ঘোস্ট স্টোরিস (ম্যাগাজিন)

ম্যাগাজিন
(গোস্ট স্টোরিস (ম্যাগাজিন) থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ঘোস্ট স্টোরিস (ম্যাগাজিন)  একটি পাল্প ম্যাগাজিন যা ১৯২৬ সাল থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত ৬৪টি সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। এটি ছিল উইয়ারড টেলস পত্রিকার প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বী, যা ছিল মূলত ফ্যান্টাসি এবং অতিপ্রাকৃত গল্প রীতির মধ্যে প্রথম পত্রিকা । এটা ট্রু ষ্টোরি এবং ট্রু ডিটেকটিভ ষ্টোরিস  পত্রিকার একটি সহযোগী প্রকাশনা। পত্রিকাটি প্রথম দিকে ভৌতিক গল্পের দিকে আলোকপাত করত এবং স্টাফ লেখকদের লেখা অনেক গল্পই ছদ্মনামে "নিজস্ব অভিজ্ঞতার" স্টাইলে উপস্থাপন করা হত। গল্পগুলিকে সত্য মনে হওয়ার জন্য প্রায়ই ভুয়া ছবি জুড়ে দেয়া হত। ঘোস্ট স্টোরিসে নিজস্ব ও পুনঃ প্রকাশিত গল্প থাকত, যার মধ্যে ছিল রবার্ট ই হাওয়ার্ড , কার্ল জ্যাকবির এবং ফ্রাঙ্ক বেলন্যাপ লং এর লেখা গল্প। পুনঃ প্রকাশিত গল্পগুলোর মধ্যে ছিল আগাথা ক্রিস্টির "দ্য লাস্ট সেন্স" ("দ্য উইমেন হু স্টোল অ্যা গোষ্ট" শিরোনামে), এইচ জি ওয়েলস এর বিভিন্ন গল্প এবং চার্লস ডিকেন্স এর " দ্য সিগন্যালম্যান"। পত্রিকাটি প্রাথমিকভাবে সফল হলেও, ক্রমশ পাঠক হারাতে থাকে এবং ১৯৩০ সালে হেরল্ড হারসের কাছে বিক্রি হয়ে যায়। হারসে পত্রিকাটির পতন রোধ করতে পারেনি, এবং ১৯৩২ সালের শুরুতে ঘোস্ট স্টোরিস এর প্রকাশনার বন্ধ হয়ে যায়।

আগস্ট ১৯২৮ সংখ্যার প্রচ্ছদ

প্রকাশনার ইতিহাস ও বিষয় সম্পাদনা

ফ্যান্টাসি এবং অতিপ্রাকৃত কথাসাহিত্য বিংশ শতাব্দীর পূর্ব থেকেই বিভিন্ন জনপ্রিয় পত্রিকায় পাওয়া যেত, কিন্তু ১৯২৩ সালে উইয়ারড টেলস প্রকাশ হবার সময় এটিই ছিল এই ঘরানার প্রথম পত্রিকা। [১] ঘোস্ট স্টোরিস, ১৯২৬ সালের জুনে প্রথম প্রকাশিত হলে এটিই ছিল উইয়ারড টেলস এর প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বী। [১] প্রকাশক, বারনার ম্যাকডাফেন, সত্য স্বীকারোক্তি ধরনের পত্রিকা ট্রু স্টোরি প্রকাশ করতেন; ঘোস্ট স্টোরিস ও লেখার এই ধরন অনুসরন করত, যদিও গল্প গুলো স্টাফ লেখকদের দ্বারা লিখিত ছিল, তবুও গল্পগুলো প্রথম পুরুষের বর্ণনা স্টাইলে ছাপা হত। পত্রিকাটি প্রথমে ফটোগ্রাফ ব্যবহার করার জন্য ভাল মানের পিচ্ছিল কাগজে ছাপা হত, এবং অনেক গল্পে তাদের প্রধান চরিত্র হতে প্রাপ্ত ফোটোগ্রাফ সংযুক্ত থাকত। পত্রিকাটি জুলাই ১৯২৮ সাল হতে পাল্প ফরম্যাটে প্রকাশনা শুরু করলে তা রেখাচিত্র দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। ঘোস্ট স্টোরিস মাঝে মাঝে বাইরে লেখকদের লেখা প্রকাশ করত, যার মধ্যে ছিল রবার্ট ই হাওয়ার্ড এর জন টাভেরেল ছদ্মনামে "দ্য এপিরিয়েশন ইন দ্য প্রাইস রিং"। এবং কার্ল জ্যাকবির প্রথম প্রকাশিত গল্প, "দ্য হন্টেড রিং" , শেষ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল, যদিও তার প্রথম বিক্রি করা গল্প ছিল উইয়ারড টেলস এর জন্য- "মাইভ", যা ওই মাস পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। [২][৩]

এছাড়াও নিজস্ব লেখার বাইরে ঘোস্ট স্টোরিস অনেক গল্প  পুনঃপ্রকাশ করেছিল, তারমধ্যে ছিল, সুপরিচিত ভিক্টোরিয়ান ভৌতিক গল্প যেমন- চার্লস ডিকেন্স এর "দ্য সিগন্যালম্যান" এবং মিসেস ওলিফ্যান্ট এর  "ওপেন ডোর"। আগাথা ক্রিস্টির "দ্য লাস্ট সেন্স", নভেম্বর ১৯২৬ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল,"দ্য উইমেন হু স্টোল অ্যা ঘোষ্ট" শিরোনামে, এবং এইচ জি ওয়েলস এর ছয়টি গল্প পুনর্মুদ্রণ হয়েছিল যেমন "দ্য রেড রুম" এবং পাঠকদের কাছে ভৌতিক গল্প হিসেবে কম সাড়া জাগানো " পোলক এন্ড পোরহম্যান"। আর্থার কোনান ডয়েল এর "দ্য ক্যাপ্টেন অব দ্য পোলস্টার" এপ্রিল ১৯৩১ সংখ্যায় এবং মার্চ ১৯৩০ সালে নন ফিকশন "হুডিনি'স লাস্ট এস্কেপ" প্রকাশিত হয়।[৩] ম্যাকডাফেন , যুক্তরাজ্যের প্রকাশক ওয়াল্টার হাচিন্সন এর সাথে একটি চুক্তি করেন যাতে যুক্তরাজ্যে হাচিন্সন প্রকাশিত পাল্প  দ্য সভেরগিন ম্যাগাজিনমিষ্ট্রি-ষ্টোরি ম্যাগাজিন এর সাথে উপযুক্ত মানের লেখা বিনিময় করা হত, এর ফলে অনেক লেখাই আটলান্টিকের উভয় প্রান্তে প্রকাশিত হত।[২]

পত্রিকাটি প্রাথমিকভাবে সফল হলেও, শীঘ্রই এর বিক্রি কমতে থাকে এবং ১৯৩০ সালের মার্চে হেরল্ড হারসে, ম্যাকডাফেন এর কাছ থেকে পত্রিকাটি কিনে নেন এবং সম্পাদনা শুরু করেন। কিন্তু তিনি পত্রিকাটির সৌভাগ্য ফিরিয়ে আনতে পারেননি।[৩][৪] ১৯৩১ সালে প্রকাশনা দ্বিমাসিক করা হয়। এবং তিনটি সংখ্যা পরেই পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। পাঠকদের উদাসিনতার মুল কারণ ছিল, বিষয়বস্তুর সীমাবদ্ধতার কারণে কাহিনী গুলোর পরিনতি আগেই আনুমান করা যেত। শেষ সংখ্যাটির তারিখ ছিল ডিসেম্বর ১৯৩১/ জানুয়ারি ১৯৩২।[২]

গ্রন্থপঞ্জির বিবরন সম্পাদনা

জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টেম্বর অক্টবর নভেম্বর ডিসেম্বর
১৯২৬ ১/১ ১/২ ১/৩ ১/৪ ১/৫ ১/৬
১৯২৭ ২/১ ২/২ ২/৩ ২/৪ ২/৫ ২/৬ ৩/১ ৩/২ ৩/৩ ৩/৪ ৩/৫ ৩/৬
১৯২৮ ৪/১ ৪/২ ৪/৩ ৪/৪ ৪/৫ ৪/৬ ৫/১ ৫/২ ৫/৩ ৫/৪ ৫/৫ ৫/৬
১৯২৯ ৬/১ ৬/২ ৬/৩ ৬/৪ ৬/৫ ৬/৬ ৭/১ ৭/২ ৭/৩ ৭/৪ ৭/৫ ৭/৬
১৯৩০ ৮/১ ৮/২ ৮/৩ ৮/৪ ৮/৫ ৮/৬ ৯/১ ৯/২ ৯/৩ ৯/৪ ৯/৫ ৯/৬
১৯৩১ ১০/১ ১০/২ ১০/৩ ১০/৪ ১০/৫ ১০/৬ ১১/১ ১১/২ ১১/৩ ১১/৪
১৯৩২ ১১/৪
গোস্ট ষ্টোরিস এর ভলিউম/ ইস্যু সংখ্যা। সম্পাদনার ক্রম নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। সম্পাদকের ক্রম সংখ্যা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি
লক্ষ্যনীয়, সর্বশেষ ইস্যুর তারিখ ( ভলিউম ১১ নম্বর ৪ ) ডিসেম্বর ১৯৩১ / জানুয়ারি ১৯৩২ ছিল
বলে টেবিলের দুটি সারিতে সন্নিবেশিত হয়েছে.[৩]

ঘোস্ট স্টোরিস বারনার ম্যাকডাফেন কর্তৃক প্রকাশিত, কনস্ট্রাকটিভ পাবলিশিং কোং, ডুনেলিন, নিউ জার্সি কর্তৃক মুদ্রিত হত মার্চ ১৯৩০ সংখ্যা পর্যন্ত। তারপর এটি নিউ ইয়র্ক এর গুড ষ্টোরি ম্যাগাজিন কিনে নেয়, যা হ্যারল্ড হারসে দ্বারা পরিচালিত হত, যিনি ছিলেন দ্য থ্রিল বুক এর প্রথম দিকের সম্পাদক। ম্যাকডাফেন এর মালিকানাধীন সময়ে কনস্ট্রাকটিভ পাবলিশিং কোং এর সম্পাদনা পরিচালক ছিলেন ফুলটন অরসেলার; তার সহকারী বৃন্দের মধ্যে যারা পত্রিকাটিতে কাজ করতেন তারা হলেন হ্যারি এ. কেলার, ডব্লিউ এডলফি রবার্টস, জর্জ বন্ড, ড্যানিয়েল হুইলার এবং আর্থার বি হল্যান্ড (ক্রম অনুসারে) তারা প্রত্যেকেই বছর খানেক ধরে সম্পাদনা করেছিলেন, যদিও প্রকৃত সময় অজানা। হারসে দায়িত্ব নিলে, তার সহকারী ছিলেন স্টুয়ার্ট পামার।.[২]

পত্রিকাটি শুরু হয়েছিল আকর্ষণীয় বেডশিট ফরম্যাটে এবং জুলাই ১৯২৮ সংখ্যা হতে পাল্প ফরম্যাটে রূপান্তরিত হয়। এটি তার প্রকাশনার শেষ পর্যন্ত পাল্প ফরম্যাটেই ছিল শুধু মাত্র এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর ১৯২৯ সালের আটটি সংখ্যা ছিল বৃহৎ পাল্প ফরম্যাটের। প্রতিটি ভলিউমে ছয়টি ইস্যু থাকত শুধু মাত্র শেয ভলিউমে চারটি ইস্যু ছিল।[২] মূল্য ছিল ২৫ সেন্ট । এটা পাল্প ফরম্যাটে ১২৮ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হত এবং বেডশিট ও বৃহৎ পাল্প ফরম্যাটে ছিল ৯৬ পৃষ্ঠা।[৩]

দুটি পত্রিকা ছাড়া কোন সংকলনই সরাসরি ঘোস্ট স্টোরিস এর গল্প গুলো প্রকাশ করেনি : ট্রু টুয়ালাইট টেলস এবং প্রাইস ঘোস্ট স্টোরিস', দুটিই ছিল লীগস পাবলিকেশন্স এর প্রকাশনা, যা ছিল ম্যাকফাডেন-বারটেল এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান, যাদের কাছে মূল গল্পগুলির স্বত্বাধিকার ছিল।  ১৯৬৩ সালে প্রাইস ঘোস্ট স্টোরিস' একটি ইস্যু প্রকাশ করেছিল এবং ট্রু টুয়ালাইট টেলস ফল ১৯৬৩ এবং স্প্রিং ১৯৬৪ সালে দুটি ইস্যু প্রকাশ করেছিল। দুটিই ছিল ৯৬ পাতার বৃহৎ পাল্প ফরম্যাটে, মূল্য ছিল ৫০ সেন্ট। ট্রু টুয়ালাইট টেলস এর প্রথম ইস্যুটি সম্পাদনা করেছিলেন হেলেন গার্ডিনার, যিনি সম্ভবত প্রাইস ঘোস্ট স্টোরিস' ও সম্পাদনা করেছিলেন ; ট্রু টুয়ালাইট টেলস এর দ্বিতীয় ইস্যু সম্পাদনা করেছিলেন জন এম. উইলিয়ামস। দুটি পত্রিকারই আরো সংখ্যা থাকতে পারে তবে কোনটিরই সংখ্যাক্রম উল্ল্যেখ ছিল না।[৫][৬]

পাদটিকা সম্পাদনা

  1. Weinberg (1985), pp. 626−628.
  2. Ashley (1997), p. 406.
  3. Ashley (1985), pp. 315–317.
  4. Hersey (1937), p. 190.
  5. Ashley (1985b), pp. 482−483.
  6. Ashley (1985c), pp. 678−679.

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •