চুনি কোটাল
চুনি কোটাল (১৯৬৫ - ১৪ আগস্ট ১৯৯২) একজন দলিত আদিবাসী মহিলা ছিলেন, যিনি ১৯৮৫ সালে লোধা শবর সম্প্রদায়ের প্রথম মহিলা স্নাতক হন। বছরের পর বছর অফিসের কর্মকর্তাদের দ্বারা হয়রানির ফলে ১৯৯২ সালের ১৬ আগস্ট তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। এবং এর ফলে লোধ শবর সম্প্রদায় তাদের অধিকার এবং বিচারের জন্য একত্রিত হয়। এমনকি ভারতের উল্লেখযোগ্য লেখক-এক্টিভিস্ট মহাশ্বেতা দেবী তার বিয়াধথান্দা (১৯৯৪), (দি বুক অব দি হান্টার (২০০২)) নামক বাংলা গ্রন্থে চুনি কোটালের আত্মহত্যার বিষয়টি আলোকপাত করেন্।[১]
শুভব্রত বসুর হার না মানা হার উপন্যাস চুনি কোটালের জীবন অবলম্বনে লেখা
জীবনী
সম্পাদনাচুনি ১৯৬৫ সালে পশ্চিম বঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোহালদহি গ্রামের লোধা সম্প্রদায়ের একটি গরিব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব কাটে চরম দারিদ্রের মধ্যে এবং তিনিই ছিলেন লোধা সম্প্রদায়ের প্রথম মহিলা যিনি মাধ্যমিকে পড়ালেখা শেষ করেন। এরপর ১৯৮৩ সালে তিনি ঝাড়গ্রাম আইটিডিটি অফিসে লোধা সামাজিক কর্মী হিসেবে তার প্রথম চাকরি পান। তার দায়িত্ব ছিল তার নিজ গ্রাম সমীক্ষণ করা।
১৯৮৫ সালে তিনি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নৃবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। স্নাতক ডিগ্রী লাভের দুই বছর পর, তিনি মেদিনীপুরের 'রানি শিরোমনি এসসি এন্ড এসটি গার্লস' হোস্টেলের হোস্টেল সুপারিনটেনডেন্ট হিসাবে নিযুক্ত পান, এখানেও তিনি সাম্প্রদায়িক হয়রানির সম্মুখীন হন।[২]
মৃত্যু
সম্পাদনাচুনি কোটালের সত্যিকারের সমস্যা শুরু হয় যখন তিনি স্থানীয় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স কোর্সে (এমএসসি) যোগ দেন। এখানে তিনি ধারাবাহিকভাবে তার উচ্চ বর্ণের ব্রাহ্মণ অধ্যাপক (যেমন অধ্যাপক ফাল্গুনী চক্রবর্তী এবং অন্যান্যরা) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসকদের দ্বারা বৈষম্যমূলক আচরণ এবং প্রতিনিয়ত অপমানিত হতে থাকেন, যারা তাকে প্রয়োজনীয় পাস গ্রেড দিতে অস্বীকৃতি জানায় যদিও তিনি তার সকল ধরনের মানদণ্ড পূর্ণ করেছিলেন। অপমানিত ও হতাশ চুনি ১৯৯২ সালের ১৬ আগস্ট আত্মহত্যা করেন।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Forgotten tales ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে The Hindu, 7 July 2002.
- ↑ ক খ "রোহিত, চুনি এবং একলব্যেরা"। ebela.in। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারী ২০১৮।