গঙ্গেশোপাধ্যায়
গঙ্গেশোপাধ্যায় (জন্ম: দ্বাদশ শতকের শেষভাগ বা মতান্তরে ১৩শ-১৪শ শতক) নব্যন্যায়ের প্রবর্তক ছিলেন। তার বংশ পরিচয় নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। কারও মতে, তিনি ছিলেন মৈথিলি ব্রাহ্মণ এবং বর্তমান বিহারের দ্বারভাঙ্গা থেকে বারো মাইল দক্ষিণপূর্বে কমলা নদীর তীরে কারিয়ন গ্রামে তার জন্ম। দ্বিতীয় মতে, তিনি ছিলেন সামাজিক মর্যাদায় নিকৃষ্ট শ্রেণির ব্রাহ্মণ এবং কাশ্যপগোত্রীয় ছাদন বংশে তার জন্ম হয়। তার পুত্র বর্ধমানের উল্লেখ অনুসারে তার প্রকৃত নাম গঙ্গেশ্বর।[১]
গঙ্গেশোপাধ্যায় | |
---|---|
জন্ম | দ্বাদশ শতকের শেষভাগ বা মতান্তরে ১৩শ-১৪শ শতক বঙ্গ বা মিথিলা |
পেশা | ন্যায়শাস্ত্র বিশারদ |
ভাষা | বাংলা,সংস্কৃত |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি |
|
প্রথম জীবন
সম্পাদনাপ্রথম জীবনে শিক্ষিত না হলেও পরবর্তি সময়ে শ্মশানে কালীর উপাসনা করে মহাপন্ডিত হন। আস্তিক-নাস্তিক উভয় শাস্ত্রে তার গভীর পান্ডিত্য ছিল। তার লিখিত একমাত্র গ্রন্থ তত্ত্বচিন্তামণি তাকে অমরত্ব দান করেছে।[১]
কর্মজীবন ও অবদান
সম্পাদনাতার তত্বচিন্তামনি বইটি বিশ্বের দার্শনিক সমাজেও সমাদৃত ও আলোচিত। সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণমূলক অভিনব বিচারপ্রণালী এবং পরিভাষা উদ্ভাবন করে তিনি নতুন যুগের সূচনা করেন। এর প্রভাব অপরিসীম; পরবর্তীকালে অন্যান্য শাস্ত্রের আলোচনায়ও এ পদ্ধতি অনুসৃত হয়।[১]
তত্বচিন্তামনি
সম্পাদনাগঙ্গেশ মূলত গৌতম ন্যায়সূত্রের প্রমাণকান্ডেরই আলোচনা করেছেন। ন্যায়সূত্র অনুযায়ী প্রমাণ চার প্রকার,
- প্রত্যক্ষ
- অনুমান
- উপমান
- শব্দ
এই চারটি প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে তিনি চার খণ্ডে তত্ত্বচিন্তামণি (প্রত্যক্ষচিন্তামণি, অনুমানচিন্তামণি, উপমানচিন্তামণি ও শব্দচিন্তামণি) রচনা করেন। সতেরো শতক থেকে উনিশ শতক পর্যন্ত এ তত্ত্বচিন্তামণির ব্যাখ্যা রচনা করে নব্যন্যায়ের পরম্পরাকে যাঁরা ক্রমশ সমৃদ্ধতর করেছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন পুত্র বর্ধমান, পক্ষধর মিশ্র, রঘুনাথ শিরোমণি, মথুরানাথ তর্কবাগীশ, বাসুদেব সার্বভৌম, জগদীশ তর্কালঙ্কার, গদাধর ভট্টাচার্য প্রমুখ। এঁদের মাধ্যমেই নবদ্বীপে ন্যায়দর্শনের প্রভূত চর্চা হয় এবং সর্বভারতে বাংলা এক বিশেষ পরিচিতি লাভ করে।[১]
বহির্পঠন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ "বিশ্বকোষ পঞ্চম খণ্ড"। bn.m.wikisource.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-১৫।