহুর হোসেন চৌধুরী কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে আইএ ভর্তি হন। এই কলেজ থেকে তিনি ১৯৪০ সালে আইএ পাসের স্বীকৃতি অর্জন করেন এবং ১৯৪২ সালে ইতিহাসে অনার্সসহ বিএ পাস করেন। ১৯৪৩ সালে তার শারীরিক অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং অনেক দিন পর এ অবস্থার উন্নতি হয়। এই অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি এমএ পরীক্ষা দিতে পারেননি।[১]
কর্মজীবনসম্পাদনা
তার সাংবাদিক জীবনের সূচনা হয় প্রয়াত হাবীবুল্লাহ বাহার সম্পাদিত ‘বুলবুল’ পত্রিকায়। ১৯৪৫ সাল থেকে একাদিক্রমে তিনি শিক্ষানবিশ, সম্পাদক ও সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘দ্য স্টেটসম্যান’, ‘কমরেড’ ও ‘স্টার অফ ইন্ডিয়া’ পত্রিকায়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তিনি সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। সরকারি কয়েকটি পেশাবদল শেষে তিনি আবার সাংবাদিকতায় ফিরে যান। জহুর হোসেন চৌধুরী তার সাংবাদিক জীবনের দ্বিতীয় পর্যায়ে ‘উপাত্ত’ ও ‘পাকিস্তান অবজারভার’ পত্রিকায় কিছুকাল কাজ করার পর ১৯৫১ সালে দৈনিক সংবাদে সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৪ সালে তিনি এ পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ‘সংবাদ’ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকা পর্যন্ত তিনি এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। দেশ স্বাধীন হলে তিনি ‘কাউন্টার পয়েন্ট’ নামে একটি ইংরেজি সাময়িকী সম্পাদনা করেন। আজীবন তিনি দৈনিক সংবাদের অন্যতম পরিচালক ছিলেন।
দৈনিক সংবাদের পাতায় তিনি ‘দরবার-ই-জহুর’ নামে যে কলাম লিখতেন, তা খুবই জনপ্রিয় ছিল। এসব নিবন্ধেরই বাছাই করা সঙ্কলন ‘দরবার-ই-জহুর’ নামে ১৯৮৫ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
রাজনৈতিক জীবনসম্পাদনা
তিনি মুসলিম ছাত্রলীগ, পরে এমএন রায়ের ‘র্যাডিক্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি’ সদস্য হন। সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে পঞ্চাশের দশকে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) প্রাদেশিক কমিটির সদস্য হন। তৎকালীন পাক-চীন মৈত্রী সমিতি এবং পাক-সোভিয়েত মৈত্রী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও সদস্যও ছিলেন তিনি। এছাড়া সাবেক পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়ন ও পূর্ব পাকিস্তান প্রেসক্লাবেরও তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। পরে তিনি নেপথ্যে থেকে আওয়ামী লীগ ও বামপন্থীদের মধ্যে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের লক্ষ্যে ঐক্যমোর্চা গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
পুরস্কার ও সম্মাননাসম্পাদনা
- একুশে পদক (মরণোত্তর, ১৯৮১)
দৈনিক সংবাদ তার স্মরণে প্রবর্তন করেছে ‘জহুর হোসেন স্মৃতিপদক’
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ জহুর হোসেন চৌধুরী[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], বিপ্লবীদের কথা.কম, তারিখঃ ১৮/০৩/২০১০
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- জহুর হোসেন চৌধুরী ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ অক্টোবর ২০১১ তারিখে, লেখক: চন্দন সাহা রায়, গুণীজন.কম