গোসাইকুন্ড
গোসাইকুন্ড নেপালের লাংটাং রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জে অবস্থিত একটি স্বাদুপানির হ্রদ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪,৩৮০ মিটার উচ্চতায় নেপালের রসুয়া জেলায় এই হ্রদের অবস্থান। গোসাইকুন্ড হ্রদের আকার ১৩.৮ হেক্টর (৩৪ একর)।[১] হ্রদটির আশপাশে অবস্থিত অন্যান্য জলাভূমি মিলিয়ে মোট আকার ১,০৩০ হেক্টর। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে এগুলো একত্রে রামসার স্থান হিসেবে ঘোষিত হয়।[২]
গোসাইকুন্ড | |
---|---|
গোসাইকুন্ড হ্রদ | |
অবস্থান | রসুয়া জেলা, নেপাল |
স্থানাঙ্ক | ২৮°০৫′ উত্তর ৮৫°২৫′ পূর্ব / ২৮.০৮৩° উত্তর ৮৫.৪১৭° পূর্বস্থানাঙ্ক: ২৮°০৫′ উত্তর ৮৫°২৫′ পূর্ব / ২৮.০৮৩° উত্তর ৮৫.৪১৭° পূর্ব |
প্রাথমিক অন্তর্প্রবাহ | ৩৫ l/s[রূপান্তর: অজানা একক] |
প্রাথমিক বহিঃপ্রবাহ | ৬০ l/s[রূপান্তর: অজানা একক] |
অববাহিকার দেশসমূহ | নেপাল |
পৃষ্ঠতল অঞ্চল | ১৩.৮ হেক্টর (৩৪ একর) |
পানির আয়তন | ১৪,৭২,০০০ মি৩ (৫,২০,০০,০০০ ঘনফুট) |
পৃষ্ঠতলীয় উচ্চতা | ৪,৩৮০ মি (১৪,৩৭০ ফু) |
গোসাইকুন্ড হ্রদ থেকে ত্রিশুলী নদের আরম্ভ হয়েছে। শীতকালে অক্টোবর থেকে জুন পর্যন্ত এই নদ হিমায়িত অবস্থায় থাকে। এই অঞ্চলে প্রায় ১০৮ টি ছোটবড় হ্রদ আছে। এই এলাকার লাউরিবিনা পাস বিশেষ পর্যটন আকর্ষণ, এবং এটি ৪,৬১০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত।
ধর্মীয় গুরুত্বসম্পাদনা
দীর্ঘকাল ধরে গোসাইকুন্ড হ্রদ হিন্দু ধর্মাবল্বীদের নিকট বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। হিন্দু পুরাতত্ত্ব অনুসারে গোসাইকুন্ড হ্রদে শিব ও পার্বতী বাস করেন। হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ভাগবত ও বিষ্ণু পুরাণে এবং রামায়ণ ও মহাভারতে সমুদ্র মন্থনের উল্লেখ রয়েছে, যার সাথে গোসাইকুন্ডের উৎপত্তি সরাসরি জড়িত। এই হ্রদের পানি পবিত্র বলে বিবেচনা করা হয়। গঙ্গাদশহারা এবং জনই পূর্ণিমা উৎসবের সময় ভারত ও নেপালের অগণিত হিন্দু ধর্মাবলম্বী গোসাইকুন্ড ভ্রমণে আসে। বিষ ভক্ষণের পরে শিব তার গলার ব্যাখ্যা নিরাময়ের জন্য পর্বতগাত্রে ত্রিশুল নিক্ষেপ করলে এই হ্রদের উৎপত্তি হয় বলে হিন্দু ধর্মে কথিত আছে।[৩]
পর্যটন ও ট্রেকিংসম্পাদনা
ধুঞ্চে-হেলাম্বু ট্রেকিং পথে গোসাইকুন্ড একটি বিশেষ জনপ্রিয় স্থান। গোসাইকুন্ড হয়ে লাঙটাঙ উপত্যকায় যাওয়া যায়। এই পথে পর্যটকদের পর্যাপ্ত রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা আছে। লাঙটাঙ উপত্যকার ধুঞ্চে গ্রাম থেকে গোসাইকুন্ড যাওয়ার ট্রেক শুরু হয়। এছাড়া অনেক পর্যটক কাঠমান্ডু উপত্যকার সুন্দরিজল স্থান থেকেও যাত্রা শুরু করে। ধুঞ্চে থেকে আরম্ভ করলে প্রথম দিনে পর্যটকরা চন্দন বারি নামক স্থানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ স্থানটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,২০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এরপরে লাউরিবিনায়াক স্থানে যেতে হয়, যা ৩,৭০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। উচ্চতাজনিত অসুস্থতা এড়ানোড় জন্য পর্যটকরা এ পর্যায়ে দুই-একদিনের বিরতি নিয়ে গোসাইকুন্ডের উদ্দেশ্যে উপরের দিকে যাত্রা করে। লাউরিবিনায়াক থেকে লাঙটাঙ এবং গনেশ হিমবাহের সুন্দর দৃশ্য দেখা যায়। গোসাইকুন্ড থেকে সুন্দরিজল পর্যন্ত পৌছাতে প্রায় চারদিন সময় লাগে। এ পথে ৪,৬১০ মিটার উচ্চতার লাউরিবিনা লা পাস অতিক্রম করতে হয়। এরপরে ফেদি ও ঘোপ্তি হয়ে নিচে নামতে হয়। নিচে নামার পথে বিভিন্ন ছোট গ্রামের মধ্যে দিয়ে ফিরতে হয়।
গ্যালারিসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ Bhuju, U. R., Shakya, P. R., Basnet, T. B., Shrestha, S. (2007). Nepal Biodiversity Resource Book. Protected Areas, Ramsar Sites, and World Heritage Sites. International Centre for Integrated Mountain Development, Ministry of Environment, Science and Technology, in cooperation with United Nations Environment Programme, Regional Office for Asia and the Pacific. Kathmandu, Nepal. আইএসবিএন ৯৭৮-৯২-৯১১৫-০৩৩-৫
- ↑ Bhandari, B. B. (2009). Wise use of Wetlands in Nepal Banko Janakari, Special Issue February 2009: 10–17.
- ↑ "Ministry of Culture, Tourism and Civil Aviation - Government of Nepal"। www.tourism.gov.np। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৭-৩১।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
উইকিমিডিয়া কমন্সে Gosainkunda সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |