চীন–সামোয়া সম্পর্ক

চীন–সামোয়া সম্পর্ক হল গণপ্রজাতন্ত্রী চীন (পিআরসি) এবং সামোয়া রাষ্ট্রদ্বয়ের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। এ দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক সর্বদাই উষ্ণ; চীন সামোয়াকে প্রায়শই অর্থনৈতিক সাহায্য দিয়ে থাকে।

সাইনো-সামোয়ান সম্পর্ক
মানচিত্র China এবং Samoa অবস্থান নির্দেশ করছে

চীন

সামোয়া

সামোয়ায় কার্যরত বর্তমান সামোয়ার রাষ্ট্রদূত হলে মা চনগ্রেন[১] সামোয়া এখনও চীনে স্থায়ী কূটনৈতিক কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়নি, তবে নিয়োগ দেওয়ার ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছে।[২]

সম্পর্ক সম্পাদনা

প্রজাতন্ত্রী চীন তথা তাইওয়ান এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জন্য ওশেনিয়া সর্বদাই একটি কূটনৈতিক প্রতিযোগিতার কেন্দ্র। ওশেনিয়ার আটটি রাষ্ট্র পিআরসিকে, আর ছয়টি রাষ্ট্র আরওসিকে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে। আটলান্টিক তীরবর্তী রাষ্ট্রসমূহ তাদের বৈদেশিক নীতিতে পরিবর্তন আনা মাত্র এই নম্বরে কিছুটা তারতম্য আসে, এবং কূটনৈতিক স্বীকৃতি বেইজিং থেকে তাইপেইতে চলে আসে। ওয়ান চায়না পলিসি অনুযায়ী কোনো রাষ্ট্রই দুই চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবে না। আর এর ফলে আটলান্টিকের ছোট রাষ্ট্রসমূহও পিআরসি এবং আরওসি উভয় রাষ্ট্রের জন্য কূটনৈতিক প্রতিযোগিতার ময়দান।[৩][৪] ২০০৩ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্যাসিফিক আইল্যান্ডস ফোরামের সাথে কূটনৈতিক বন্ধন সুদৃঢ় করার ঘোষণা দেয়। একই সাথে সংস্থাটিকে দেওয়া অর্থনৈতিক সহায়তামূলক কার্যক্রম জোরালো করার কথাও বলেন। একই সাথে পিআরসির প্রতিনিধি ঝউ হোয়েনঝং বলেন, "পিআইএফের উচিত তাইওয়ানের সাথে যেকোনো প্রকার চুক্তি থেকে বিরত থাকে, তা হতে পারে আনুষ্ঠানিক চুক্তি বা মৌখিক।"[৫] ২০০৬ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবো ঘোষণা করেন, যে পিয়ারসি আটলান্টিক দ্বীপরাষ্ট্রসমূহের সাথে তাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে। পিআরসি আরো অর্থনৈতিক সাহায্য দেবে, আটলান্টিকের উন্নয়নশীল রাষ্ট্রসমূহের জন্য শুল্প প্রত্যাহার করে নেবে, ঐ সকল রাষ্ট্রসমূহের বার্ষিক ঋণ দেবে, বিনামূল্যে ম্যালেরিয়া-বিরোধী ঔষধ দেবে এবং দ্বীপরাষ্ট্রসমূহের দুই হাজার সরকারি কর্মকর্তা এবং প্রযুক্তিবিদদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে।[৬] ২০০৬ সালে ওয়েনের মাধ্যমে প্রথমবারের মত কোনো চীনের প্রধানমন্ত্রী আটলান্টিক দ্বীপসমূহে সফরে যায়, যাকে তাইপেই টাইমস "চীন এবং তাইওয়ানের মধ্যে একটি দীর্ঘস্থায়ী কূটনৈতিক যুদ্ধ-ময়দান" হিসেবে অভিহিত করে। একইভাবে সাউথ প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাসিফিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক রন ক্রোকম্বে বলেন, "আটলান্টিকে চীনের সফরসংখ্যা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি"।[৭]

বর্তমান সম্পর্ক সম্পাদনা

১৯৭৬ সাল থেকে সামোয়া গণপ্রজাতন্ত্রী চীনকে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে।

২০০৭ সালে পিআরসি সামোয়াকে রঞ্জন রশ্মি (এক্স-রে) পরীক্ষার যন্ত্র এবং স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসক দিয়ে সহায়তা করে।[৮] ২০০৮ সালে পিআরসি সামোয়ার শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ১,৩৬০,০০০ ইউরো দান করে।[৯]

২০০৮ সালের মার্চ মাসে তিব্বতে বিরাজমান অস্থিরতাকে কেন্দ্র করে সামোয়ান ফোনোর (সামোয়ার আইনসভা) স্পিকার তলফুয়াইভ্যালেলেই ফ্যালেমো লেইয়াতাউয়া বলেন যে বৈদেশিক নেতৃবৃন্দর উচিত নয় চীনের "অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে" হস্তক্ষেপ করা, এবং তাদের উচিত নয় দালাই লামার সাথে কথা বলা।[১০][১১]

২০০৮ সালের জুন মাসে সামোয়া ঘোষণা করে যে এটি চীন এবং জাপানে কূটনৈতিক মিশন চালুক করতে যাচ্ছে, যা হবে এশিয়ায় চালু করা দেশটির প্রথম কূটনৈতিক অফিস।[২] সেপ্টেম্বর মাসে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে জানায় যে চীন এবং সামোয়া সর্বদাই "অর্থনীতি, বাণিজ্য, কৃষি, খেলাধুলা, সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যখাতসহ আন্তর্জাতিক বিষয়সমূহে ফলদায়ী পারস্পরিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে।" এবং চীন "সামোয়ার অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নতি জন্য শীঘ্রই আরো বেশি বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।"[১২]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "PRC Ministry of Foreign Affairs" 
  2. "Samoa to establish diplomatic offices in China, Japan"। ২৩ জুন ২০০৬। 
  3. "The Pacific Proxy: China vs Taiwan"এবিসি রেডিও অস্ট্রেলিয়া। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৭। ৪ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৬ 
  4. Young, Audrey (অক্টোবর ১৯, ২০০৭)। "Chequebooks brought out at Pacific forum"দ্য নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২, ২০১১ 
  5. "China announces initiatives to expand ties with PIF member countries", PRC embassy in Papua New Guinea, November 24, 2003
  6. "China offers aid package to Pacific Islands", China Daily, April 5, 2006
  7. "Chinese Premier Wen to visit the Pacific Islands"তাইপেই টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ এপ্রিল ২০০৬। 
  8. "Samoa national hospital to get Chinese funded x-ray machine"রেডিও নিউজিল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল। অক্টোবর ৮, ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২, ২০১১ 
  9. "China to give Samoa more money for education"Radio New Zealand International। জানুয়ারি ২০, ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২, ২০১১ 
  10. "Samoa backs China's handling of Tibet"সামোয়া অবজার্ভার। ২৭ মার্চ ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৬ 
  11. "World leaders voice support for China's handling of riots"চায়না ডেইলি। ২৭ মার্চ ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৬ 
  12. "President Hu Jintao Meets with Samoan Prime Minister"। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০০৮। 

টেমপ্লেট:চীনের বৈদেশিক সম্পর্ক টেমপ্লেট:সামোয়ার বৈদেশিক সম্পর্ক