গাজি বিন ফয়সাল (আরবি : غازي ابن فيصل) (২১ মার্চ ১৯১২ – ৪ এপ্রিল ১৯৩৯) ছিলেন ইরাক রাজতন্ত্রের বাদশাহ। ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত তিনি ক্ষমতা ছিলেন। ১৯২০ সালে স্বল্প সময়ের জন্য তিনি সিরিয়া আরব রাজতন্ত্রের যুবরাজ হিসেবে ছিলেন। ইসলামের পবিত্র শহর মক্কায় তার জন্ম হয়। তিনি ইরাকের বাদশাহ প্রথম ফয়সালের একমাত্র পুত্র[]

গাজি
ইরাকের বাদশাহ
রাজত্ব৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩ – ৪ এপ্রিল ১৯৩৯
পূর্বসূরিপ্রথম ফয়সাল
উত্তরসূরিদ্বিতীয় ফয়সাল
জন্ম(১৯১০-০৩-১২)১২ মার্চ ১৯১০
মক্কা, উসমানীয় সাম্রাজ্য
মৃত্যু৪ এপ্রিল ১৯৩৯(1939-04-04) (বয়স ২৭)
বাগদাদ, ইরাক
বংশধরদ্বিতীয় ফয়সাল
পূর্ণ নাম
গাজি বিন ফয়সাল
প্রাসাদআল-হাশিম
পিতাপ্রথম ফয়সাল
মাতাহুজাইমা বিনতে নাসের
ধর্মসুন্নি ইসলাম []

প্রাথমিক জীবন

সম্পাদনা

গাজি ছিলেন ফয়সালের একমাত্র পুত্র। তার তার বাবা বিভিন্ন স্থানে লড়াইরত থাকায় তার দাদা হুসাইন বিন আলী তার প্রতিপালন করেন। তার পিতার তুলনায় তিনি লাজুক ও অনভিজ্ঞ ছিলেন। ১৯২৪ সালে তিনি অন্যান্য হাশেমিদের সাথে হেজাজ থেকে জর্ডান চলে আসেন। একই বছর তিনি বাগদাদ চলে আসেন এবং যুবরাজ হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। ১৬ বছর বয়সে আমেরিকান অভিযাত্রী রিচার্ড হেলিবার্টন ও পাইলট মোয়ে স্টিফেনের সাথে গাজি তার জীবনের প্রথম বিমান ভ্রমণ করেন। প্লেনে করে তারা প্রাচীন ব্যাবিলনের ধ্বংসাবশেষ ও অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করেন। প্লেনটি তার স্কুল মাঠের অবতরণ করে যাতে তার সহপাঠিরা তাকে প্লেনে দেখতে পায়।

ইরাকের বাদশাহ

সম্পাদনা

১৯৩৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তার পিতা প্রথম ফয়সাল মৃত্যুবরণ করেন। এরপর তিনি প্রথম গাজি নামে সিংহাসনে আরোহণ করেন। একই তিনি ইরাকি রাজকীয় নৌবাহিনীর অ্যাডমিরাল অব দ্য ফ্লিট, ইরাকি রাজকীয় সেনাবাহিনীর ফিল্ড মার্শাল ও ইরাকি রাজকীয় বিমানবাহিনীর মার্শাল হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি প্যান আরব জাতীয়তাবাদের একজন সমর্থক ছিলেন। ইরাকে ব্রিটিশ স্বার্থের প্রতি তার বিরূপ মনোভাব ছিল।[] তার শাসনমালে বেসামরিক ব্যক্তিদের সাথে সামরিক বাহিনীর দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। জেনারেল বকর সিদ্দিকির অভ্যুত্থানকে তিনি সমর্থন করেন। এ অভ্যুত্থানের ফলে বেসামরিক সরকারের বদলে সামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। আরব বিশ্বে এটি প্রথম সামরিক অভ্যুত্থান ছিল। নাৎসি জার্মানির প্রতি সহানুভূতি ও কুয়েতকে ইরাকের সাথে একীভূত করার জন্য তার কাছে গুজব ছড়ানো হয়। এ উদ্দেশ্যে তিনি আল-জুহর প্রাসাদে নিজস্ব রেডিও স্টেশন স্থাপন করেন। এখান থেকে তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি প্রচারিত হত।[]

১৯৩৯ সালে একটি স্পোর্টস কার চালানোর সময় রহস্যজনক এক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। কারো কারো মতে নুরি আস-সাইদের আদেশে তাকে হত্যা করা হয়।

তার একমাত্র পুত্র ফয়সাল তার উত্তরাধিকারী হিসেবে ক্ষমতায় আরোহণ করেন। ফয়সাল অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আবদুল্লাহ বিন আলি ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত তার অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বিয়ে ও সন্তান

সম্পাদনা
 
রাণী আলিয়া বিনতে আলি

১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি গাজির সাথে আলী বিন হুসাইনের কন্যা প্রিন্সেস আলিয়া বিনতে আলির বিয়ে হয়। তাদের একজন পুত্র ছিল :

বিমান ভ্রমণ

সম্পাদনা

তরুণ যুবরাজ গাজির বিমান ভ্রমণের বিবরণ রিচার্ড হেলিবার্টনের দ্য ফ্লাইং কার্পেট বইয়ে পাওয়া যায়।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "IRAQ – Resurgence In The Shiite World – Part 8 – Jordan & The Hashemite Factors"APS Diplomat Redrawing the Islamic Map। ২০০৫। ২০১২-০৭-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১৯ 
  2. "The Hashemite Royal Family"। Jordanian Government। ৬ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১৩ 
  3. Tripp, Charles. A History of Iraq. Cambridge University Press: Cambridge, 2000, p.81.
  4. Tripp, p.98.

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
  • "Young King."Time Magazine। ১৭ এপ্রিল ১৯৩৯। ২২ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০০৯ 
  • "Coins of Ghazi I."। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০০৯ 
পূর্বসূরী
প্রথম ফয়সাল
ইরাকের বাদশাহ
১৯৩৩–১৯৩৯
উত্তরসূরী
দ্বিতীয় ফয়সাল