জল ময়ূর

পাখির প্রজাতি

জল ময়ূর (ইংরেজি: Pheasant-tailed jacana) (যা নেউ, নেউপিপি, পদ্মপিপি বা মেওয়া নামেও পরিচিত) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাখি। লম্বালেজী অনিন্দ্য সুন্দর পাখিটি বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি ‘জল ময়ূর’। ''যাকানিদাকে'' পরিবারভুক্ত পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম: ''হায়দফাসিয়ানো চিরুরগাস''।[৩]

জল ময়ূর
প্রজননকারী পাখির মাথা, গলা ও ডানার পালক-ঢাকনি সাদা থাকে। ঘাড় সোনালি-হলুদ, পিঠ গাঢ় বাদামি, বুক-পেট কালচে-বাদামি ও লেজ কালচে।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Chordata
উপপর্ব: Vertebrata
শ্রেণী: Aves
বর্গ: Charadriiformes
পরিবার: Jacanidae
গণ: Hydrophasianus
প্রজাতি: Hydrophasianus chirurgus
দ্বিপদী নাম
হাইড্রোফাসিয়ানো চিরুরগাস
(Scopoli, 1786)
প্রতিশব্দ

পাররা চিনেনসিস
পাররা লুজানেনসিস
ত্রিঙ্গা চিরুরগাস[২]

বর্ণনা সম্পাদনা

২৫ সেন্টিমিটার লম্বা লেজসহ পাখির দেহের দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় ৩৯ থেকে ৫৮ সেন্টিমিটার। ওজনে পুরুষ ১১৩ থেকে ১৩৫ গ্রাম। স্ত্রী প্রজাতির পাখি ২০৫ থেকে ২৬০ গ্রাম হয়। জল ময়ূর হাওর, বিল, হ্রদ এবং মিঠাপানির জলাভূমিতে বাস করে।[৪] দেশের প্রায় সব বিভাগেই দেখা যায় এ পাখিটি। [৫]

গ্রীষ্মকালে একাকী বা জোড়ায় ও শীতকালে ঝাঁক বেঁধে বিচরণ করে।[৬] ভাসমান পাতার ওপর হেঁটে হেঁটে জলজ উদ্ভিদে থাকা পোকা-মাকড় ও অমেরুদণ্ডী প্রাণী, জলজ উদ্ভিদের কচি পাতা, অঙ্কুর ও বীজ খায়।[৭][৮]

আচার-আচরণ সম্পাদনা

 

প্রজননকালে জল ময়ূর অত্যন্ত সুন্দর হয়ে ওঠে। প্রজননকারী পাখির মাথা, গলা ও ডানার পালক সাদা থাকে। ঘাড় সোনালি-হলুদ, পিঠ গাঢ় বাদামি, বুক-পেট কালচে-বাদামি ও লেজ কালচে হয়।[৯] একটি কালচে-খয়েরি রেখা মাথা ও ঘাড়-গলার সাদা ও সোনালি-হলুদ রংকে পৃথক করেছে। ঠোঁট নীলচে হয়। চোখ বাদামি ও পা নীলাভ-কালো। [১০]

স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম।[১১] প্রজননকালে পুরুষ শাপলা ও পদ্মপাতা বা এ জাতীয় ভাসমান কোনো উদ্ভিদের পাতার ওপর বাসা বানায়। স্ত্রী এতে চারটি জলপাই-বাদামি চকচকে ডিম পেড়ে চলে যায়। পুরুষ একাই ডিমে ২৩ থেকে ২৬ দিন তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়। ডিম থেকে ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই হাঁটতে, সাঁতরাতে ও ডুব দিতে পারে। প্রায় দুই মাস পর্যন্ত বাবার তত্ত্বাবধানে থাকে।[১২]

মিউটেশন বা জাত সম্পাদনা

এ পাখির তিন ধরনের প্রজাতি রয়েছে। নেউ, নেউপিপি এবং পদ্মপিপি বা মেওয়া নামেও পরিচিত।[১৩]

চিত্রশালা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Hydrophasianus chirurgus"বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2012.2প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন। 2012। সংগ্রহের তারিখ 24/10/2012  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. Viscount Walden, Arthur (১৮৭৭)। "A list of the bird known to inhabit the Philippine Archipelago"Transactions of the Zoological Society of London9: 125–252। ডিওআই:10.1111/j.1096-3642.1875.tb00238.x 
  3. Ali, Salim; Ripley, S. Dillon (১৯৮০)। Handbook of the Birds of India and Pakistan. Volume 2. Megapodes to Crab Plover. (2 সংস্করণ)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 199–200। 
  4. Whistler, Hugh (১৯৪৯)। Popular handbook of Indian birds (4 সংস্করণ)। Gurney and Jackson। পৃষ্ঠা 457–459। 
  5. Stunkard, H.W.; Nigrelli, R.F. (১৯৫৮)। "The morphology of Renicola philippinensis, n. sp., a digenetic trematode from the pheasant-tailed Jacana, Hydrophasianus chirurgus (Scopoli)": 105–113। 
  6. Shufeldt, R.W. (১৯১৯)। "The Osteology of the giant gallinule of the Philippines, Porphyrio pulverulentus Temminck with notes on the osteology of Tachybaptus philippensis (Bonnaterre) and Hydrophasianus chirurgus (Scopoli)": 87–104। 
  7. Hoffmann, Alfred (১৯৫০)। "Zur Brutbiologie des polyandrischen Wasserfasans Hydrophasianus chirurgus": 119–126। 
  8. Sonnerat, Pierre (১৭৭৬)। Voyage à la Nouvelle Guinée : dans lequel on trouve la description des lieux, des observations physiques & morales, & des détails relatifs à l'histoire naturelle dans le regne animal & le regne végétal। Chez Ruault। পৃষ্ঠা 82–84। 
  9. Scopoli, Giovanni Antonio (১৭৮৭)। Deliciae florae et faunae Insubricae. Pars II (পিডিএফ)। পৃষ্ঠা 92। ৩ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৯ 
  10. Thong-aree, Siriporn; Khobkhet, Obas (১৯৯৫)। "Breeding biology of Pheasant-tailed Jacana Hydrophasianus chirurgus in central Thailand" (পিডিএফ): 289–302। ৭ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৯ 
  11. Blanford, W.T. (১৮৯৮)। The Fauna of British India. Birds. Volume IV.। Taylor and Francis। পৃষ্ঠা 219–221। 
  12. Baker, E.C. Stuart (১৯২৯)। The Fauna of British India. Birds. Volume VI. (2 সংস্করণ)। Taylor and Francis। পৃষ্ঠা 42–43। 
  13. Emerson, K.C.; Elbel, R.E. (১৯৬১)। "A new species of Rallicola (Mallophaga) from southeast Asia.": 130–132।