খসড়া:আবদুল কাহার সিদ্দিকী

ফুরফুরা দরবারের পীর মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী (রহ.)

ফুরফুরা (https://bn.wikipedia.org/wiki/ফুরফুরা_(গ্রাম)) একটি গ্রামের নাম, ফুরফুরা একটি আধ্যাত্মিক দীনী ইসলামী সংগঠনের নাম। ফুরফুরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মহকুমার জাঙ্গিপাড়া সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে অবস্থিত। গ্রামটি ফুরফুরা দরবারের শরিয়াত-ত্বরিক্বতভিত্তিক ইশাআতে ইসলাম (ইসলাম প্রচার) এর প্রাণকেন্দ্ররূপে পুরো ভারত উপমহাদেশে বিখ্যাত হয়ে আছে।[সূত্রঃ "The Hindu e-Paper Today: ePaper replica of the print newspaper"epaper.thehindu.com] বাংলা-ভারতে ফুরফুরা দরবার প্রায় সাড়ে সাতশত বছর যাবৎ দ্বীনি খেদমতে রত আছে (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাস)।

উল্লেখ্য, ১৩৭৫ সালে জনৈক মুকলিশ খান কর্তৃক নির্মিত একটি মসজিদকে কেন্দ্র করে এই গ্রামের ইসলামী ইতিহাস শুরু হয়।[সূত্রঃ "West Bengal Tourism Policy, 2008"। Fairs and Festivals Tourism। Government of West Bengal, Department of Tourism]

কথিত আছে যে, সেইসময়ে এক ক্ষত্রিয় রাজা এখানে রাজত্ব করত। রাজত্বকালে শাহ কবির হালিবি ও করমুদ্দিন নামে দুই মুসলিম সৈন্য এই ক্ষত্রিয় রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিজয় লাভ করে।অন্য বর্ণনায় ৪ মুসলিম ভ্রাতা যুদ্ধ করে শহীদ হন।তাঁদেরকে ফুরফুরার ইতিহাসে ‘গন্জে শুহাদা’ বলা হয়।বিজয়ের পর যে আনন্দোৎসব করা হয়েছিল সে উৎসবকে ফার্সি ভাষায় ‘ফররে ফরাহ’ বলা হয়।কালের পরিবর্তনের সাথে সাথে ‘ফররে ফরাহ’ শব্দ ফুরফুরা-তে পরিণত হয়।(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, মার্কাযে ইশাআতে ইসলাম, ফুরফুরা দরবার, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর ঢাকা, বাংলাদেশ)।

এই গ্রামে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও ইসালে সওয়াব উপলক্ষে প্রতি বছর ফাল্গুন মাসে দেশ-বিদেশ থেকে ফুরফুরা দরবারের খোলাফা, মুবাল্লিগীন, জাকেরিন, সাকেরিন, মুহেব্বীন, মুতাআল্লেকীন, মুতাআকেদীনসহ জাতি-ধর্ম বর্ণ,দলমত নির্বিশেষে আম জনতার ঢল নামে। করে।[তথ্যসূত্রঃ "Hoogly District"। Places of Interest, District administration]

ফুরফুরা নামক এই ঐতিহাসিক গ্রামের জাঙ্গিপাড়ায় ১৯৪০ সালে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন আগামী দিনের নায়েবে মুজাদ্দেদ, শেরে ফুরফুরা, আমির-উল-ইত্তেহাদ, যুগশ্রেষ্ঠ মাওয়াহিদ (তাওহীদবাদী), মহিউদ্দীন ওয়াল মহিউস্ সুন্নাহ হযরতুল আ’ল্লাম মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল ক্বাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ।

বংশ পরিচিতিঃ ফুরফুরা দরবারের প্রাণ প্রতিষ্ঠাতা মোজাদ্দেদে জামান খ্যাত মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মারুফ আবুবকর সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহর (https://www.google.com/search?client=firefox-b-e&q=ফুরফুরা+দরবারের+পীর+আবু+বকর+সিদ্দিকী+উইকি ) জ্যেষ্ঠ পুত্র শাইখুল ইসলাম আব্দুল হাই সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহর (https://bn.wikipedia.org/wiki/=আবদুল+হাই+সিদ্দিকী+উইকি) বড় সাহেবজাদা মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মদ আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহ পবিত্র দীন ইসলামের প্রথম খলিফা আমিরুল মুমিনিন আবুবকর সিদ্দিকের رضي الله عنه (https://bn.wikipedia.org/wiki/ আবু_বকর) ৪১ তম অধ্বস্তন পুরুষ।

ইঁনারা সবাই ইসলামের প্রথম খলিফা, মহানবী ﷺ এর প্রধান সাহাবী হযরত আবু বকর সিদ্দিক رضي الله عنه এর সুযোগ্য জিসমানী(রক্ত সম্পর্কিত) বংশধর। এই বংশ মুররাহ ইবনে কাব (৮ম) পর্যায়ে স্বয়ং রসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে মিলিত হয়ে ইবনে ফিহরে গিয়ে উভয় বংশ নিম্নরূপে আল কুরাইশে পরিণত হয়ঃ

১. হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ) ইবনে আবদুল্লাহ>২. আবদুল্লাহ ইবনে আবদে মুত্তালিব>৩. আবদে মুত্তালিব ইবনে হাসিম> ৪. হাসিম ইবনে আবদে মানাফ > ৫ মানাফ ইবনে কুসাই >৬.কুসাই ইবনে কিলাব > ৭.কিলাব ইবনে মুররাহ >৮.মুররাহ ইবনে কাব ৯. কাব ইবনে গালিব ১০ গালিব ইবনে ফাহর/ ১১.ফাহর/ফিহর (আল কুরাইশি) ইবনে মালিক।

আবু বকর رضي الله عنه এর বংশ ধারা ১.আবদুল্লাহ ইবনে উসমান> ২. উসমান ইবনে আমির>৩. আমির ইবনে আমর>৪.আমর ইবনে কাব>৫. কাব ইবনে সাদ>৬. সাদ ইবনে তায়িম>৭. তায়িম ইবনে মুররাহ>৮.মুররাহ ইবনে কাব> ৯.কাব ইবনে লুয়াই> ১০.লুয়াই ইবনে গালিব>১১. গালিব ইবনে ফিহর (আল কুরাইশি)ইবনে মালিক।

৫৭০ খ্রিষ্টাব্দ –হযরত মুহাম্মদﷺ

৫৪৫ খ্রিষ্টাব্দ – আবদুল্লাহ ৪৯৭ খ্রিষ্টাব্দ – আব্দ আল-মুত্তালিব

৪৬৪ খ্রিষ্টাব্দ – হাশিম

৪৩৯ খ্রিষ্টাব্দ – আব্দ মানাফ

৪০৬ খ্রিষ্টাব্দ – কুসাই

৩৭৩ খ্রিষ্টাব্দ – কিলাব

৩৪০ খ্রিষ্টাব্দ – মুররাহ

৩০৭ খ্রিষ্টাব্দ – কা'য়াব

২৭৪ খ্রিষ্টাব্দ – লু'আহ

২৪১ খ্রিষ্টাব্দ – গালিব

২০৮ খ্রিষ্টাব্দ – ফিহর

(সূত্রঃ https://bn.wikipedia.org/wiki/মুহাম্মাদের_বংশধারা)

হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহ. এর প্রচলিত এবং আধ্যাত্মিক শিক্ষা জীবনঃ

ফুরফুরা মাদরাসাতে হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহ. এর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়। তৎকালীন সিলেবাস অনুযায়ী মোমতাজুল মুহাদ্দেসীন পর্যন্ত বিভিন্ন কেতাব, যেমনঃ তাফসীরে জালালাইন, তাফসীরে কাশশাফ, তাফসীরে বায়জাভী, সিহাহ্ সিত্তাসহ সকল কিতাব তৎকালীন শীর্ষস্থানীয় আলেম ও মোহাদ্দেসদেরর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে শিক্ষা গ্রহণ করেন। কুরআন, হাদীস, ফিকহ, আকাইদ, মানতিক, ফালসাফা, ইতিহাস ও কাব্য সাহিত্যে তিনি বিশেষ বুৎপত্তি লাভ করেন।

দোঁক মাদ্রাসায় সালে আউয়াল, সালে দোম, শোম, চাহারাম,পাহ্চমসহ সালে শশম পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। এ সময় তিনি বাকুরাতুল আদম, উর্দু পহেলি ও দুসরি, তাজবিদুল কুরআন, মিজান ও মুনশারি’ব, রওজাতুল আদব, আজীজুন নুহাত নাহু, উর্দু তেসরি, ফার্সি দুসরি, আরবি আদব, কিতাবুল মুনসেফ, উর্দু চৌথি, হেদায়াতুন নাহু, কায়লবী আদবের কেতাব, ফিকাহ মালাবুদ্দামিনহু, ফিকাহ নুরুল ইজাহ, গোলেস্তা, ফার্সি সাহিত্য, নাহুর কিতাব কাফিয়া, সরফের কিতাব সাফিয়া, ফিকাহ কুদুরী, উসুলে শাশি, তারিখে হাবীবে এলাহা ইত্যাদিসহ তাজবীদ, তার্জমাসহ কুরআন শরীফ অধ্যয়ন করেন।

(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ২৬৫, দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ, www.furfura.com, e-mail: arifalmannan@gmail.com) ।

আলেমে আউয়াল, আলেমে দোম, ফাজেলে আউয়াল, ফাজেলে দোম ও মোমতাজুল মোহাদ্দেসীন ক্লাসের বিভিন্ন কিতাব, যেমন আরবি আদব, সাহিত্য আল মুকতারাত, আল মুনতাখাবাত, মাকামাতে হারিরি, আল কেতাব, তারিখে ইসলাম, ফিকাহ হেদায়া, শরহে বেকায়া, মানতেকের কেতাব, মাইবুজি, সুল্লামুল উলুম, উসুলে ফেকাহ, নুরুল আনোয়ার, মুসালিমুস সুবুত, হেকমাতের কেতাব হেদায়াতুল হেকমত, তাফসীরে জালালাইন, তাফসীরে কাসসাফ, মেশকাত শরীফ, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, নাসায়ী শরীফ , ইবনে মাজাহ শরীফ, তিরমিজী শরীফ আবু দাউদ শরীফ ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন। এছাড়া দীনী শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ভূগোল ইত্যাদি জেনারেল বিষয় শিক্ষার অন্তর্ভূক্ত ছিল। (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ২৬৫)

পীর সাহেবের মেঝ ভাই মুফতীয়ে আজম মাওলানা আবু ইবরাহীম ওবায়দুল্লাহ সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুমুল্লাহ লিখেছেনঃ “আমাদের আব্বা হুজুর পরতাপে কাইয়ুমুজ্জামান শায়খুল ইসলাম হযরত মাওলানা আবু নসর মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী (রহ.) ছোট বেলা থেকেই তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে বড় ভাই সাহেবকে গড়ে তুলেছিলেন। নিজের সরাসরি তত্ত্বাবধানে যোগ্য শিক্ষকমন্ডলী ও ওলামায়ে কেরামের দরস-তালিমের মাধ্যমে তিনি বড় ভাই সাহেবকে যোগ্য আলেম হিসেবে গড়ে তোলেন। সবচেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে, আল্লাহর ওলীদের সোহবত ও তাওয়াজ্জুহ হতে আমার বড় ভাই সাহেব ইলমে লাদুন্নির ফায়েজ পেয়েছিলেন। যেমনভাবে মুজাদ্দেদে জামান (রহ.) তাঁর বড় ছেলে শায়খুল ইসলাম বড় হুজুর (রহ.)কে, মেজ হুজুর (রহ.)কে আল্লামা রুহুল আমীন (রহ.)-কে ইলমে লাদুন্নীর ফায়েজ দিয়েছিলেন তেমনি আমার বড় ভাই সাহেবও ইলমে লাদুন্নীর ফায়েজ পেয়েছিলেন।” (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ২৬৫-৬৬, দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ, www.furfura.com, e-mail: arifalmannan@gmail.com) ।

أَنَا دَعْوَةُ أَبِيْ إِبْرَاهِيْمَ وَبُشْرَى عِيْسَى- ‘আমি আমার পিতা ইবরাহীমের দো‘আর ফসল ও ঈসার সুসংবাদ’ (আল হাদীস) ।

নায়েবে মুজাদ্দেদ, শেরে ফুরফুরা হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহ. প্রতি শ্রদ্ধেয় ওয়ালেদ সাহেব শাইখুল ইসলাম মাওলানা আবদুল হাই সিদ্দিকী আল কুরাইশি রহ. এর দুআ-মুনাজাত

ইলমে লাদুন্নীর সবকে বসিয়ে খাসভাবে দুআ

একবার হজ্বের সফরে মদীনা মুনওয়ারায় রিয়াজুল জান্নাহয় রসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে শাইখুল ইসলাম, হাকিমুল ইনসান মাওলানা আব্দুল হাই সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ স্বীয় জ্যেষ্ঠ সাহেবজাদা স্নেহের আবদুল কাহহার সিদ্দিক-কে ইলমে লাদুন্নীর সবকে বসিয়ে খাসভাবে দুআ করেছিলেন।

আল্লাহ তোমাকে তোমার দাদা মুজাদ্দেদে জামান (রহ.)-এর মত ওলি করে দিন

হযরত বড় হুজুর (রহ) তাঁর জীবনের শেষ হজ্জে আরাফাতের ময়দানে জবলে রহমতের উপর দাঁড়িয়ে মাগরেববাদ বহু ভক্ত, মুরিদ এবং দেশ বিদেশের হাজিদের সামনে ফুরফুরার মরহুম হুজুর অর্থাৎ তাঁর বড় ছেলে মাওলানা আবুল আনসার মোঃ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী সাহেবের বুকে হাত রেখে বলেছিলেন, “আমি দোওয়া করি, আল্লাহ তোমাকে তোমার দাদা মুজাদ্দেদে জামান (রহ.)-এর মত ওলি করে দিন”।

ছেলের ওয়াজ শুনে চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়তো

তিনি (আবদুল হাই সিদ্দিকী রহ.) যখন ছেলের (নায়েবে মুজাদ্দেদ রহ.) ওয়াজ শুনতেন তখন আবেগ আতিশষ্যে তাঁর চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়তো।

আনসার মিয়ার দিলটা ভাল

তিনি (দাদা হুযুর) ছেলের (আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহ.) প্রশংসা করে বলতেন-আনসার মিয়ার দিলটা ভাল (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ৬৬, দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা)।

আল্লাহ তার হায়াত কিসমত বড় করুন

হযরত পীর সাহেব হুজুর রহ. তাঁর আব্বা-আম্মার প্রাণ খোলা দুআ পেয়েছিলেন। তাঁর আব্বা হযরত মাও. আব্দুল হাই সিদ্দিকী রহ. প্রায়ই জলছাতেই ছেলের জন্য দুআ করতেন, মানুষের কাছে দুআ চাইতেন। তিনি কাঁদতেন আর বলতেনঃ আল্লাহ তার হায়াত কিসমত বড় করুন।

আমি তোমাকে আল্লাহর সোপর্দ করলাম

একবার পাকশীতে তিনি বললেন-আমি তোমাকে আল্লাহর সোপর্দ করলাম।(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ৬৬, দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা)। পিতা আ’ল্লামা আবদুল হাই সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুমুল্লাহর মৃত্যুর পর ১৯৭৭ ঈসাব্দে বাংলা-ভারত উপমহাদেশের সুপ্রাচীন শারিয়াত-ত্বরিকাতপন্থী ঐতিহ্যবাহী ফুরফুরা দরবারের গদ্দীনশীন পীর হন হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল ক্বাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুমুল্লাহ সাহেব। বাংলা-ভারত ছাড়াও যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, সৌদী আরব, আবুধাবীসহ মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে অনেক দেশ-রাষ্ট্রে সুদীর্ঘ ২৯ বছরব্যাপী ইসলাম প্রচারের পর ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকার দারুস সালামে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। (সূত্রঃ https://www.linkedin.com/pulse/ফরফরর-পর-মওলন-আবল-আনসর-মহমমদ-আবদল-কহহর-সদদক-আল-করইশর-রহমহললহ-hossain/)

বাংলাদেশে ফুরফুরা দরবারের কার্যক্রম

ফুরফুরার পীর মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী ১৯৮১ সালে বাংলাদেশের ঢাকার মীরপুরের ২/২ দারুস সালামে অবস্থিত ‘মার্কাযে ইশাআতে ইসলাম’ প্রতিষ্ঠা করেন,আল-জামেয়াতুস_সিদ্দিকীয়া_দারুল_উলুম_মাদ্রাসা, (সূত্রঃhttps://bn.wikipedia.org/wiki/ আল-জামেয়াতুস_সিদ্দিকীয়া_দারুল_উলুম_মাদ্রাসা),বিশ্ব ইসলাম মিশন কোরআনী-সূ্ন্নী জমিয়তুল মুসলিমীন হিযবুল্লাহ’ প্রভৃতি দীনী সংগঠনের পরিচালক হিসাবে আমৃত্যু বিশ্বব্যাপী ইসলামের দাওয়াতি কাজ সম্পন্ন করেন।

এছাড়া পীর সাহেবের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশিতে প্রায় ১০০ একর জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ আরবী বিশ্ববিদ্যালয়। এখানেও ঢাকা দার-আস-সালামের ন্যায় বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও ইসালে সওয়াব উপলক্ষ্যে দেশ-বিদেশ হতে লক্ষ লক্ষ মুরীদ-মুহেব্বীনের সমাগম ঘটায় এতদন্চলের মানুষ বিশাল এ ধর্মীয় সমাবেশকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ব ইজতেমা মনে করেন। মৃত্যুর পূর্বে ২০০৫ সালে দারুস সালামে অনুষ্ঠিত জাতীয় মুবাল্লেগ সম্মেলনে উনার জ্যেষ্ঠ সাহেবজাদা আল্লামা শাইখ আবুবকর আবদুল হাই মিশকাত সিদ্দিকীকে গদ্দীনসীন পীর মনোনীত করে যান। সেমতে, বর্তমানে শাইখ আবুবকর আবদুল হাই মিশকাত সিদ্দিকী যুগপৎ বাংলা-ভারতে ফুরফুরার গদ্দীনসীন পীরের দায়িত্বে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, শাইখ আবুবকর আবদুল হাই মিশকাত সিদ্দিকী আল কুরাইশী হাফিজাহুল্লাহ ইসলামের প্রথম খলিফা আমিরুল মুমিনিন হযরত আবু বকর সিদ্দিক رضي الله عنه (রদ্বিয়াল্লাহু আনহর) ৪২ তম অধ্বস্তন পুরুষ। তাছাড়া, মৃত্যুর আগে ফুরফুরার পীর মাওলানা আবদুল কাহহার আল কুরাইশী (রহিমাহুমুল্লাহ)সিদ্দিকী বিশ্ব ইসলাম মিশন কোরআনী-সূ্ন্নী জমিয়তুল মুসলিমীন হিযবুল্লাহ সংগঠনের আওতায় ছাত্র-যুব সংগঠন ‘হিযবুল্লাহ হিলফুল ফুযুল’, মা-বোনদের জন্য ফাতেমা জামাত, কুরআন-হাদীস রিসার্চ সেন্টার পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।পীর সাহেবের তত্ত্বাবধানে ইশাআতে ইসলাম সিদ্দিকীয়া কুতুবখানা থেকে শতাধিক দীনী কিতাব প্রকাশিত হয়।

ইশাআতে ইসলাম সিদ্দিকীয়া কুতুবখানা থেকে প্রকাশিত কিছু বই· . ইসলামী আকীদা শিক্ষা

· ফুরফুরার ইতিহাস

· ওযীফা ও নামাজ শিক্ষা

· আমপারা তাফসীর

· জাহান্নামের ছয় রমনী

· কেন মুসলমান হলাম?

· সুন্নত ও বিজ্ঞান

· ওপেন সিক্রেট

· কম্পিউটার ও আল কোরআন

· বান্দার হক

· সৃষ্টির সেবা ও সুন্দর আচরন

· আলামতে কিয়ামত

· নুরানী কোরআন শিক্ষা ও ওযিফা

· দি গাইড

· মুজাদ্দেদে জামান হযরত আবুবকর সিদ্দিকী আল কোরাইশী (রহ)এর জীবনী

· শাইখুল ইসলাম হযরত আব্দুল হাই সিদ্দিকী আল কোরাইশী (রহ) এর জীবনী

· নুরানী কোরআন শিক্ষা ও ওযিফা

· সংবাদ পত্রের পাতায় হযরত আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী আল কোরাইশী (রহ)

· প্রাথমিক চিকিৎসা গাইড

· অল্প পুঁজি বেশী রুজি

· মরা মানুষের কান্না

· এই তো সেই ওলি

· মুসলমানি বিবাহ

· তালিমুন নিসা

· জাহান্নামের আগুনে ত্রিশ সেকেন্ড

· মাওলানা রুহুল আমিন (রহ)এর জীবন ও কর্ম

বাংলাদেশে ফুরফুরা দরবারের কার্যক্রম

ঢাকা, বাংলাদেশের স্থাপনাসমূহ

►দারুল আজকার খানকাহ, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা,

►দাওরাতুল হাদীস ভবন, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা।

►তারবিয়াতুল মিল্লাত একাডেমী, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা।

►উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা (রদ্বিয়াল্লাহু আনহা)বালিকা মাদরাসা, মীরপুর দারুস সালাম, ঢাকা, ►দারুস সালাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা,

►কুতুবখানা গবেষণা কেন্দ্র, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা,

► মারেফাত হাউজ,ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা,

►কেন্দ্রীয় কার্যালয় সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা,

►ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা,

►ফুরফুরা খানকাহ, বাংলাবাজার, ঢাকা।

পাবনার পাকশির ফুরফুরা দরবারের স্থাপনাসমূহ

►ওয়াজ মাহফিল স্টেজ, ফুরফুরা দরবার, পাকশী, পাবনা,

►দারুশ শরীয়ত রিয়াজুল জান্নাত মসজিদ কমপ্লেক্স, ফুরফুরা দরবার, পাকশী, পাবনা,

►দারুশ শরীয়ত ফুরফুরা দরবার, পাকশী, পাবনা,

►দারুশ শরীয়ত কুতুবখানা, পাকশী, পাবনা,

►মাদরাসা ভবন,ফুরফুরা দরবার, পাকশী, পাবনা,

►মেহমান খানা, পাকশী, পাবনা,

►দারুশ শরীয়ত গেইট, পাকশী, পাবনা।

ঠাকুরগাও ফুরফুরা দরবারের স্থাপনাসমূহ

►সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন মসজিদ, ফুরফুরা দরবার, ঠাকুরগাও, ►সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন ভবন, ফুরফুরা দরবার,ঠাকুরগাও,

►সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন মাদরাসা, ফুরফুরা দরবার, ঠাকুরগাও,►ফুরফুরা খানকাহ, ঠাকুরগাও। এছাড়া,

মেহেরপুর ফুরফুরা দরবারের স্থাপনাসমূহ

► দারুর রহমত খানকায়ে ফুরফুরা, মেহেরপুর

► গাংনী উপজেলা মারকাজ, ফুরফুরা খানকাহ, মেহেরপুর

এছাড়াও বিভিন্ন জেলার স্থাপনাসমূহ নিম্নরূপঃ

●ফুরফুরা খানকাহ ও হুজরাখানা, ফরিদপুর

● সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন ফুরফুরা খানকাহ, রাজবাড়

● খানকায়ে ফুরফুরা, লেমুয়া, ফেনী

● ফুরফুরা খানকাহ, চট্টগ্রাম,

● ইসলাম মিশন মসজিদ, কালিগন্জ, ঝিনাইদা

● সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন, ফুরফুরা খানকাহ, খুলনা,

● ফুরফুরা খানকাহ, ভালুকা, ময়মনসিংহ।

উল্লেখ্য, ১৯৪১ সালের জুলাই-তে কলকাতায় পরবর্তীতে ঢাকা থেকে পৃথক সংস্করণে প্রকাশিত ফুরফুরার মুখপত্রঃ ‘নেদায়ে ইসলাম এবং ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত সাময়িকী ‘নেদায়ে মদীনার প্রধান পৃ্ষ্ঠপোষকের দায়িত্ব পালন করেন নায়েবে মুজাদ্দেদ মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মদ আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী (রহিমাহুমুল্লাহ) ।

ভারতে ফুরফুরা দরবারের স্থাপনাসমূহ

ভারতের অন্ততঃ ৫০ জেলায় ওয়াজ নসীহতসহ ফুরফুরা দরবারের বহুমুখী কার্যক্রম চলমান। তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছেঃ

►ফুরফুরা ফতেহিয়া সিনিয়র (টাইটেল) মাদ্রাসা, ভারত,

►ফুরফুরা ফতেহিয়া সিনিয়র (কারিগরি) মাদ্রাসা, ভারত,

►ফুরফুরা ফতেহিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা হোস্টেল, ভারত,

►দার-আস-সুন্নাহ মেহমানখানা, ভারত,

►নেদায়ে ইসলাম অফিস, কোলকাতা, ভারত, দারুল আনসার ভবন, ভারত,

►ফুরফুরা খানকাহ, দোক, ভারত, ►উজল খানকাহ, ভারত

►হযরত মোস্তফা মাদানী (রহিমাহুল্লাহ)জামে মসজিদ, ভারত।

উল্লেখ্য, সিদ্দিকী বংশোদ্ভূত হযরত মোস্তফা মাদানী (রহিমাহুল্লাহ) ছিলেন দিল্লীর মুঘল বাদশাহ আলমগীর আওরঙ্গজেবের পীর ভাই। সে সুবাদে হযরত মোস্তফা মাদানী (রহিমাহুমুল্লাহ)কে বাদশাহ যে ভূমি লাখেরাজ করে দেন সেটি আজ ভারতের ঐতিহ্যবাহী মেদেনীপুর। (প্রকৃত নাম মাদানীপুর) নামে খ্যাত। (সূত্রঃ https://www.linkedin.com/article/edit/7074946711525216257/)

ফখরে আউলিয়া ফুরফুরা দরবারের পীর মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী (রহিমাহুমুল্লাহ):ফুরফুরা থেকে চট্টগ্রাম

নির্ভরযোগ্য প্রাচীন বাংলার ইতিহাসসূত্রে জানা যায় যে, পাক-বাংলা-ভারত উপমহাদেশে সাগর পথে ইসলামের প্রবেশ ঘটেছিল রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটাত্মীয় মামা সম্পর্কের হযরত আবু ওয়াক্কাস রদ্বিয়াল্লাহ আনহু আরব সাগর পথে বঙ্গোপসাগর উপকূল অতিক্রম করে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পথে চীনের ক্যান্টনে যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম বন্দরে যাত্রাবিরতিকালে এদেশে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবৎকালেই এই উপমহাদেশে ইসলামের প্রবেশ ঘটে। এ কারণে চট্টগ্রামকে বলা হয় বাবল ইসলাম অর্থাৎ ইসলামের প্রবেশ উল্লেখ্য, রংপুর জেলার ইতিহাস গ্রন্থ থেকে জানা যায়, রাসুল (ﷺ)-এর মামাজান, মা আমেনার চাচাতো ভাই আবু ওয়াক্কাস (রদ্বিয়াল্লাহ আনহু) ৬২০ থেকে ৬২৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলাদেশে ইসলাম প্রচার করেন (পৃ. ১২৬)। অনেকে অনুমান করেন, রংপুরের পঞ্চগ্রামের মসজিদটিও তিনি নির্মাণ করেন যা ৬৯০ খ্রিষ্টাব্দে সংস্কার করা হয়।

দেশের প্রথম ও প্রাচীন এই মসজিদটি উত্তর-দক্ষিণে ২১ ফুট ও প্রস্থ ১০ ফুট। মসজিদের ভিতরে রয়েছে একটি কাতারের জন্য ৪ ফুট প্রস্থ জায়গা। মসজিদের চার কোণে রয়েছে অষ্টকোণ বিশিষ্ট স্তম্ভ। ধ্বংসাবশেষ থেকে মসজিদের চূড়া ও গম্বুজ পাওয়া গেছে।

মতিউর রহমান বসুনিয়া রচিত ‘রংপুরে দ্বীনি দাওয়াত’ গ্রন্থেও এই মসজিদের বিশদ বিবরণ আছে

বার আউলিয়ার ধন্যভুমি চট্টগ্রামে ফখরে আউলিয়া হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকীর তরিকতী জিন্দেগীর ইতিকথা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত হুগলি জেলায় অবস্থিত ফুরফুরা দরবারের সাথে বাংলাদেশের বিভাগীয় জেলা চট্টগ্রামের প্রখ্যাত পীর হযরত সূফী ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রহিমাহুল্লাহর সূত্রে উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুজুর্গানে দীন শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দেস দেহলভী রহঃ পর্যন্ত সিলসিলাগত ঈমানী, রুহানী যে নেসবত তা আজও অটুট, বিদ্যমান।

নায়েবে মুজাদ্দেদ হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহ তরিকতের জিন্দেগীতে ধারাবাহিকভাবে যথাক্রমে স্বীয় পিতা শাইখুল ইসলাম হযরত মাওলানা আবদুল হাই সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহ ,তদীয় দাদাজান মোজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলনা আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহ সূত্রে উপমহাদেশের প্রখ্যাত আউলিয়া কেরামদের সাথে সম্পর্কিত হন। সেমতে হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী অআল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ যথাক্রমে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা নিবাসী সুফী ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রহিমাহুল্লাহ, (https://bn.wikipedia.org/wiki/ফতেহ_আলী_ওয়াসি) মীরশ্বরাইয়ের নিজামপুরে অবস্থিত ‘মলিয়াশ’ নামক গ্রামে শায়িত গাজিয়ে বালাকোট সুফী নূর মোহাম্মাদ নিজামপুরী রহিমাহুল্লাহ(https://www.google.com/search?client=firefox-b-e&q=সুফী+নূর+মোহাম্মাদ+নিজামপুরী), সৈয়দ আহামাদ শহীদ বেরেলভী রহিমাহুল্লাহ (https://www.google.com/search?client=firefox-b-e&q=সৈয়দ+আহামাদ+শহীদ+বেরেলভী+)শাহ আবদুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহলভী রহিমাহুল্লাহ, https://www.google.com/search?client=firefox-b-e&q=শাহ+আবদুল+আজিজ+মুহাদ্দিস+দেহলভী) এবং শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী রহিমাহুল্লাহ https://bn.wikipedia.org/wiki/শাহ_ওয়ালিউল্লাহ_দেহলভী এর সাথে পর্যায়ক্রমিক আধ্যাত্মিক সম্পর্কে সম্পর্কিত।

"তিনি (আবুবকর সিদ্দিকী রহ.) ইলমে তাছাউফের শিক্ষার জন্য শাহ সুফি ফতেহ আলী ওয়াইসীর নিকট বাইয়াত গ্রহণ করেন। ইলমে তরিকত ও তাছাউফের চারধারার মাসয়ালা শিক্ষা করেন। তার সাহচর্যে থেকে কার্যকরিভাবে রিয়াজত মোজাহাদা করেন। পাশাপাশি তার সান্নিধ্যে চার তরিকার নিয়ম নীতি অনুযায়ী জিকিরের অনুশীলন পূর্বক খিলাফত লাভ করেন। এই পীর (ফতেহ আলী ওয়াইসী) ১৮৮৬ সালে আবু বকর সিদ্দিকীর কোলে মাথা রেখেই ইন্তেকাল করেন। [১]

কথিত আছে যে, মুর্শিদে বরহক সুফী ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রহিমাহুল্লাহ মুজাদ্দেদে জামান রহিমাহুল্লাহকে "আমার খোলা বক্স", এবং শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী রহিমাহুল্লাহকে বলতেন "বন্ধ বক্স"।

চট্টগ্রামভিত্তিক বিভিন্ন তরিকতপন্থী সংগঠনের সাথে ফুরফুরা দরবারের নেসবতনামা

ফুরফুরা-চুনতি দরবারের নেসবতনামাঃ ফুরফুরা দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পীর(মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহ. এর দাদাজান) মুজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ এর পীর ভাই শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী রহিমাহুল্লাহ (উভয়ের পীর সাহেব হচ্ছেন সূফী ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রহিমাহুল্লাহ). এর খলিফা>হযরত মাওলানা-বারী শাহ এর খলিফা>-হযরত মাওলানা হামেদী আজমগড়ি এর খলিফা> হযরত মাওলানা নজির শাহ রহিমাহুল্লাহ, চুনতি দরবার, সাতকানিয়া, চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা।

ফুরফুরা-গারাংগিয়ার নেসবতনামাঃ ফুরফুরা দরবারের পীর মুজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ এর পীর ভাই শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী রহিমাহুল্লাহ এর খলিফা>হযরত মাওলানা হামেদী জমগড়ি এর খলিফা শাহ মুহাম্মাদ আবদুল মাজিদ রহিমাহুল্লাহ, দরবারে আলীয়া গারাংগিয়া, সাতকানিয়া, চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠা এর খলিফা>হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ কামাল উদ্দিন মজিদী,রশিদী রহিমাহুল্লাহ,দরবারে আলীয়া মুহাম্মদীয়া খানকা,পাঠানটুলী,চট্টগ্রাম।

ফুরফুরা-বায়তুশ শরফ নেসবতনামাঃ ফুরফুরা দরবারের পীর মুজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ>মীর মুহাম্মাদ মাসউদ রহিমাহুল্লাহ এর সাহেবজাদা>মীর মুহাম্মাদ আখতার রহিমাহুল্লাহ,বায়তুশ শরফ দরবার, চট্টগ্রাম,বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা।


মোজাদ্দেদে জামান আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহর সাথে শামসুল উলামা গোলাম সালমানী রহিমাহুল্লাহর আধ্যাত্মিক নেসবতের ইতিকথা

১৯ শতকের শেষের দিকে ফরায়েজি ও তরিকায়ে মুহাম্মদিয়া আন্দোলনের তীব্রতা প্রশমিত হয়ে আসলে মুসলিমরাও কিছুটা দুর্বল ছিলো।[সূত্রঃ ডঃ ওয়াকিল আহমদ (১৯৮৩)। উনিশ শতকে বাঙালি মুসলমানের চিন্তা-চেতনার ধারা। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ১–৫০।

মুসলিমদের মধ্যে নানা বিভক্তি ছিলো, বিভিন্ন স্থানে মুসলিমরা ভিন্ন ধর্ম গ্রহণ করলে আবু বকর চিন্তিত হয়ে পরেন।[ সূত্রঃ ডঃ অমলেন্দু দে (১৯৯১)। বাঙালি বুদ্ধিজীবী ও বিচ্ছিন্নতাবাদ। 8th Floor, 6-A, Raja Subodh Mullick Square Rd, Bowbazar, Kolkata, West Bengal 700013: পঃ বঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদ। পৃষ্ঠা ১১৯]।
তিনি মুসলিম উম্মাহের ঐক্যতা নিয়ে কাজ করতে মনস্থ হন, এবং দুই বাংলার শিরকী, বিদিয়াতি, কুসংস্কার প্রভৃতি দূরীভূত করার চেষ্টা চালান।[ শাহ আবু বকর সিদ্দিকীঃ সৈয়দ মোঃ বাহাউদ্দিন ২০১৭, পৃ. ২৩।]

তার এই কাজে সহযোগিতা করেছিলো যেসব আলেম তাদের মধ্যে শামসুল উলামা গোলাম সালমানী (১৮৫৪ - ১৯১২) আল্লামা লুতফর রহমান বর্ধমানী (মৃঃ ১৯২০), আল্লামা এসহাক বর্ধমানী (মৃঃ ১৯২৮), বেলায়েত হােসেন বীরভূমী (১৮৮৭), আবদুল ওয়াহেদ চাটগামী (মৃঃ ১৯১০), মুহাম্মদ মঙ্গলকোটি বর্ধমানী (মৃঃ ১৯০৭) উল্লেখযোগ্য।[ সূত্রঃ মাওলানা নূর মোহাম্মদ আ'জামী (১৯৯৭)। হাদিসের তত্ব ও ইতিহাস। দিল্লি, ভারত: বাংলা ইসলামিক একাডেমী। পৃষ্ঠা ১–৫০। ওলামা সংগঠন (২০০১)। মুসলিম মনীষী (সংকলন)। ঢাকা, বাংলাদেশ: ইসলামিক ফাউন্ডেশন। পৃষ্ঠা ৩১৫–৩৪১।

সৈয়দ মোহঃ বাহাউদ্দিন (২০১৭)। আবু বকর সিদ্দিকী। আরামবাগ, হুগলি: সৈয়দ মোহাম্মদ হামযাহ। পৃষ্ঠা ২৪] এছাড়াও বিভিন্ন হাদিস ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যপারে সাহায্য করেছেন আবদুল আউয়াল জৌনপুরী ও কারামত আলী জৌনপুরী। এরা উভয়ই প্রভাবশালী লেখক ছিলেন।]

শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী আব্বাসী রহিমাহুল্লাহর রূহানী জিন্দেগীর ইতিকথা

শাহ সুফি ফতেহ আলী ওয়াইসী রহিমাহুল্লাহর অন্যতম খলিফা শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী আব্বাসী রহিমাহুল্লাহ ১৮৫৪ সালের ১লা জুলাই ভারতের হুগলি জেলার ফুরফুরা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯১২ সালের ১লা জুলাই ইন্তেকাল করেন।

শিক্ষা জীবনঃ কলিকাতার আলিয়া মাদরাসা হতে সর্বোচ্চ দীনী শিক্ষা হাসিল করেন।

কর্মজীবনঃ প্রথমে হুগলি গবর্ণমেন্ট মোহসেনিয়া মাদরাসায় পরে বদলি হয়ে কলিকাতা আলিয়া মাদরাসা অতঃপর তথা হতে হুগলি মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন।

তরিকতের জীবনঃ শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী আব্বাসী রহিমাহুল্লাহ. সুফী ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রহিমাহুল্লাহর সুযোগ্য খলিফা ছিলেন। একই গ্রামের বাসিন্দা ফুরফুরার মুজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহর পীর ভাই ছিলেন ।

উল্লেখ্য, কলিকাতা মাদরাসায় শিক্ষকতাকালীন সময়ে মাওলানা গোলাম সালমানী আব্বাসী রহিমাহুল্লাহ মাদরাসার পূর্ব দিকে অবস্থিত বিবি সালেট মসজিদে তরিকতের তালিম দিতেন।

বিশিষ্ট খলিফাবৃন্দঃ শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী আব্বাসী রহিমাহুল্লাহর শীর্ষ স্থানীয় খলিফাবৃন্দের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেনঃ হযরত মাওলানা সৈয়দ আবদুল বারী শাহ রহিমাহুল্লাহ। শাহ সাহেব প্রথমে হযরত মাওলানা মিয়া করিম বক্স রহিমাহুল্লাহর মুরিদ ছিলেন পরে মাওলানা গোলাম সালমানী রহিমাহুল্লাহর নিকট মুজাদ্দেদিয়া তরিকার বায়েত এবং খেলাফাত প্রাপ্ত হন।

মুজাদ্দেদিয়া ত্বরিকতের উজ্জ্বল নক্ষত্র হযরত মাওলানা হাফেজ হামেদ হাসান আলভী আজমগড়ী (রহঃ) এর সাথে চট্টগ্রামের কতিপয় সিলসিলার আধ্যাত্মিক নেসবত প্রসঙ্গে

হযরত মাওলানা হাফেজ হামেদ হাসান আলভী আজমগড়ী (রহঃ) হলেন প্রখ্যাত আল্লাহর অলি গারাঙ্গিয়া দরবারের 👉 গারাঙ্গিয়া দরবারের হযরত শাহ মাওলানা আবদুল মজীদ বড় হুজুর (রহঃ) 👉হযরত শাহ মাওলানা আবদুর রশীদ হামেদী সিদ্দীকি প্রকাশ ছোট হুজুর (রহঃ)

হালিশহর দরবারের

👉হালিশহরের হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ (রহঃ) চুনতি দরবারের

👉চুনতির মাওলানা নজির আহমদ (রাহমাতুল্লাহি আলাইহিম) সহ বিখ্যাত আরো অনেক আল্লাহর অলির আধ্যাত্মিক জগতের পথ প্রদর্শক ছিলেন।

হযরত মাওলানা হামেদ আজমগড়ি রহ.স্বীয় মুর্শেদ হযরত মাওলানা গোলাম সালমানীর রহ. এর নির্দেশনার সর্বপ্রথম যে জায়গায় তরিকত তথা দ্বীনী সফর করেছিলেন তা ছিল চট্টগ্রাম (https://sufibad24.com/post/17541/#সূফি_মাওলানা_গোলাম_সালমানী_আব্বাসী_রহর_নির্দেশক্রমে_তরীক্বতের_সফরঃ)।

আয়নায়ে মুনীরী গ্রন্থমতে হামেদ আজমগড়ি চট্টগ্রাম আসলে প্রথমে হালিশহর, ফেরার পথেও হালিশহর হয়ে ফিরতেন।হালিশহরের হাফেজ সৈয়দ মুনীর উদ্দীন নূরুল্লাহ রহ.-কে সাত তরিকার খেলাফত বখশিশ করেন।

উল্লেখ্য, চুনতির হযরত মাওলানা নজির আহমদ শাহ ছাহেব রহিমাহুল্লাহর দাদার প্রথম সন্তান হযরত শাহ মাওলানা ফয়েজ আহমদ (রহ.) পিতার জমিদারি এস্টেট দেখভাল করার জন্য ঘন ঘন আরাকান যাওয়া–আসা করতেন।আজমগড়ী হযরত চট্টগ্রাম শহরে তরিকতের সফরে আসলে হযরত শাহ ছাহেবের জেঠা জমিদারি এস্টেটের প্রধান হযরত মাওলানা ফয়েজ আহমদ উনার পীর আজমগড়ী হযরতকে চাকতাই থেকে বৃহদাকৃতির গদু নৌকা যোগে ঢলু নদীর গাটিয়াডাংগা ঘাটে পৌছান। তথা হতে ছোট নৌকায় আধুনগর নৌঘাটে নিয়ে যান। তথা হতে ঘোড়া/তাঞ্জান করে চুনতীর হযরত শাহ ছাহেব রহ. এর পৈতৃক বাড়িতে পৌছেন।সে সুবাদে এ সময় চুনতির শাহ সাহেব (রহ.) আরাকানে ভারতীয় উত্তর প্রদেশের মহান সূফী দরবেশ পীর হযরত আলহাজ্ব শাহ মাওলানা হামেদ হাসান আলভী (রহ.)’র মোলাকাত পান এবং আজমগড়ী হযরতের সুদৃষ্টি পেতে থাকেন। এক পর্যায়ে শাহ সাহেব উনার নিকট মুরিদ হন।

হযরত শাহ ছাহেব ছিলেন অসাধারণ স্মৃতিশক্তির অধিকারী। দেশ বিদেশের প্রখ্যাত আলেমগণ যখনই তার সান্নিধ্যে আসতেন ওনার কোরআন হাদীসের আলোচনা শুনে মুগ্ধ হয়ে যেতেন। হযরত শাহ ছাহেব কেবলা আরাকানে থাকা অবস্থায় শবে কদরের রাতে ফানাফির রাসূল হিসেবে নিজেকে নিজে হারিয়ে ফেলেন। দীর্ঘ প্রায় ৩৭ বছর পাহাড়ে পর্বতে লোকালয়ে বিচরণ করতে থাকেন রাত দিন এবং এই বলে নিম্নলিখিত পঙক্তি আউড়াতে থাকতেনঃ

হাম মাজারে মুহাম্মদ (ﷺ) পে মর জায়েঙ্গে, জিন্দেগি মে য়াহি কাম কর জায়েঙ্গে। (অর্থাৎ) হযরত মুহাম্মদ (স.)’র উদ্দেশ্যে আমার জীবন উৎসর্গীত, সারা জীবন তার ধ্যানেই আমি থাকব নিয়োজিত।https://www.chatgarsangbad.net/chunati-hazrat-shah-saheb-and-his-achievements/


উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শর্ষিনা দরবারের বর্তমান গদ্দিনসীন পীর হযরত মাওলানা শাহ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ সাহেব (https://bn.wikipedia.org/wiki/ছারছিনা_দরবার_শরীফ) জ্যেষ্ঠ এবং বিশিষ্ট আলেমে দীন এবং বহু গ্রন্থের খ্যাতনামা লেখক ডক্টর আ.ন.ম. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ.(https://bn.wikipedia.org/wiki/খোন্দকার_আব্দুল্লাহ_জাহাঙ্গীর) সেজ জামাতা এবং ফুরফুরা দরবারের বর্তমান গদ্দিনসীন পীর হযরতুল আল্লাম শাইখ আবু বকর আবদুল হাই মিশকাত সিদ্দিকী আল কুরাইশী হাফিজাহুল্লাহ (www.furfura.com) পীর সাহেবের জ্যেষ্ঠ পুত্র হন।

ফুরফুরা দরবারঃ হুগলি, ভারত থেকে বাংলাদেশে বাবল ইসলাম (ইসলামের প্রবেশদ্বার) ইসলামাবাদ চট্টগ্রাম

ফুরফুরা দরবার বা সিলসিলা-ই-ফুরফুরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলায় অবস্থিত একটি ইসলাম ধর্মীয় দরবার ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৬১ সালে হুগলি জেলার হ্যান্ড বুক (ইংরেজি: Hooghly district hand book) নামক গ্রন্থে ও ১৯৭২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার থেকে প্রকাশিত পশ্চিমবঙ্গ জেলা গ্যাজেটে (ইংরেজি: West Bengal district gazetters; Hooghly) by অমিয় কুমার বাগচী মুসলিমদের ধর্মীয়স্থান নামে অভিহিত করেছেন।(সূত্রঃ সুধীর কুমার মিত্র (১৯৯১)। হুগলি জেলার ইতিহাস ও বঙ্গসমাজ। ৭৮/১, গান্ধী রোড, কোলকাতা: মন্ডল বুক হাউস। পৃষ্ঠা ১৩০১। ↑ সৈয়দ মোঃ বাহাউদ্দিন (২০১৭)। যুগ সংস্কারক শাহ আবু বকর সিদ্দিকী। আরামবাগ, হুগলি )।

জন শ্রুতি রয়েছে, এটি রাজস্থানের আজমির শরীফের পরেই দেশের দ্বিতীয় সবচেয়ে সন্মানিত ও উল্লেখযোগ্য স্থান।[সূত্রঃ ↑ hindu, the (১৭ জানুয়ারি ২০২১)। "The Hindu e-Paper Today: ePaper replica of the print newspaper"। epaper.thehindu.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-১৮।

ইসালে সওয়াব মাহফিলের সময়ে এটি প্রচুর সংখ্যক ধার্মিক মানুষদের আকৃষ্ট করে।[ সূত্রঃ "West Bengal Tourism Policy, 2008"। Fairs and Festivals Tourism। Government of West Bengal, Department of Tourism।]

ফুরফুরা দরবারের প্রতিষ্ঠাতা মুজাদ্দেদে জামান হযরত আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ

ফুরফুরা গ্রামের অস্তিত্ব বহু পূর্ব থেকে থাকলেও এই দরবার প্রতিষ্ঠা করেন পীর আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ, মূলত তিনি সিলসিলা-ই-ফুরফুরা দরবারের প্রতিষ্ঠাতা [↑ Choudhury, Dewan Nurul Anwar Hussain (২০১২)। "Siddiqi, Abdul Hai"। Islam, Sirajul; Jamal, Ahmed A.। Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (Second সংস্করণ)। Asiatic Society of Bangladesh।। তাঁকে হিজরী চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ বলা হয়।

আনুমানিক ১৯০০ সালের দিকে এই দরবার প্রতিষ্ঠা হয়। মুজাদ্দেদে জামান রহিমাহুমুল্লাহর অবর্তমানে এই দরবার শরীফের মূল ব্যক্তিত্ব ছিলেন পীর আবু বকর সিদ্দিকী রহঃ এর পাঁচ সাহেবজাদা যথাঃ

১. শাইখুল ইসলাম হযরত মাওলানা আবদুল হাই সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ

২. আল্লামা আবু জাফর সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ

৩. আল্লামা আবদুল কাদের সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ ৪. আল্লামা নাজমুস সায়াদাত সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ ও

৫. আল্লামা জুলফিকার আলী সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ।

ইনারা সবাই তদীয় বুজুর্গ পিতার-মুজাদ্দেদে জামান রপীর আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ খেলাফত পেয়েছিল, এবং পীর ছিলেন। ইনারা দুই বাংলার বিভিন্ন স্থানে গমন করে ইসলাম প্রচার করেছেন এবং সাধারণ জনতাকে মুরিদ বানিয়ে ইসলামী শরাহ-শরীয়ত এবং ইলমে তাসাউফ শিক্ষা দিয়েছেন।

এমন জীবন তুমি করিবে গঠন মরণে হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভূবন

মুজাদ্দেদে জামান ফরফুরার পীর আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহর জ্যেষ্ঠপুত্র হচ্ছেন শাইখুল ইসলাম হযরত মাওলানা আবদুল হাই সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ। উনার বড় সাহেবজাদা হচ্ছেনঃ হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ-যিনি শতধা বিভক্ত জাতির মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠায় এমন জীবন গঠন করে গেছেন মৃত্যুর পর অনেকে দেখেছেন হাস্যোজ্জ্ল্বল জ্যোতির্ময় নূরানী চেহারা আর কেঁদেছিলেন দলমত নির্বিশেষে সকল স্তরের মুরীদীন, মুহেব্বীন, মুতাআল্লেক্বীন, মুতাআকেদীন, জাকেরিন,সাকেরিনসহ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বের অগণিত ভক্ত-অনুরক্তবৃন্দ।

শোকার্ভ ভগ্ন হৃদয়ে আগত হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহর নামাযে জানাযায় দলমত নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক,অরাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ,সাবেক প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, সচিব, দেশ বরেণ্য ওলামায়ে কেরাম, পীর মাশায়েখ,সরকারী ও বেসরকারী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন।

তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হচ্ছেনঃ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতীব হযরত মাওলানা উবায়দুল হক, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের নির্বাহী সভাপতি ও মদীনা সম্পাদক হযরত মাওলানা মুহিউদ্দিন খান, জামাআতে ইসলামীর আমীর ও সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, জামাআতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মুজাহিদ, আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী খ.ম.জাহাঙ্গীর,বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রেসিডেন্ট এল.ডি.পি. সভাপতি ডা.বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ঢাকার মেয়র বি.এন.পি.নেতা জনাব সাদেক হোসেন খোকা, জামাআতে ইসলামীর উপদেষ্টা অধ্যাপক গোলাম আযম, জমিয়তুল মোদাররেসিনের মহাসচিব মাওলানা সাব্বির আহমাদ মোমতাজী, চরমোনাইর মুজাহিদ কমিটির নায়েবে আমীর মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ও যুগ্ম মহাসচিব যথাক্রমে মাওলানা জাফরুল্লাহ খান ও হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মহাসচিব ও সাবেক এম.পি. মুফতি মুহাম্মাদ ওয়াক্কাস, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের মাওলানা ইসা শাহেদী, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের পক্ষে মাও. আবু জাফর ও অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন্দ, ছারছীনার পীর সাহেবের পক্ষে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. আমজাদ হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক এম.পি. মকবুল হোসেন, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, ইলিয়াস মোল্লা, বি.এন.পি. নেতা সাবেক এম.পি, এস.এ. খালেক, খেলাফত মজলিসের আমীর মাও. মোহাম্মাদ ইসহাক আলী, মহাসচিব আহাম্মদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের (শায়খুল হাদীস মাও. আজিজুল হক) নেতা সাবেক এম.পি, শহিদুল ইসলাম, তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় মুরব্বী মাওলানা মোজাম্মেল হক, মিশনারী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিচারপতি আব্দুর রউফ, মিরপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কমিশনারবৃন্দ, মুসলিম লীগের নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট নুরুল হক মজুমদার, মসজিদ মিশনের সভাপতি মাও. যয়নুল আবেদীন, সাবেক রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম খান, প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ মাও. আবুল কালাম আযাদ প্রমুখ। (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাস, পৃষ্ঠা ৩৬১-৩৬২)।

ফুরফুরা দরবারের গদ্দীনশীন পীর মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশীর জীবন-জিন্দেগীতে বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় বহুমাত্রিক প্রভাব রয়েছে প্রসঙ্গে

ফুরফুরা দরবারের গদ্দীনশীন পীর আমিরুল ইত্তেহাদ, হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহর জীবন-জিন্দেগীতে বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় বহুমাত্রিক প্রভাব রয়েছে। যথাঃ ১) জীবৎকালে ২) ইন্তেকালের পর ৩) দাফন পূর্বে এবং ৩) দাফর পরবর্তী।

১) জীবৎকালেঃ জীবিত থাকাবস্থায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ঈমান, ইসলাম সম্পর্কিত সমসাময়িক ঘটনাবলীর উপর জাতীয় পত্রপত্রিকায় মুসলিম উম্মাহ প্রতি হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহর দিক-নির্দেশনামূলক প্রায়শঃ ইশতেহার, সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হতো।

২) ইন্তেকালের পরঃ ইন্তেকালের পর জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, প্রথম আলো, দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক সংগ্রাম, দৈনিক সংবাদ, কালের কন্ঠ, যুগান্তর, বাংলা বাজার, আমার দেশ, মানব জীবন, নয়া দিগন্ত, খবরপত্র, জনকন্ঠ, দিনকাল, Bangladesh Observer, The Independent প্রভৃতি পত্রপত্রিকায় বৃহস্পতিবার ২১ ডিসেম্বর, ২০০৬ তারিখ ইন্তেকালের শোক সংবাদ, জুমাবার ২২ ডিসেম্বর, ২০০৬ তারিখ দাফন সংক্রান্ত সংবাদ এবং শনিবার ২৩ ডিসেম্বর, ২০০৬ তারিখ দৈনিক ইনকিলাবসহ কতিপয় পত্রিকায় দাফন পরবর্তী সংবাদ প্রকাশিত হয়।(সূত্রঃ সংবাদপত্রের পাতায় ফুরফুরার পীর হযরত আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী (রহঃ): প্রকাশনায়: কুরআন হাদীস রিসার্চ সেন্টার, ইশা’আতে ইসলাম কুতুবখানা (ফুরফুরার প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান), মার্কাজে ইশা’আতে ইসলাম, ২/২, দারুস সালাম, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ, পৃষ্ঠাঃ ৫২১-৫৬০)।