চাদর
চাদর হলো বহিঃঅঙ্গে পরার একটি পোশাক যা অনেক ইরানিয়ান মহিলারা ঘরের বাইরে পরে থাকে ।এটা অন্যতম সম্ভাব্যপথ একজন মুসলিম মহিলাকে তাঁর ইসলামিক পোশাক বিধি হিজাব মেনে চলার ।চাদর হলো পূর্ণ দৈর্ঘ্যের অর্ধবৃত্তাকার বস্ত্র যার সামনের দিক খোলা যা মাথার উপরে পরিধান করে সামনে শেষ হয়।এই পোশাকে কোন হাতা নেই, তবে বাহু চারপাশ পর্যন্ত এটা ঢেকে রাখে।
ঐতিহ্যবাহী ব্যবহার
সম্পাদনাঐতিহ্যগত ভাবে একটি হালকা রঙের বা প্রিন্টের ওপর করা চাদর ব্লাউজ, স্কার্ট বা পায়জামার সাথে স্কার্ট, মাথার ঘোমটা জাতীয় পোশাকের পরে থাকে ইরানের গ্রামীণ এলাকার অনেক বয়স্ক মহিলারা।ঐতিহাসিকভাবে শহরে মূলত এক জাতীয় আয়তাকার স্বচ্ছ কাপড়ের টুকরা বা নেকাবের সাথে পরা হয় এই পোশাক যা চোখের নিচ থেকে শুরু হয়। আধুনিক চাদরে নেকাব দরকার হয় না।গ্রামের মহিলারা মূলত বাসায় হালকা সাবলীল কোন পোশাক পরে, তারা চাদর ও নেকাব পরে না। তবে শহরের মহিলারা তাদের গৃহস্থালী কাজ করার সময়েও একটা চাদর পরে থাকে তাদের পোশাকের উপরে।সাধারণত শিয়া মুসলমান মহিলারাই বেশি চাদর পরে।
বর্তমানে
সম্পাদনাকালো চাদর সাধারণত পরা হয়ে থাকে শোক প্রকাশের বা অন্তোষ্টিক্রিয়া জাতের অনুষ্ঠানে। সাদা বা প্রিন্টের চাদর সবসময় পরা যায়। কিছু মহিলা এখনও অগ্রাধিকার দেয় ভিন্ন ধরনের হালকা রঙের চাদরকে।গ্রামের বয়স্ক মহিলারা শহরের ফ্যাশনকে এড়িয়ে চলেন এবং কিছু তরুণী রঙ্গিন চাদর পছন্দ করে পরতে। ইরানের মহিলারা চাদর পড়তে বাধ্য নন।অনেকে এটা পরেন দায়িত্বশীলতা ও ইসলামের ওপর ভক্তি থেকে।যাইহোক মহিলারা সরকারী বাধ্যতা মেনে চলেন ঘোমটা মাথায় দিয়ে এবং লম্বা ওভারকোট পরে যা তাদের পা ও হাতকে লুকিয়ে রাখে। হিজাবের মতো চাদরও ইসলামী আন্দোলনে জড়িত মুসলমান নারীদের মধ্যে জনপ্রিয় যা তাদের সম্মতি ও ভক্তি প্রকাশ করে ইসলামিক সংস্কৃতির প্রতি। [১]
ইরানিয়ান মহিলাদের পোশাকের ইতিহাস
সম্পাদনাফাদওয়া আল গুইন্ডি তার লেখা বই হিজাবে উল্লেখ করেন যে প্রাচীনকালের পারসিয়ান আচারের মূল স্থল ছিল মেসোপটেমিয়া, যেখানে সন্মানিত মহিলারা পর্দা মানতেন এবং চাকর ও রূপপোজীবিদের এটা মানা নিষিদ্ধ ছিল। গ্রাসিয়ান রোমান ঐতিহাসিক প্লুতার্কের মতে তারা তাদের বউ এবং উপপত্নীদের লুকিয়ে রাখত। যখন যাত্রা করত তারা তাঁবু বহন করত এবং তা সবদিক দিয়ে ঢেকে রাখত।[২] বিশ শতকে পহলভি ও রেজা শাহের আমলে ১৯৩৬ সালে চাদর নিষিদ্ধ হয় যা পশ্চিমা সংস্কৃতির সাথে তাল মেলাতে পারছিল না।যারা পর্দা করে রাস্তায় বের হচ্ছিল পুলিশ তাদের পর্দা সরিয়ে দিচ্ছিল। অনেক সাধারণ মহিলার কাছে রাস্তায় পর্দা ছাড়া বের হওয়া ছিল নগ্নতার সমতুল্য।তবে উচ্চ শ্রেণীর নারী-পুরুষের কাছে এটা খুবই গ্রহণযোগ্য ছিল এবং তারা এটাকে নারী অধিকারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেখছিল।[৩] ১৯৮০ সালে ইসলামিক বিপ্লবের পরে ইরান সরকার হিজাব মেনে চলা বাধ্যতা মূলক করে, তবে এতে চাদর পরা বাধ্যতামূলক ছিল না।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ http://www.oxfordislamicstudies.com/article/opr/t125/e417?_hi=8&_pos=2
- ↑ cited in Briant 2002 p. 284
- ↑ cited in El-Guindi 1999, p. 174
আরো পড়ুন
সম্পাদনা- Briant, Pierre, From Cyrus to Alexander, Eisenbrauns, 2002 (English translation and update of 1996 French version)
- Bruhn, Wolfgang, and Tilke, Max, Kostümwerk, Verlag Ernst Wassmuth, 1955, as translated into English as A Pictorial History of Costume and republished in 1973 by Hastings House
- El-Guindi, Fadwa, Veil: Modesty, Privacy, and Resistance, Berg, 1999
- Mir-Hosseini, Ziba (1996) "Stretching The Limits: A Feminist Reading of the Shari'a in Post-Khomeini Iran," in Mai Yamani (ed.), Feminism and Islam: Legal and Literary Perspectives, pp. 285–319. New York: New York University Press