কাফির লেবু
কাফির লেবু যাকে ইংরেজিতে অনেকসময় ম্যাকরুট লাইম[৩] অথবা মরিশাস পাপেডা [৪] নামে ডাকা হয়, এক ধরনের লেবুজাতীয় ফল যার আদিনিবাস হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ফিলিপাইন সহ উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চল। এর ফল এবং পাতা দক্ষিণ এশীয় রন্ধনশৈলীতে এবং নির্যাস তেল সুগন্ধি শিল্পে ব্যবহৃত হয়। এই গাছের পাতা চটকালে লেবুর গন্ধ পাওয়া যায়।
কাফির লেবু Citrus hystrix | |
---|---|
![]() | |
বিক্রিযোগ্য কাফির লেবু | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
শ্রেণীবিহীন: | Angiosperms |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Rosids |
বর্গ: | Sapindales |
পরিবার: | Rutaceae |
গণ: | Citrus |
প্রজাতি: | C. hystrix |
দ্বিপদী নাম | |
Citrus hystrix অগাস্টিন পিরামুস দে ক্যানদল্লে।[১] | |
প্রতিশব্দ[২] | |
|
নামকরণসম্পাদনা
ইংরেজিভাষায় এই লেবুকে কাফির লাইম, ম্যাকরুট লাইম বলে ডাকা হয়। কাফির নামকরণের উৎস অনিরুপিত, সাধারণত মুসলমানগণ অমুসলিম বোঝাতে কাফির শব্দ ব্যবহার করে থাকে। আর এই লেবুটি অমুসলিম প্রধান অঞ্চলে জন্মে থাকে বলে এরকম নামকরণ হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু এর পেছনে কোন জোরালো প্রমাণ নেই।
এর বৈজ্ঞানিক নাম সিট্রাস হিস্ট্রিক্স। এটা ইন্দোনেশিয়ায় জেরুক লিমাও এবং ফিলিপাইনে কাবুয়াও নামে পরিচিত। লাগুনা প্রদেশের কাবুয়াও শহরের নাম এই ফলের নামে নামকরণ করা হয়েছে।
নামের বিতর্কসম্পাদনা
বর্ণনাসম্পাদনা
কাফির লেবুর গাছ কাঁটাযুক্ত ঝোঁপজাতীয়, ৬ থেকে ৩৫ ফুট উঁচু, সুগন্ধিত, বিশেষ আকৃতির পাতাবিশিষ্ট। ফলের খোসা অমসৃণ, কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পরিপক্ব দশায় হলুদ রঙের হয়। বাহ্যিক চেহারা এবং ছোট আকারের কারণে একে সহজে আলাদা করা যায়। ফলের প্রস্থ ৪ সেন্টিমিটার।
ব্যবহারসম্পাদনা
রন্ধনশৈলীসম্পাদনা
এই গাছের সব থেকে বহুল ব্যবহৃত অংশ হলো পাতা যা তাজা, শুকনো বা হিমায়িত অবস্থায় ব্যবহার করা হয়। থাই ও লাও রন্ধনশৈলীতে টম ইয়ামের মত খাবার প্রস্তুতিতে পাতা ব্যবহৃত হয়। কম্বোডীয় রন্ধনশৈলীতে কুরুয়েং তৈরিতে পাতা ব্যবহৃত হয়। ভিয়েতনামী রন্ধনশৈলীতে মুরগী রান্নায় স্বাদ বাড়াতে এবং শামুক সিদ্ধের সময় অস্বস্তিকর গন্ধ দূর করতে কাফির লেবুর পাতা ব্যবহার করা হয়।
ইন্দোনেশীয় রন্ধনশৈলীতে (বিশেষ করে বালি রন্ধনশৈলী ও জাভা রন্ধনশৈলী) সত আয়াম খাবার প্রস্তুতিতে এবং মুরগী ও মাছের তরকারিতে ইন্দোনেশীয় তেজপাতার সাথে কাফির লেবুর পাতা ব্যবহার করা হয়। দক্ষিণ ভারতীয় রন্ধনশৈলী, মালয়েশিয় রন্ধনশৈলী এবং বর্মী রন্ধনশৈলীতে কাফির লেবুর পাতা ব্যবহৃত হয়।
লাও এবং থাই তরকারির ঝোলে সুগন্ধি আনতে লেবুর খোসা ব্যবহার করা হয়। ক্রিয়োল রন্ধনশৈলীতে ফলের রস ব্যবহার করা হয়। কম্বোডীয় রন্ধনশৈলীতে পুরো ফলটিকে খাওয়ার জন্য ক্রিস্টালাইজ করা হয়।
ঔষধি গুণসম্পাদনা
কিছু এশীয় দেশে এই ফলের রস এবং খোসাবাটা প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যবহার করা হয়। শ্যাম্পু তে লেবুর রস ব্যবহার করা হয়। বিশ্বাস করা হয় এটা মাথার উকুন মেরে ফেলে।
অন্যান্যসম্পাদনা
থাইল্যান্ডে ফলের রস কাপড় ও চুলের পরিষ্কারক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কম্বোডিয়ায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে লেবুর টুকরো মেশানো পানি পরিবেশন করা হয়।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "TPL, treatment of Citrus hystrix DC."। The Plant List; Version 1. (published on the internet)। Royal Botanic Gardens, Kew and the Missouri Botanical Garden। ২০১০। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ৯, ২০১৩।
- ↑ The Plant List: A Working List of All Plant Species, সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০১৫
- ↑ D.J. Mabberley (১৯৯৭), "A classification for edible Citrus (Rutaceae)" (পিডিএফ), Telopea, 7 (2): 167–172, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৭
- ↑ GRIN। "Citrus hystrix DC."। Taxonomy for Plants। National Germplasm Resources Laboratory, Beltsville, Maryland: USDA, ARS, National Genetic Resources Program। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ৭, ২০১৪।