খসড়া:শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর


আমার নিবন্ধটির বিষয়বস্তু হচ্ছে...

শায়েখ আব্দুল্লাহ আল-মুনীর ১৯৮৭ সালের জানুয়ারী মাসে চুয়াডাঙ্গা জেলার তৎকালীন দামুড়হুদা থানার দর্শনা পৌরসভার অন্তর্গত ছয়ঘরিয়া গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আলাউদ্দিন আল-আজাদ এবং মাতার নাম মোছাম্মৎ মনোয়ারা খাতুন। শায়েখ পরিবারের বড় সন্তান।

সংসার জীবনে শায়েখ দুইজন কন্যা সন্তান এবং একজন পুত্র সন্তানের জনক।

শিক্ষা জীবনে সাধারণ শিক্ষার মাধ্যমিক স্তর অতিক্রম করেন| তবে তার পূর্বেই শখের বশে আরবী ভাষার উপর প্রাথমিক দক্ষতা হাসিল করেন। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়াকালীন সময়ে আরবী ও দ্বীনি শিক্ষার প্রতি অধিক আগ্রহের কারণে সেদিকে পরিপূর্ণ ভাবে আত্মনিয়োগ করেন ও ব্যাপক দক্ষতা অর্জন করেন। ফলে, শায়েখের পক্ষে সাধারণ শিক্ষা সফলভাবে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে জীবনের দীর্ঘ সময় ব্যায় করে সালফে-সালেহীনদের কিতাবাদি থেকে উসুল, ফিকহ, তাফসীর, হাদীস ও মারেফাত সহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি সালফে-সালেহীনদের মত ও পথকে ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিসরে বাস্তবায়ন ও তার প্রচার-প্রসারের কাজে নিয়োজিত আছেন।

সালাফদের অনুসরণেই তিনি অপ্রাতিষ্ঠানিক এবং অবৈতনিকভাবে আরবী ভাষা, উসুলে ফিকহ, ফিকহ, তাফসীর ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে দ্বীনি শিক্ষা দিয়ে বেশ কিছু সুযোগ্য ছাত্র গড়ে তুলেছেন| তাদের মধ্যে মুয়াল্লিম হাফেজ আব্দুল হাই সিদ্দিকী, মুদাররিস  হাফেজ রেজাউল করিম রাজু, মুদাররিস মুরশিদুল হাসান ও মুদাররিস মুহাম্মাদ রোকনুজ্জামান প্রমুখ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তারাও বিভিন্ন এলাকায় নিজ নিজ ভক্তবৃন্দ ও ছাত্রদের মাঝে অবৈতনিকভাবে দ্বীনি শিক্ষা প্রদানের কাজে নিয়োজিত আছেন|

শায়েখ, সম্প্রতি ২০২২ সালে সালাফদের অনুসরণে প্রচলিত যাবতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার বিপরীতে এমন অপ্রাতিষ্ঠানিক ও অবৈতনিক শিক্ষাকে শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে “দারসী নিজাম শিক্ষা ব্যবস্থা” নামে একটি শিক্ষা পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। যার মূলনীতি হলো “শিক্ষাকে উপার্জনের হাতিয়ার নয় বরং মানুষ গড়ার কারিগরে পরিণত করা”। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন সাহাবা ও তাবেয়ীদের মতোই যে কোন বয়সে দ্বীনমুখি হওয়া মানুষের কর্মের পাশাপাশি দারস গ্রহণের মাধ্যমে দ্বীনি শিক্ষা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করা| তার জন্য দরকার অসংখ্য কিতাবাদির সমুদ্রে ছাত্রদের নিক্ষেপ করার বদলে দক্ষ শিক্ষকেরা সেসব কিতাবাদি থেকে মুক্তা সংগ্রহ করে সংক্ষিপ্ত আলোচনা বা লেখনীর মাধ্যমে ছাত্রের হাতে তা তুলে দেওয়া। যাতে কর্ম ও বয়সের বাধা মোকাবেলা করে দ্বীনি জ্ঞানে প্রয়োজনীয় পরিমাণ পান্ডিত্ব হাসিল করতে তাদের বেগ পেতে না হয়|

বর্তমানে শায়েখ আক্বীদা, উসুল, ফিকহ, মারেফাত ইত্যাদি বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়ে এ ধরণের সংক্ষিপ্ত কিন্তু জ্ঞানগর্ভ আলোচনা, মৌখিক দারস বা গ্রন্থাকারে লিপবদ্ধ আকারে তুলে ধরার কাজে সময় ব্যায় করছেন| যার বেশিরভাগই দারসী নিজাম শিক্ষা ব্যবস্থার পাঠ হিসেবে ছাত্রদের শিক্ষাদান করা হচ্ছে| যা ইতোমধ্যেই কর্মমুখী মানুষকে দ্বীনমুখি করে তোলা ও দ্বীনি জ্ঞানে অভিজ্ঞ করে তোলার ব্যাপারে কার্যকারি ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে| এ জাতীয় প্রচেষ্টার মধ্যে আরবীতে “মিরআতুস সালেহীন” নামক শিক্ষামূলক আয়াত ও হাদীসের একটি সংক্ষিপ্ত সংকলণ প্রনয়ন এবং “কবিতায় নবীর কথা” নামক গ্রন্থে রসুলে কারীমের সীরাতকে সংক্ষিপ্ত ও নান্দনিক ছন্দের গাঁথুনিতে তুলে ধরার চেষ্টা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য|   

এছাড়াও, শায়েখ আরবি ব্যাকরণ, ইসলামি সাহিত্য, সিয়াসাত তথা রাজনীতি, উপন্যাস ও কবিতা সহ বিভিন্ন বিষয়ের উপরে শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। আরবী ভাষায়ও তার বেশ কিছু গবেষণামূলক গ্রন্থ রয়েছে| গণতন্ত্র, তাওহীদ ও বিদায়াত সহ তার লিখিত বিভিন্ন গ্রন্থাবলী অনেক চিন্তাশীল ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। শায়েখ লেখালেখির পাশাপাশি তার নিজ হাতে প্রতিষ্ঠিত দারসী নিজাম শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন শিক্ষা কেন্দ্রে দারস প্রদান করে থাকেন।

কর্মজীবনে শায়েখ নিজেও বিভিন্ন ব্যাবসা কার্যের সাথে সংযুক্ত আছেন।

মহান আল্লাহ শায়েখের লেখনী দ্বারা আমাদের উপকৃত হওয়ার এবং শায়েখের নেক হায়াত দান করেন। আমিন।

লিখেছেন

মুহাম্মাদ ইমরান হোসাইন

ছাত্র

শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা