চীন–লাইবেরিয়া সম্পর্ক

গণপ্রজাতন্ত্রী চীন এবং লাইবেরিয়া মধ্যকার কূটনীতিক সম্পর্ক

গণপ্রজাতন্ত্রী চীন–লাইবেরিয়া সম্পর্ক হল গণপ্রজাতন্ত্রী চীন (পিআরসি) এবং লাইবেরিয়া রাষ্ট্রদ্বয়ের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। ১৯৭৭ সালে এ দুই রাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে নানাবিধ সমস্যার ফলে এ সম্পর্ক ভেঙেও যায় যা আবার পরবর্তী পুনর্গঠিত করা হয়। ২০০৯ সালের পূর্ব পর্যন্ত এ চীন থেকে লাইবেরিয়ায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিনিয়োগ এবং বৈদেশিক সাহায্য সংক্রান্ত চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে।

চীন-লাইবেরিয়া সম্পর্ক
মানচিত্র China এবং Liberia অবস্থান নির্দেশ করছে

চীন

লাইবেরিয়া

ইতিহাস সম্পাদনা

গণপ্রজাতন্ত্রী চীন (পিআরসি) এবং লাইবেরিয়া ১৯৭৭ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি প্রথম আনষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এরপর থেকে প্রায়শই বিভিন্ন বিতর্কে এ দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে ব্যঘাত ঘটে এবং সম্পর্ক ছিন্ন হয়।[১] প্রজাতন্ত্রী চীন (আরওসি) বা তাইওয়ানকে লাইবেরিয়ার স্বীকৃতি দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৯৮৯ সালের ১০ অক্টোবর পিআরসি লাইবেরিয়ার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে।[২] এই স্বীকৃতির বিনিময়ে তাইওয়ান লাইবেরিয়াকে শিক্ষা ও অবকাঠামো খাতের উন্নয়নের জন্য ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সাহায্য দেবার প্রতিশ্রুতি দেয়। ১৯৯৩ সালের ১০ই আগস্ট পিআরসি লাইবেরিয়ার সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে এবং মনোরোভিয়ায় তাদের একটি দূতাবাস স্থাপন করে। এর মাধ্যমে লাইবেরিয়া সেই সমস্ত হাতে গোণা রাষ্ট্রের তালিকায় নাম লেখায়, যারা পিআরসি এবং আরওসি উভয়ের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে।[৩]

১৯৯৭ সালে চার্লস টেইলরের সরকার "দুই চীন"কে স্বীকৃতি দেয় - এমন ঘোষণার পর পিআরসি তৎক্ষণাৎ তাদের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে।[৪] অধিকন্তু, হংকং-এর সার্বভৌমত্ব স্থানান্তরকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশ আইনানুযায়ী প্রতিষ্ঠিত লাইবেরিয়ার কনস্যুলেট বন্ধ করে দিতে বাধ্য করা হয়।[৫]

১২ অক্টোবর, ২০০৩ সালে লাইবেরিয়া আরওসির সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে পিআরসির সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে। [৬] এই ঘটনাকে লাইবেরিয়ায় শান্তিরক্ষা মিশন যেন না ঘটে জাতিসংঘে পিআরসির লবিং করে এ ধরনের চাওয়ার প্রতিফলন হিসেবে দেখা হয়েছে।[৭]

লাইবেরিয়ার উন্নয়নমূলক সহযোগিতায় চীন সম্পাদনা

২০০০ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমের রিপোর্ট থেকে প্রায় ৬৮টি চীনা আনুষ্ঠানিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সন্ধান পাওয়া যায়।[৮] লাইবেরিয়া প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেন্ডেল ক্যাম্পাসের পুনঃসংস্কার এবং পুনর্গঠন করার জন্য এই প্রকল্পগুলো কাজ করে।[৯] এছাড়াও ২০০৮ সালে নিম্বা কাউন্টিতে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণের জন্য লাইবেরিয়া সরকারের সাথে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি চুক্তি হয়।[৯]

সাংস্কৃতিক সম্পর্ক সম্পাদনা

২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে মনোরোভায় অবস্থিত চীনা দূতাবাস লাইবেরিয়দের জন্য চীনা ভাষার কোর্স চালু করেছে। এ ধরনের কোর্স চালু করার পিছনে কারণ হিসেবে ছিল লাইবেরিয় নাগরিকদের চীনা ভাষাভাষীর নিম্নসংখ্যা এবং দুই দেশের মধ্যকার ক্রমশ বর্ধিষ্ণু বাণজ্যিক সম্পর্ক।[১০]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Taiwan as an Emerging Foreign Aid Donor: Developments, Problems, and Prospects, Gerald Chan; Pacific Affairs, Vol. 70, 1997
  2. Taiwan Edges Out China for Liberia's Diplomatic Recognition, Global News No. GL970-25, February 21, 1997
  3. Cross-Strait Scramble for Africa, A Hidden Agenda in China-Africa Cooperation Forum। Harvard Asia Quarterly। বসন্ত ২০০১। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  4. Relations[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], Embassy of the People's Republic of China in the Republic of Liberia
  5. "Liberian consulate forced to close"সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ১৯৯৭  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  6. China, Liberia resume diplomatic ties ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে, Ministry of Foreign Affairs, People's Republic of China
  7. "Taiwan plays down Liberia blow"বিবিসি নিউজ অনলাইন। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০০৩ 
  8. Austin Strange, Bradley C. Parks, Michael J. Tierney, Andreas Fuchs, Axel Dreher, and Vijaya Ramachandran. 2013. China’s Development Finance to Africa: A Media-Based Approach to Data Collection. CGD Working Paper 323. Washington DC: Center for Global Development.http://china.aiddata.org[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  9. Strange, Parks, Tierney, Fuchs, Dreher, and Ramachandran, China’s Development Finance to Africa: A Media-Based Approach to Data Collection
  10. "Learn Chinese for free... in Liberia"বিবিসি নিউজ। ১৩ অক্টোবর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৬ 

টেমপ্লেট:চীনের বৈদেশিক সম্পর্ক টেমপ্লেট:লাইবেরিয়ার বৈদেশিক সম্পর্ক