কিমবার্লি, উত্তর অন্তরীপ

কিমবার্লি হ'ল দক্ষিণ আফ্রিকার উত্তর অন্তরীপ প্রদেশে অবস্থিত রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর। শহরটি ভাল এবং অরেঞ্জ নদীর সঙ্গমস্থল থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। অতীত হীরার খনি এবং দ্বিতীয় অ্যাংলো-বোয়ার যুদ্ধ এর সময় অবরোধ এর কারণে শহরটির যথেষ্ট ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে। ব্রিটিশ ব্যবসায়ী সিসিল রোডস এবং বার্নি বার্নাতোর সৌভাগ্যের উন্মেষ এই কিমবার্লিতেই ঘটেছিল। খনির শহরের প্রথম দিনগুলিতে রোডস ডি বিয়ারস নামের প্রখ্যাত হীরক সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

কিমবার্লি
বিগ হোল এর উপর থেকে দেখা শহরের কেন্দ্র
বিগ হোল এর উপর থেকে দেখা শহরের কেন্দ্র
স্থানাঙ্ক: ২৮°৪৪′৩১″ দক্ষিণ ২৪°৪৬′১৯″ পূর্ব / ২৮.৭৪২° দক্ষিণ ২৪.৭৭২° পূর্ব / -28.742; 24.772
দেশদক্ষিণ আফ্রিকা
প্রদেশউত্তর অন্তরীপ
জেলাফ্রান্সিস বার্ড
পৌরসভাসল প্লাটজে
প্রতিষ্ঠিত৫ জুলাই ১৮৭৩
সরকার
 • মেয়রপ্যাট্রিক ম্যাবিলো (এএনসি)
আয়তন[১]
 • মোট১৬৪.৩ বর্গকিমি (৬৩.৪ বর্গমাইল)
উচ্চতা১,১৮৪ মিটার (৩,৮৮৫ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট২২,৫১,১৬০
 • জনঘনত্ব১৪,০০০/বর্গকিমি (৩৫,০০০/বর্গমাইল)
বর্ণগত (২০১১)[১]
 • কৃষ্ণ আফ্রিকান৬৩.১%
 • বর্ণসম্পন্ন২৬.৮%
 • ভারতীয়/এশীয়১.২%
 • সাদা৮.০%
 • অন্যান্য০.৯%
মাতৃভাষা (২০১১)[১]
 • আফ্রিকান্স৪৩.২%
 • সোয়ানা৩৫.৮%
 • ইংরেজি৮.৭%
 • খোসা৬.০%
 • অন্যান্য৬.৩%
সময় অঞ্চলএসএএসটি (ইউটিসি+২)
পোস্টাল কোড (রাস্তা)৮৩০১
পিও বাক্স৮৩০০
এরিয়া কোড০৫৩

১৮৮২ সালের ২ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ গোলার্ধের প্রথম এবং আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ায় অবস্থিত ফিলাডেলফিয়ার পরে বিশ্বের দ্বিতীয় শহর হিসাবে কিমবার্লিতে বৈদ্যুতিক স্ট্রিট লাইট এর পরিকাঠামো একীভূত করা হয়েছিল। আফ্রিকার প্রথম স্টক এক্সচেঞ্জটিও ১৮৮১ সালের প্রথম দিকে কিমবার্লিতেই নির্মিত হয়েছিল। [২]

ইতিহাস সম্পাদনা

হীরা আবিষ্কার সম্পাদনা

১৮৬৬ সালে ইরাসমাস জ্যাকবস অরেঞ্জ নদীর তীরে একটি ছোট উজ্জ্বল নুড়ি পেয়েছিলেন। সেই স্থানটি ছিল হোপটাউন এর কাছে স্থানীয় গ্রিকোয়াদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া তাঁর বাবার খামার দে কালক। তিনি তাঁর বাবাকে নুড়িটি দেখানোর পরে তাঁর বাবা সেটি বিক্রি করে দেন। [৩]:১৬ নুড়িটি জ্যাকবসের বাবার কাছ থেকে শ্যাচল ভ্যান নিয়েকের্ক কিনে নেওয়ার পরে তিনি আবার সেটি বিক্রি করে দেন। ইতিমধ্যে এটি যে একটি ২১.২৫-ক্যারেট (৪.৩ গ্রাম) হীরা তা প্রমাণ হয়ে যায় এবং সেটি ইউরেকা নামে পরিচিতি লাভ করে। এর তিন বছর পরে ১৮৬৯ সালে আর একটি ৮৩.৫-ক্যারেট (১৬.৭ গ্রাম) হীরা (২৯°৩′ দক্ষিণ ২৩°৫৮′ পূর্ব / ২৯.০৫০° দক্ষিণ ২৩.৯৬৭° পূর্ব / -29.050; 23.967) এর কাছাকাছি এক স্থানে পাওয়া যায়। এটি দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা হিসাবে পরিচিত হয়েছিল। [৪][৫] এই হীরাটি ভ্যান নিয়েকের্ক £১১,২০০ ডলারে বিক্রি করেছিল এবং পরে লন্ডনের বাজারে সেটি আবার £২৫,০০০ ডলারে বিক্রি হয়েছিল। [৩]

 
কোলেসবার্গ কোপজে প্রসপেক্টর (মূল্যবান খনিজের সন্ধানে ভ্রমণকারী)-এর ফ্লিটউড রাওস্টর্নের "রেড ক্যাপ পার্টি

হেনরি রিচার্ড গিডি বর্ণনা করেছিলেন যে কীভাবে প্রসপেক্টর (মূল্যবান খনিজের সন্ধানে ভ্রমণকারী) ফ্লিটউড রাওস্টর্নের "রেড ক্যাপ পার্টি" এর রাঁধুনী এসাউ দামোয়েনসে (বা ডেমন) কোলসবার্গ কোপজে-এ ১৮৭১ সালে হীরা পেয়েছিলেন। সেখানে তাঁকে শাস্তি হিসাবে খনন করার জন্য পাঠানো হয়েছিল।[৬] রাওস্টর্ন এই খবরটি নিকটস্থ খননকারী ডি বিয়ার ভাইদের কাছে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর আগমন ত্বড়িৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। ইতিহাসবিদ ব্রায়ান রবার্টস বলেছিলেন যে সেটি ছিল যেন কার্যত একটি পদচারণা। এক মাসের মধ্যে ৮০০ দাবীদার ঢিবিটিতে হাজির হয় এবং দু'তিন হাজার লোক উন্মত্তভাবে কাজ শুরু করে দেয়। মাটি সরিয়ে জমিটিকে নামিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে ঢিবির স্থানটি পরিণত হয় খনিতে। সময়ের সাথে সাথে সেটিই হয়ে উঠল বিশ্বখ্যাত কিমবার্লি খনি যা বিগ হোল নামেও পরিচিত। [৭]:৪৫–৪৯

কেপ কলোনি, ট্রান্সভ্যাল, অরেঞ্জ ফ্রি স্টেট এবং গ্রিকোয়া নেতা নিকোলাস ওয়াটারবোয়ার সকলেই হীরার ক্ষেত্রগুলি দাবী করেন। ফ্রি স্টেট বোয়ের বিশেষ করে এই অঞ্চলটি চেয়েছিল। কারণ এটি অরেঞ্জ এবং ভাল নদী এর দ্বারা গঠিত প্রাকৃতিক সীমানার অভ্যন্তরে ছিল। নাটাল এর গভর্নর কেট অ্যাওয়ার্ড মধ্যস্থতার তদারকির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি নিজেকে ব্রিটিশ সুরক্ষার অধীনে রেখে ওয়াটারবোয়ারের পক্ষে গেলেন।[৮] ফলে গ্রিকুয়াল্যান্ড পশ্চিম নামে পরিচিত এই অঞ্চলটি ১৮ অক্টোবর ১৮৭১ সালে সরকারিভাবে অধিগৃহীত হয়েছিল।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Sum of the Main Places Roodepan, Galeshewe and Kimberley from Census 2011.
  2. "17 Things You Didn't Know Were Invented By South Africans"AFKInsider (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০২-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৯-০৯ 
  3. Meredith, Martin (২০০৭)। Diamonds, Gold and War: The Making of South Africa। Simon & Schuster। আইএসবিএন 978-0-7432-8614-5 
  4. Roberts, Brian (১৯৭২)। The Diamond Magnates। London: Hamilton। পৃষ্ঠা 5আইএসবিএন 0241021774 
  5. Wilson, Arthur Norman (১৯৮২)। Diamonds: From Birth to Eternity। Gemological Institute of America। পৃষ্ঠা 135। 
  6. Chilvers, Henry (১৯৩৯)। The Story of De Beers। Cassell। পৃষ্ঠা 23–24। 
  7. Roberts, Brian (১৯৭৬)। Kimberley: Turbulent City। D. Philip। আইএসবিএন 978-0-949968-62-3 
  8. Ralph, Julia (১৯০০)। Towards Pretoria; a record of the war between Briton and Boer, to the relief of Kimberley। Frederick A. Stokes। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

  • The Kimberley City Portal - An on-line directory for tourists, travellers and residents of Kimberley. Detailed listings of business, attractions, activities and events with photos, contact information and geo-locations.
  • "Diamond Mines of South Africa" by Gardner Williams (General manager De Beers), Chapter 15 (25-page history + images).