গোরকঘাটা জমিদার বাড়ি

মূলত কোম্পানী শাসনামলেই মহেশখালী দ্বীপটি ইংরেজদের নজরে পড়ে। সাগরের মাঝখানে অবস্থিত মনোরম দ্বীপটি, ১৭৭৯ খ্রিষ্টাব্দে রবার্ট ওয়ারলেজ নামক জনৈক ইংরেজ কর্মচারী, বন্দোবস্তি নেবার জন্য আবেদন করলে ১৭৮২ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামে, দ্বীপটি বন্দোবস্তি সংক্রান্ত দলিল সম্পাদিত হয়। ১৭৮২ সালের ২০ নভেম্বর রবার্ট ওয়ারলেজ চট্টগ্রামের ইংরেজ কালেক্টর চার্লস ক্রাফটস-এর কাছে ২০,০০০ টাকার বিনিময়ে দ্বীপটি হস্তান্তর করেন। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে দুরত্ব আর যোগাযোগের অসুবিধার কারণে জনাব ক্রাফটস স্থানীয় দেওয়ান কালিচরণ কানুনগোর কাছে ৪০,০০০ টাকার বিনিময়ে দ্বীপটির মালিকানা হস্তান্তর করেন। কালিচরণ কানুনগো নিঃসন্তান ছিলেন। চণ্ডিচরণ নামক এক ছেলেকে তিনি দত্তক পুত্ররূপে গ্রহণ করেন। ১৭৯০ খ্রিষ্টাব্দে কালিচরণ কানুনগোর মৃত্যু হলে তার স্ত্রী প্রভাবতী মহেশখালীর মালিক হন। প্রভাবতির জীবদ্দশায় চণ্ডিচরণ শরৎচন্দ্র নামক এক পুত্রসন্তান রেখে মৃত্যুবরণ করলে ১৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় শরৎচন্দ্র অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকায় প্রভাবতীর নামে বন্দোবস্ত হয়। পরে শরৎচন্দ্র মহেশখালী দ্বীপের প্রজাবৎসল জমিদার হন। তিনিই জনসাধারণের পানীয় জলের অভাব মোচনের জন্য বিশাল একটি দীঘি খনন করেন (যা বর্তমানে উপজেলা প্রশাসনের সম্মুখে অবস্থিত)। পাকিস্তান সৃষ্টির পর ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে নুরুল আমিন সরকার কর্তৃক জমিদারী প্রথার বিলোপ ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত শ্রীযুক্ত বাবু অজিত কুমার রায় বাহাদুর চৌধুরী মহেশখালী দ্বীপের জমিদার ছিলেন। বাবুদের মূল বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া গ্রামে। অজিত কুমার রায় বাহাদুর প্রজাবৎসল ও শিক্ষানুরাগী ছিলেন।