চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

চারুকলা অনুষদ (পূর্ব নাম চারুকলা ইন্সটিটিউট) বাংলাদেশের চারু ও কারুশিল্প পাঠদানের প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি ১৯৪৮ সালে পুরাতন ঢাকার জংশন রোডে ন্যাশনাল মেডিক্যাল স্কুলের একটি বাড়ীতে চারুকলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করে। চারুকলা অনুষদ বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত একটি অনুষদ। এটি ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত।

চারুকলা অনুষদ ভবন
Institute of Fine Art 1 .A.M.R.jpg
মানচিত্র
সাধারণ তথ্য
ধরনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ
স্থাপত্য রীতিআধুনিক
অবস্থানঢাকা, বাংলাদেশ
ঠিকানাশাহবাগ, ঢাকা
নকশা এবং নির্মাণ
স্থপতিমাজহারুল ইসলাম

প্রতিষ্ঠাসম্পাদনা

প্রতিষ্ঠাকালে চারুকলা ইন্সটিটিউটের নাম ছিল 'গভর্ণমেন্ট আর্ট ইনস্টিটিউট'।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৯৬৩ সালে এটিকে প্রথম শ্রেণীর কলেজে উন্নীত করে নামকরণ করা হয় 'বাংলাদেশ চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়'। ১৯৮৩ সালে এই প্রতিষ্ঠানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোর অধীনে এনে 'চারুকলা ইন্সটিটিউট' নামকরণ করা হয়। পরবর্তীতে এটি অনুষদের মর্যাদা লাভ করে, চারুকলা অনুষদ নাম ধারণ করে।

চারুকলা অনুষদের বিভাগসমূহ:

  • অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগ
  • ছাপচিত্র বিভাগ
  • ভাস্কর্য বিভাগ
  • কারুশিল্প বিভাগ
  • গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগ
  • প্রাচ্যকলা বিভাগ
  • মৃৎশিল্প বিভাগ
  • শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগ

শিক্ষা পদ্ধতি:

বর্তমানে এই অনুষদে চারবছর মেয়াদী স্নাতক ও দুইবছর মেয়াদী স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। ব্যবহারিক ও তত্ত্বীয়ভাবে এখানে পাঠদান করা হয়ে থাকে।

চারুকলার বর্তমান অবস্থা:সম্পাদনা

বর্তমানে চারুকলা অনুষদে চালু রয়েছে আটটি বিভাগ। বিভাগগুলো হলো: গ্রাফিক ডিজাইন, প্রাচ্যকলা, মৃৎশিল্প, অঙ্কন ও চিত্রায়ণ, ভাস্কর্য, কারুশিল্প, শিল্পকলার ইতিহাস ও ছাপচিত্র। অনুষদে রয়েছেন ৫৯ জন শিক্ষক। দেশের প্রসিদ্ধ শিল্পীও রয়েছেন এই তালিকায়। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের নামে রয়েছে এটি গ্যালারি। রয়েছে অডিটোরিয়াম ও লাইব্রেরি। প্রত্যেক বিভাগের জন্য আছে সুসজ্জিত ক্লাসরুম। গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের জন্য রয়েছে আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব। চারুকলা ইন্সটিটিউট ভবনের নকশা করেছেন খ্যাতনামা স্থপতি মাজহারুল ইসলাম।

এই সবুজ প্রাঙ্গনে শিক্ষার্থীরা সারি বেধে ছবি আঁকার চর্চা করে। কেউবা কাগজে না এঁকে কাঠ কেটে ফুটিয়ে তুলেন নানান ছবির আকৃতি। কেউ আবার কাঠে না করে পাথর দিয়ে গড়ে তোলেন কোনো অবয়ব। চত্বরটি যেন ইট পাথরের শহরের মাঝে একটুকরো অন্য শ্যামল জগৎ। যে জগৎটি বিভিন্ন ভাস্কর্য, রঙিন চিত্রকলা আর সবুজ গাছপালায় মোড়ানো।

মঙ্গল শোভাযাত্রা ও চারুকলা অনুষদসম্পাদনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে প্রতিবছরই পহেলা বৈশাখে ঢাকা শহরের শাহবাগ-রমনা এলাকায় মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।[১] এই শোভাযাত্রায় চারুকলা অনুষদের শিক্ষক শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন স্তরের ও বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে থাকে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন ধরনের প্রতীকী শিল্পকর্ম বহন করা হয়। এছাড়াও বাংলা সংস্কৃতির পরিচয়বাহী নানা প্রতীকী উপকরণ, বিভিন্ন রঙ-এর মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি নিয়ে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়। তবে একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক থেকে প্রায় প্রতি জেলাসদরে এবং বেশ কিছু উপজেলা সদরে পহেলা বৈশাখে ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’’ আয়োজিত হওয়ায় ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’’ বাংলাদেশের নবতম সর্বজনীন সংস্কৃতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আবেদনক্রমে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০শে নভেম্বর বাংলাদেশের ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’’ জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কোর মানবতার অধরা বা অস্পর্শনীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান লাভ করে।[২][৩]

চিত্রশালাসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১৮ 
  2. হোসেন, মোছাব্বের (১৪ এপ্রিল ২০১৭)। "মঙ্গল শোভাযাত্রার বিশ্ব স্বীকৃতি এল যেভাবে"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১৮ 
  3. "২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০ নভেম্বর ইউনেসকো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সাংস্কৃতিক হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করে"unesco official site। ২০১৬-১১-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-৩০ 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা