খার্চি (ইংরেজি: Kharchi) বা খার্চি পূজা বা খার্চি মেলা ও উৎসব হল চৌদ্দ দেবতার পূজা। প্রাথমিক ভাবে এটা ত্রিপুরীদের উৎসব হলেও বর্তমানে সব ধর্মের মানুষ এতে সমান ভাবে অংশগ্রহণ করে। এটি সাধারণত ইংরেজি মাসের জুলাই-অগাষ্ট এর দিকে হয়ে থাকে এই পূজা

ইতিহাস সম্পাদনা

খার্চি শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল, খারচি। খার কথার অর্থ হল পাপ এবং চি কথার অর্থ হল পরিষ্কার বা মোচন করা। এক কথায় পাপ মোচন করা। ৩০০০ বছর আগে এই পূজার প্রচলন হয়েছিল এবং বর্তমানেও চলছে।[১] এই পূজা মুলত ত্রিপুরার রাজ পরিবার এবং ত্রিপুরী রাজ চন্তাই দের পৃষ্ঠপোষকতায় চলে আসছে। চন্তাই কথার অর্থ হচ্ছে পূজারী বা পুরোহিত।রাজ চন্তাইরা বংশ পরম্পরায় নির্বাচিত হয়ে আসে।[১]

দেবদেবী ও পূজা সম্পাদনা

বিগ্রহ পরিচয়- শ্রীশ্রী চতুর্দশ দেবতা। চৌদ্দ দেবতা মন্দিরের অষ্ট ধাতুর নির্মিত এই দেবদেবীরা হলেন হর (শঙ্কর), উমা (শঙ্করী), হরি (বিষ্ণু), মা (লক্ষ্মী), বাণী (সরস্বতী), কুমার (কার্ত্তিকেয়), গণপা (গণেশ), বিধি (ব্রহ্মা), ক্ষ্বা (পৃথিবী), অব্ধি (সমুদ্র), ভাগীরথী (গঙ্গা), শিখি (অগ্নি), কামদেব (প্রদ্যুম্ন) ও হিমাদ্রি (হিমালয় পর্ব্বত)। হর, উমা, হরি, এই তিন দেবদেবী নিত্য পূজিত হন। কিন্তু আষাঢ় মাসের শুক্লাষ্টমীতে একত্রে পূজিত হন চৌদ্দ দেবতা। ৭দিন ব্যাপী চলে এই পূজা ও জাতি উপজাতির এই মহান মিলন মেলা। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লঅষ্টমী তিথিতে পুজো শুরু হয়। ওই দিন ভোরে ১৪টি দেবতাকে হাওড়া নদীতে স্নান করিয়ে মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। চতুর্দশ দেবতার কোন অবয়ব নেই। শুধুমাত্র তাঁদের মুখ পুজো করা হয়। তাঁরা হলেন— হর বা শিব প্রধান দেবতা, উমা বা দুর্গা, হরি, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কুমার বা কার্তিক, গণেশ, ব্রহ্মা, পৃথিবী, সমুদ্র, গঙ্গা, অগ্নি, কামদেব, হিমাদ্রি। পুজোর পুরোহিতকে চন্তাই বলা হয়। চন্তাইকে রাজার প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য করা হয়।

আরও দেখুন সম্পাদনা

ত্রিপুরা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

আনন্দবাজার পত্রিকা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা