কানের খৈল
কানের খৈল (ইংরেজি: cerumen /səˈruːmɛn/) ডাক্তারি পরিভাষায় সেরুমেন। মানুষ এবং অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণির কর্ণকুহরে নিঃসৃত একপ্রকার হলুদাভ নিঃসরণ। কর্ণকুহরের বাইরের দিকের এক তৃতীয়াংশের দেওয়ালের পরিবর্তিত এপোক্রিন ঘর্মগ্রন্থি ও সেবাম গ্রন্থির মিশ্রিত ক্ষরণই সেরুমেন। একে সাধারণতঃ "কানের ময়লা" বলে ডাকা হলেও এর প্রয়োজীয় ভুমিকা আছে। এটি কর্ণকুহরের ত্বকের সুস্বাস্হ্য বজায় রাখে এবং ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, পোকামাকড় ও পানি হতে কানকে রক্ষা করে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে এর উপস্হিতি কর্ণকুহর আটকে দিয়ে কানের পর্দার উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং শ্রবণশক্তির হানি ঘটাতে পারে।[১]
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/f/f2/OhrenSchmalzBrocken.jpg/220px-OhrenSchmalzBrocken.jpg)
সচরাচর এই খৈল নরম আঠালো পদার্থের মতো। আঠালো অবস্খায় এটি কান থেকে এমনিতেই বেরিয়ে যায়। খাদ্য চিবিয়ে খাওয়ার সময় বা কথা বলার সময় চোয়ালের যে নড়াচড়া হয় তাতেই এই খৈল বহির্কণ থেকে বাইরের দিকে চলে আসে। এই প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে বহির্কর্ণের নালীতে অবস্খিত লোম। এই লোম ঝাড়ুর মতো করে বাইরের দিকে ঝেড়ে কানের ময়লাকে বের করে দেয়। স্বাভাবিক অবস্খায় কানের নরম আঠালো পরিষ্কার করার দরকার পরে না কারণ এটি এমনিতেই বের হয়ে যায়। তাছাড়া এটি কোনো সমস্যাও করে না। তবে এই খৈল অনেক সময় শক্ত হয়ে পড়ে এবং তখন সমস্যা দেখা দেয়।বিশেষ করে যাদের ত্বক কম তৈলাক্ত তাদের কানের খইল শক্ত হতে পারে। মাথায় যাদের খুশকি থাকে তাদের কানেও প্রচুর খৈল জমে। তবে খুশকির কারণে জমা খৈলের সাথে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জমা খৈলের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। সামান্য কিংবা অতিরিক্ত শক্ত খৈল কানে জমে কানে ব্যথা হয়। কারো কারো কান খৈল ভর্তি থাকে কিন্তু ব্যথা হয় না। এইসব ক্ষেত্রে পানিতে ডুব দিয়ে গোসল করার কারণে যখন কানে পানি ঢুকে যায়, তখন খৈল সেই পানি শুষে নেয়। পানি শুষে খৈল স্ফীত হয়ে বহিকর্ণের পথে চাপের সৃষ্টি করে। এর ফলেও কানে ব্যথার উদ্রেক হয়।[২]
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/5/5f/Earwax_on_swab.jpg/220px-Earwax_on_swab.jpg)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Earwax ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে at the American Hearing Research Foundation. Chicago, Illinois 2008.
- ↑ "ওয়াক্স বা কানের খৈল"। ২ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪।