কালুরায় বাংলার একজন লৌকিক দেবতা।কোনও কোনও মন্দিরে তিন ব্যাঘ্র-দেবদেবী বনবিবি, দক্ষিণরায় ও কালুরায় একসঙ্গে পূজিত হন।[১] কুমিরের হাত থেকে রক্ষার জন্য দেওয়া হয় কালু রায়ের পূজা। সুন্দরবনে জল ও বনজীবী মানুষেরা তার পূজা করে।সুন্দরবনের কালু রায় ও রাঢ়ের ধর্মঠাকুর (যারও আরেক নাম কালু রায়) একনয়।

মূর্তি সম্পাদনা

দক্ষিণ রায়ের মতো তার মূর্তি পুরোপুরি মানবীয়। তবে পোশাক পৌরাণিক দেবতার মতো। তার হাতে টাঙ্গি ও ঢাল, কোমরবন্ধে নানা অস্ত্র ঝোলানো। পীঠে তীর-ধনুক।

পূজা সম্পাদনা

আরণ্যক দেবতার প্রাচীন পূজা পদ্ধতি মেনে তার পূজা করা হয়। তার পূজায় ঝাউফুলের নৈবেদ্য দেয়া হয়।

উপাখ্যান সম্পাদনা

লোককাহিনী অনুসারে, স্থানীয় হিন্দুদের ইসলামে ধর্মান্তরিত করতে গিয়ে বহুবার হিন্দু দেবদেবীদের সঙ্গে পীর বড়খাঁ গাজীর বিরোধ ও সংঘর্ষ ঘটেছে। আঞ্চলিক প্রভুত্বের অধিকার নিয়ে সুন্দরবনের হিন্দু ব্যাঘ্রদেবতা দক্ষিণ রায়ের সঙ্গে তার প্রবল যুদ্ধ হয়।গাজী ও দক্ষিণরায়ের যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, কুমীর-দেবতা কালুরায় হিজলীর শ্রদ্ধা-সম্মানের অধিকার লাভ করেন।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. বাংলার লোকদেবতা ও সমাজসংস্কৃতি, দেবব্রত নস্কর, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম সংস্করণ (অক্টোবর, ২০১৮), পৃ. ৪১
  2. Baṅgīẏa lokasaṃskr̥tikosha। Cakrabartī, Baruṇakumāra.। Kalikātā: Aparṇā Buka Ḍisṭribuṭārsa। ১৯৯৫। আইএসবিএন 818603613Xওসিএলসি 35128024