আমরা সবাই জানি, চাঁদ যেমন পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে তেমন পৃথিবীও সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। এইভাবে একটা সময় চাঁদ, সূর্য, পৃথিবী ঘুরতে ঘুরতে এক সরলরেখায় আসে।

চন্দ্রগ্রহণ, ডিসেম্বর ২১, ২০১০, চিত্রগ্রহণ করেছেন জিইয়ং চেন
পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ

যখন এই সরলরেখায় পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্যের মধ্যে আসে, তখন পৃথিবীর ছায়ার জন্য চাঁদে সূর্যের আলো পৌঁছায় না, ফলে চাঁদকে তখন কিছু সময়ের জন্য দেখা যায় না। অর্থাৎ পৃথিবী পৃষ্ঠের কোন দর্শকের কাছে চাঁদ আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে কিছু সময়ের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়। তখন একে সংক্ষেপে চন্দ্রগ্রহণ বলে।[১]

এই সময় পৃথিবী, সূর্যকে আংশিক ঢেকে নিলে পৃথিবীর জন্য চাঁদকে আংশিক দেখা যায় না একে আংশিক চন্দ্রগ্রহণ বলে। আর পৃথিবী সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে নিলে পৃথিবীর জন্য চাঁদকে পুরোপুরি দেখা যায় না একে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ বলে। চাঁদের তুলনায় পৃথিবীর ব্যাস অনেক বেশি হওয়ায়, পৃথিবীর ঐ ব্যাসের পথ অতিক্রম করতে চাঁদের অনেকটা সময় লাগে। এই জন্য সূর্যগ্রহনের স্থায়ীত্ত্ব কয়েক মিনিট হলেও চন্দ্রগ্রহণের স্থায়ীত্ত্ব ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।

লাল বর্ণের চাঁদ বা রক্তিম চাঁদসম্পাদনা

 
চন্দ্রগ্রহণে রক্তিম চাঁদ

পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ, পৃথিবীর মাঝখানে অবস্থান করে। তখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ায় প্রচ্ছায়া (Umbra) অবস্থানে (যেখানে চাঁদ পুরোপুরি পৃথিবীর গাঢ় ছায়ায় ঢেকে যায়) চাঁদের প্রায় অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তখনও সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা ও গ্যাস দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে চাঁদের উপর পড়ে। ফলে এটি পৃথিবী পৃষ্ঠে অবস্থিত কোনো ব্যক্তি চাঁদকে কিছুটা হলেও দেখতে পায়।

 
আলোর বর্ণালী - যা সাধারণ মানুষের চোখে দৃশ্যমান যোগ্য

ডান পাশের আলোর বর্ণালী অনুযায়ী, লাল বর্ণের আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য অন্যান্য বর্ণের আলোর তুলনায় বেশি হওয়ায় এটি সব থেকে কম বিচ্ছুরিত হয়। তাই ওই সময় সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে লাল বর্ণের আলো চাঁদের উপর পড়ে তাই চাঁদকে তখন লাল দেখায়।

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

বহিঃসংযোগসম্পাদনা