খোড়াগাছ বন বিট
এই নিবন্ধের যাচাইযোগ্যতার জন্য অতিরিক্ত তথ্যসূত্র প্রয়োজন। |
খোড়াগাছ বনবিট ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত মিঠাপুকুর বন রেঞ্জ এর আওতাধীন একটি সংরক্ষিত বন বিট। এটি মূলত একটি শালবন যেখানে শাল গাছ ছাড়াও বেত, বাঁশ ও বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ দেখা যায়। খোড়াগাছ বনবিট একজন বিট কর্মকর্তা দ্বারা মিঠাপুকুর বন রেঞ্জ এর রেঞ্জ কর্মকর্তার মাধ্যমে পরিচালিত।[১]
খোড়াগাছ বন বিট | |
---|---|
অবস্থান | খোড়াগাছ, মিঠাপুকুর, রংপুর, বাংলাদেশ |
নিকটবর্তী শহর | মিঠাপুকুর উপজেলা |
স্থানাঙ্ক | ২৫°৩৯′৫৬″ উত্তর ৮৯°৮′৫৫″ পূর্ব / ২৫.৬৬৫৫৬° উত্তর ৮৯.১৪৮৬১° পূর্ব |
আয়তন | ২৪৭.৬৯ একর (১০০.২৪ হেক্টর) |
স্থাপিত | ১৯৫৬ |
কর্তৃপক্ষ | মিঠাপুকুর বন রেঞ্জ, সামাজিক বন বিভাগ রংপুর, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় |
ইতিহাস
সম্পাদনাপ্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই উত্তরবঙ্গে চিরসবুজ বনাঞ্চল তথা শালবনের প্রাচুর্য ছিল। অব্যাহত কৃষি কর্মের ফলে ক্রমান্বয়ে বনভূমি সংকীর্ণ হতে থাকে। এমতাবস্থায় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ১৯৫৬ সালে রংপুর অঞ্চলের শালবন গুলোকে একত্রে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে। তৎকালীন রংপুরের খোড়াগাছ অঞ্চলের বৃহৎ প্রাকৃতিক শালবন একজন বিট কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ও তিনজন বন প্রহরীর দায়িত্বে মিঠাপুকুর প্রটেক্টেড এরিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই সংরক্ষিত অঞ্চল বৃহত্তর রংপুর-রাজশাহী সামাজিক বন বিভাগ এর আয়ত্তে আসে। পরবর্তীতে রাজশাহী সামাজিক বন বিভাগ ভেঙে বগুড়া, পাবনা ও রাজশাহীতে পৃথক তিনটি সামাজিক বন বিভাগের আত্মপ্রকাশ ঘটে। অন্যদিকে রংপুর ও দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ নামে দুটি নতুন বন বিভাগ তৈরি হলে খোড়াগাছ বন বিট, মিঠাপুকুর রেঞ্জের অধীনে রংপুর সামাজিক বন বিভাগের আওতাধীন হয়।
অবস্থান
সম্পাদনাখোড়াগাছ বন বিট বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলায় খোড়াগাছ ইউনিয়নে অবস্থিত। এটি শ্যামপুর রেলওয়ে স্টেশন হতে ৩.১ কিলোমিটার দূরত্বে শ্যামপুর-নাগেরহাট সড়কের পাশে রুকনীগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত। খোড়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদ হতে এই বনের দূরত্ব ৩.৯ কিলোমিটার।
জীববৈচিত্র্য
সম্পাদনাখোড়াগাছ বন বিট অত্যন্ত ঘন শালবন আচ্ছাদিত হওয়ায় এখানে বিচিত্র প্রজাতির পাখি বিচরণ করে। এরমধ্যে বউ কথা কও, শ্যান কোকিল, লক্ষ্মী পেঁচা, নীলগলা বসন্ত, ছোট বাউরি, সাদা বুলবুলি ও কাঠশালিক অন্যতম। এখানে কাঠবিড়ালি, বন্য শেয়াল ও বনবিড়াল স্বল্প পরিমাণে দেখা যায়। এক সময়ে এই বনে গন্ধগোকুল, খরগোশ ও মেছোবাঘ দেখা গেলেও বর্তমানে তা বিলুপ্ত। খোড়াগাছ বলে শালবনের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির বেত গাছ দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া এখানে কৃত্রিমভাবে প্রচুর পরিমাণে আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাস গাছ রোপন করা হয়েছে।
বর্তমান অবস্থা
সম্পাদনা১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এ বনের আয়তন ছিল ২৪৭.৬৯ একর যা বন বিভাগের দলিলে এখনো বিদ্যমান। তবে বাস্তবিক অর্থে অব্যাহত দখলের ফলে বন ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে বর্তমানে কেবল ৪০ একর অবশিষ্ট আছে। দখলকৃত জমি উদ্ধারে বন বিভাগের কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময় একাধিক মামলা করেছেন যা প্রায় ৩০ বছর ধরে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন মামলার দীর্ঘসূত্রিতা, বন বিভাগের অবহেলা এবং দখলকৃত জমি পুনরুদ্ধার এর কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় এই বনের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন। বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে গাছ চুরি ও বনভূমির জমি বেহাত হওয়ার একাধিক ঘটনা বিভিন্ন সময় জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া বিট কর্মকর্তার উপযুক্ত অফিস না থাকা এবং একজন বিট কর্মকর্তা দ্বারা একাধিক বনবিট পরিচালনাসহ ব্যাপক অব্যবস্থাপনা এই বনের টিকে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "রংপুরের একমাত্র ইকোপার্ক গরু-ছাগলের অভয়ারণ্য"। www.shomoyeralo.com। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০২২।
- ↑ "রংপুরে বন বিভাগের মদতেই গাছ চুরির মহোৎসব"। banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০২২।