কাজিরা নদী

রুয়ান্ডার নদী

কাজিরা নদী, যা আকাজিরা নদী বা আলেকজান্দ্রা নীল নামেও পরিচিত, একটি পূর্ব আফ্রিকান নদী। এটি নীল নদের উপরের পানির অংশ গঠন করে এবং এর সবচেয়ে দূরবর্তী উৎস থেকে পানি বহন করে।[১]:১৬৭

কাজিরা
আকাজিরা
রুসুমো জলপ্রপাতের নিকটে কাজিরা ও রুভুবু নদীর সমপ্রবাহ, রুয়ান্ডা/তাঞ্জানিয়া।
ভিক্টোরিয়া লেকের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কাজিরা নদীর মানচিত্র।
অবস্থান
দেশবুরুন্ডি
দেশরুয়ান্ডা
দেশতাঞ্জানিয়া
অঞ্চলকাজিরা অঞ্চল
দেশউগান্ডা
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
উৎস 
 • স্থানাঙ্ক২°২১′১৮″ দক্ষিণ ৩০°২২′২২″ পূর্ব / ২.৩৫৫০০° দক্ষিণ ৩০.৩৭২৭৮° পূর্ব / -2.35500; 30.37278
মিলনnear তাঞ্জানিয়াকা হ্রদ
 • অবস্থানবুরুন্ডি
মোহনা 
 • অবস্থান
ভিক্টোরিয়া হ্রদ
 • স্থানাঙ্ক
০°৫৬′৪১″ দক্ষিণ ৩১°৪৬′৩৬″ পূর্ব / ০.৯৪৪৭২° দক্ষিণ ৩১.৭৭৬৬৭° পূর্ব / -0.94472; 31.77667
দৈর্ঘ্য৪০০ কিমি (২৫০ মা)

কাজিরা নদীর অংশ বুরুন্ডিতে শুরু হয়, যা রুরু হ্রদ থেকে প্রবাহিত হয়। হ্রদ থেকে এটি রুয়ান্ডা-বুরুন্ডি এবং রুয়ান্ডা-তানজানিয়া সীমান্ত বরাবর পূর্ব দিকে রুভুবু নদীর সাথে মিলিত হয়। কাজিরার পানি এইভাবে দুটি প্রধান উপনদী দ্বারা সরবরাহ করা হয়, যার একটি রুয়ান্ডার নবরঙ্গ, যেটি রুরু হ্রদের উৎস, এবং অন্যটি বুরুন্ডির রুভুবু। এই দুই ফিডার নদীর মধ্যে কোনটি দীর্ঘ এবং কোনটি নীল নদের চূড়ান্ত উৎস তা অজানা। মিলনস্থল থেকে কাজিরা রুয়ান্ডা-তানজানিয়া সীমান্ত বরাবর উত্তরে, রুসুমো জলপ্রপাত এবং আকাজিরা জাতীয় উদ্যানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর তাঞ্জানিয়া-উগান্ডা সীমান্ত অনুসরণ করে এবং উগান্ডার ভিক্টোরিয়া হ্রদে খালি করে পূর্ব দিকে মোড় নেয়। ১৮৯৮ সালে রিচার্ড ক্যান্ডট কাজিরার উৎস আবিষ্কার করেন।[২]

নদীটি যে সব দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় তা বিশেষ করে রুয়ান্ডার ইতিহাসে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রদর্শিত হয়েছে। ১৮৯৪ সালে জার্মান গুস্তাভ অ্যাডলফ ফন গোটজেন রুয়ান্ডার ঔপনিবেশিক যুগের শুরু থেকে রুসুমো জলপ্রপাতে কাজিরা অতিক্রম করেন; এবং ১৯১৬ সালে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বেলজিয়ানরা জার্মানদের পরাজিত করে একই পথে রুয়ান্ডা প্রবেশ করে। ১৯৯৪ সালে ভিক্টোরিয়া হ্রদে রুয়ান্ডার গণহত্যা থেকে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য নদীটি আন্তর্জাতিকভাবে কুখ্যাতি অর্জন করে, যার ফলে উগান্ডার বিভিন্ন এলাকায় জরুরী অবস্থা জারি করা হয়, যেখানে এই মৃতদেহগুলো অবশেষে ধুয়ে যায়।

ভূগোল সম্পাদনা

কাজিরা বুরুন্ডিতে এসে ভিক্টোরিয়া হ্রদে প্রবাহিত হয়েছে। এটি হ্রদের বৃহত্তম একক প্রবাহ, বছরে প্রায় ৬.৪ বিলিয়ন ঘনমিটার পানি প্রবাহিত করে (হ্রদের প্রবাহের প্রায় ২৮ শতাংশ)। কাজিরা টাঙ্গানিকা হ্রদের উত্তরতম বিন্দুর কাছাকাছি রুভুভু এবং ন্যবারঙ্গের সমন্বয়ে গঠিত। এটি বুরুন্ডি-তানজানিয়া, রুয়ান্ডা-তানজানিয়া, বুরুন্ডি-রুয়ান্ডা এবং তানজানিয়া-উগান্ডা সীমান্তের কিছু অংশ গঠন করে। এটি উত্তর রুয়ান্ডার আকাজিরা জাতীয় উদ্যান এবং সেই সাথে তানজানিয়ার কাজিরা অঞ্চলের নাম থেকে এর নাম গ্রহণ করেছে। নদীর উপর রুসুমো জলপ্রপাত, রুয়ান্ডা এবং তানজানিয়ার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিং পয়েন্ট। এটা রুসুমো শহরের কাছে অবস্থিত।

মাছ সম্পাদনা

কাজিরা নদীর অববাহিকা মাছ সমৃদ্ধ। ২০০১ সালের হিসাবে, শুধুমাত্র রুয়ান্ডা অংশ থেকে অন্তত ৫৫ প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত এবং প্রকৃত সংখ্যা সম্ভবত আরও বেশি।[৩] উপরন্তু, অন্তত ১৫ টি বর্ণনা করা হয় নি এমন প্রজাতির হাপ্লোক্রোমিন সিক্লিড আছে যা নদী অববাহিকার উপরের অংশে কিছু হ্রদের স্থানীয় প্রজাতি।[৪] অনেক জলপ্রপাত এবং পানির দ্রুত গতির কারণে, কাজিরা নদী অববাহিকার বিভিন্ন অংশ পরিষ্কারভাবে পৃথক হয়েছে। পানির প্রবাহ এতোই বেশি যে এখামে মাছ ধরা প্রায় অসম্ভব।[৩][৫]

গণহত্যা সম্পাদনা

১৯৯৪ সালের রুয়ান্ডার গণহত্যার সময়, কাজিরা নদীকে মৃতদেহ নিষ্কাশন করতে ব্যবহার করা হয়। এসময় হাজার হাজার তুতসি এবং হুতু রাজনৈতিক মধ্যপন্থীদের নদীর তীরে হত্যা করা হয়। নদীটি ভিক্টোরিয়া হ্রদে নিহত মৃতদেহ নিয়ে আসে, যা উগান্ডায় একটি গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকির সৃষ্টি করে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Stanley, H.M., 1899, Through the Dark Continent, London: G. Newnes, আইএসবিএন ০৪৮৬২৫৬৬৭৭
  2. "Archived copy" (পিডিএফ)। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-২১ 
  3. De Vos, L; J. Snoeks; D.T. van den Audenaerde (২০০১)। "An Annotated Checklist of the Fishes of Rwanda (East Central Africa), With Historical Data on Introductions of Commercially Important Species"। Journal of East African Natural History90 (1): 41–68। ডিওআই:10.2982/0012-8317(2001)90[41:AACOTF]2.0.CO;2  
  4. Sayer, C.A.; L. Máiz-Tomé; W.R.T. Darwall (২০১৮)। Freshwater biodiversity in the Lake Victoria Basin: Guidance for species conservation, site protection, climate resilience and sustainable livelihoods। Cambridge, UK and Gland, Switzerland: IUCN। আইএসবিএন 9782831718965ডিওআই:10.2305/IUCN.CH.2018.RA.2.en  
  5. Berakhi, Robel Ogbaghebriel; Oyana, Tonny J.; Adu-Prah, Samuel (২০১৪-০৫-২৩)। "Land use and land cover change and its implications in Kagera river basin, East Africa"। African Geographical Review34 (3): 209–231। আইএসএসএন 1937-6812এসটুসিআইডি 153931262ডিওআই:10.1080/19376812.2014.912140