খেজুরের রস

খেজুর গাছ থেকে সংগ্রহকৃত রস
(খেজুর গুড় থেকে পুনর্নির্দেশিত)

খেজুরের রস বা খেজুর রস হল খেজুর গাছ থেকে সংগ্রহকৃত রস। সাধারণত মাটির হাড়ি দিয়ে খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয়। তবে বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে মাটির বদলে প্লাস্টিক দিয়ে সংগ্রহ করা হয়।[] খেজুরের রস দিয়ে ফিরনি, পায়েস এবং খেজুরের রস থেকে উৎপন্ন গুড় দিয়ে ভাঁপা পিঠা এবং গাঢ় রস দিয়ে তৈরি করা হয় মুড়ি, চিড়া, খই ও চিতই পিঠাসহ হরেক রকম পিঠাপুলি।[] খেজুরের রস পান করলে শরীরের দুর্বলতা দূর হয়। এতে উচ্চ প্রাকৃতিক চিনি এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে খেজুরের রস পান করলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হয়।[]

খেজুরের রস সংগ্রহ করা হচ্ছে

রস সংগ্রহ

সম্পাদনা
 
খেঁজুরের রসের সাথে মুড়ি

খেজুর শুষ্ক ও মরু অঞ্চলের উদ্ভিদ হওয়ায় গঙ্গার নিম্ন অববাহিকার খেজুর গাছে যথেষ্ট শাঁসযুক্ত অর্থাৎ উৎকৃষ্ট খেজুর হয় না। তাই এটি খাদ্য হিসেবে খুব একটা ব্যবহার হয় না। তবে এই গাছের রস আকর্ষণীয়।

গাছের বয়স

সম্পাদনা

সাধারণত চার বছর বয়সের পর থেকে খেজুর গাছের রস আহরণ শুরু হয় যখন গাছে ১২-১৫টি পাতা থাকে।[] খেজুরের চিনি, গুণমান ইত্যাদির পরিমাণ মাটি, জলবায়ু এবং খেজুরের প্রকারের উপর নির্ভর করে। পুরুষ গাছ স্ত্রী গাছের চেয়ে বেশি রস দেয় এবং রসও তুলনায় বেশি মিষ্টি হয়।

রস সংগ্রহের অনুকূল সময় ও আবহাওয়া

সম্পাদনা

আশ্বিন মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহ (অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি) পর্যন্ত রস সংগ্রহ করা হয়। ঠান্ডা আবহাওয়া, মেঘলা আকাশ ও কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল পর্যাপ্ত রসের জন্য উপযোগী। এই সময়ে প্রাপ্ত রসের স্বাদও ভালো হয়। পৌষ-মাঘ মাসে (ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি) সবচেয়ে বেশি রস পাওয়া যায়।[] তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে রসের পরিমাণ ও মান কমতে থাকে।

সংগ্রহ

সম্পাদনা

খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে খেজুর গাছের মাথার অংশকে ভালো করে পরিষ্কার করা হয়। এরপর পরিষ্কার সাদা অংশ কেটে বিশেষ কায়দায় ছোট-বড় কলসিতে রস সংগ্রহ করা হয়।[]

শীতের মৌসুমে প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে গাছের মাথার সাদা অংশ পরিষ্কার করে গাছে হাড়ি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সকাল হলে সেই হাড়ি নামিয়ে আনা হয়। রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে সাধারণত বিক্রি করে দেওয়া হয়।[] তবে গাছিরা যে হাড়ি ঝুলিয়ে রাখে তাতে অনেক সময় কীট পতঙ্গ প্রবেশ করে অস্বাস্থ্যকর রসে পরিণত করতে পারে।[]

খেজুর রস থেকে তৈরি জনপ্রিয় খাদ্য

সম্পাদনা

খেজুরের রস থেকে তরিই কিছু বিখ্যাত খাবার হল

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "খেজুর রস সংগ্রহে প্লাস্টিক যুগের অশনি সংকেত!"banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-২৭ 
  2. "হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের রস"wwww.jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-২৭ 
  3. "খেজুর রসের ভালোমন্দ"যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-২৭ 
  4. "দেশি খেজুরের চাষ সম্প্রসারণ"ais.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-২৭ 
  5. "খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা"জাগো নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০২১ 
  6. "খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতি গাছিদের"বাংলা টিবিউন। ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০২১ 
  7. "খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা"বার্তা ২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-২৭