গাঁজন
গাঁজন বা ফারমেন্টেশন (Fermentation) বলতে সাধারণ মানুষ অ্যালকোহল উৎপাদন বোঝে। বিভিন্ন শস্য ও ফল হতে গাঁজন প্রক্রিয়ায় বিয়ার ও মদ তৈরি করা হয়।
শব্দের উৎপত্তি
সম্পাদনাইংরেজি ফার্মেন্টেশন শব্দটি ল্যাটিন ফার্ভার (Fervere) শব্দ থেকে এসেছে। ফার্ভার অর্থ হল ফুটানো। ফল বা শস্যের নির্যাসের (extract) উপর ইস্ট এর জৈব-রাসায়নিক ক্রিয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইড( ) উৎপন্ন হয়। যখন এই কার্বন ডাই অক্সাইড বুদ্বুদ্ আকারে উপরে উঠে, তখন একে ফুটানো পানির মত মনে হয়।
সংজ্ঞা
সম্পাদনাপ্রাণরসায়নবিদ (Biochemist) ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল মাইক্রোবায়োলজিস্টদের কাছে ফারমেন্টেশনের অর্থ ভিন্ন। প্রাণরসায়নবিদের কাছে ফারমেন্টেশন হল এক প্রকার জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়া যেখানে জৈব যৌগ ইলেক্ট্রন (electon) গ্রহীতা বা ইলেক্ট্রন দাতা হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল মাইক্রোবায়োলজিস্টদের কাছে ফারমেন্টেশন হল অণুজীবের ব্যাপক আবাদের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদন করা। প্রাণরসায়নবিদের সংজ্ঞা মতে গাজন শুধু মাত্র অবাত (Anaerobic respiration) শ্বসন প্রক্রিয়া। অপরদিকে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মাইক্রোবায়োলজিস্টরা অবাত ও সবাত (Aerobic respiration) উভয় ধরনের প্রক্রিয়াকে গাজন হিসেবে ধরা হয়।
ফারমেন্টেশনের ব্যাপ্তি
সম্পাদনাশিল্প ক্ষেত্রে পাঁচ প্রকার গাজন গুরুত্বপূর্ণ-
- যেক্ষেত্রে স্বয়ং অণুজীব (Biomass) পণ্য হিসেবে তৈরি হয়।
- যেক্ষেত্রে অণুজীবের উৎসেচক (Enzyme) তৈরি হয়।
- যেক্ষেত্রে অণুজীবের দ্বারা উৎপন্ন কোন যৌগ (Microbial Metabolite)তৈরি হয়।
- যেক্ষেত্রে রিকম্বিনেন্ট (Recombinant) পণ্য উৎপন্ন হয়।
- যেক্ষেত্রে ফারমেন্টারে (fermenter) যোগ করা কোন যৌগের পরিবর্তন সাধন (Modify) হয়। এই প্রক্রিয়াকে (Microbial Transformation) বলা হয়।