কুন্দ
কুন্দ ভারত উপমহাদেশের প্রজাতি। এর বৈজ্ঞানিক নাম: Jasminum multiflorum এবং ইংরেজি নাম: winter jasmine, Indian jasmine, downy jasmine, and star jasmine. কুন্দ Oleaceae পরিবারের Jasminum গণের চিরসবুজ উদ্ভিদ।
কুন্দ Jasminum multiflorum | |
---|---|
![]() | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
বিভাগ: | Tracheophyta |
শ্রেণী: | Magnoliopsida |
বর্গ: | Lamiales |
পরিবার: | Oleaceae |
গণ: | Jasminum |
প্রজাতি: | Jasminum multiflorum |
দ্বিপদী নাম | |
Jasminum multiflorum (Burm. f.) Andrews | |
প্রতিশব্দ | |

বিবরণ সম্পাদনা
লতানো ধরনের চিরসবুজ ঝোপ। পাতা ও কচি ডাল রোমশ। পাতা একক, ৩-৬ সেন্টিমিটার লম্বা, উপর মসৃণ, নিচ রোমশ। বেশি ফুল ফোটে শীত, বসন্ত ও গ্রীষ্মে। চারপাশে ছড়িয়েপড়া ছোট ছোট ডালে গুচ্ছ গুচ্ছ সাদা রঙের সিঙ্গল বা ডাবল ফুলগুলো ৩ সেন্টিমিটার চওড়া। দলনলের আগায় ৭ থেকে ৯টি পাপড়ি থাকে, পাপড়ির আগা চোখা বা ভোতা দুরকমই হতে পারে। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Jasminum pubescens। এরা গন্ধহীন। Jasminum rubescens প্রজাতির ফুলের পাপড়ির কিনার গোলাপি। এরা সুগন্ধি। বংশবৃদ্ধি কলমে, শিকড় থেকেও চারা গজায়।
সাহিত্যে কুন্দ সম্পাদনা
অনেকেই কুন্দ ফুল চেনেন না। কেউ কেউ আবার ভুল করে বেলিফুলও মনে করেন। কারণ বেলি ফুল ও পাতার সঙ্গে এর অনেক সাদৃশ্য। কুন্দ এ অঞ্চলের প্রাচীন ফুল। তাই এর শুভ্র রঙ নিয়ে প্রাচীনযুগে কবিরা কাব্য করেছেন।
বিপ্রদাশ বড়ুয়া ‘নগরে নিসর্গ’ গ্রন্থে লিখেছেন—
‘অনুরাগের রঙ লাল, পাপ ও অধর্মের রূপ কালো বা মলিন।
যশ, খ্যাতি ও দাঁতের রঙ শুভ্র।
কেমন শুভ্র? কুন্দনন্দিত সাদা।’
একারণে কথায় বলে কুন্দনন্দিত শোভা। কবিরা বলেছেন, কুন্দ কুসুমদশনা। এভাবেই কুন্দ যুগে যুগে অলংকৃত ও বিশেষায়িত হয়েছে।
এছাড়াও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর 'সহজ পাঠ' দ্বিতীয় ভাগের চতুর্থ পাঠে লিখেছেন-
"তাঁর ঘরে সুন্দর দেখে ফুলদানি রেখো। তাতে কুন্দফুল থাকবে আর আকন্দ থাকবে।"
কুন্দ সাধারণত ঢাকার পরিকল্পিত বাগানগুলোতেই বেশি দেখা যায়। সে তুলনায় সাধারণ বাগান ও গ্রামে কম দেখা যায়। ঢাকায় রমনাপার্ক, নার্সারি, শিশু একাডেমীর বাগান, বলধা গার্ডেন ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে দেখা যায়। আমাদের দেশে সাধারণত দু’ধরনের কুন্দ দেখা যায়। একটি সুগন্ধি, অন্যটি গন্ধহীন।
বিস্তৃতি সম্পাদনা
এটি ভারত, নেপাল, ভুটান, লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম দেশসমূহে পাওয়া যায়। গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে এর ব্যাপকভাবে চাষ হয়।এই প্রজাতির ফুল বেশ আকর্ষণীয় ও সুগন্ধের জন্য পরিচিত।[১][২][৩][৪]
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ "Jasminum multiflorum"। জার্মপ্লাজম রিসোর্স ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (জিআরআইএন)। কৃষি গবেষণা পরিসেবা (এআরএস), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২।
- ↑ Kew World Checklist of Selected Plant Families, Jasminum multiflorum
- ↑ "Jasminum multiflorum"। Australian Plant Name Index (APNI), IBIS database। Centre for Plant Biodiversity Research, Australian Government, Canberra। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২।
- ↑ Biota of North America Program, Jasminum multiflorum