কমসলে নৃত্য ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের মাইসোর বা মহীশুর অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় লোকনৃত্য যা মাইসোর, চামরাজানগর এবং মান্ডা জেলায় বহু প্রচলিত।[১] ভগবান মহাদেশ্বরের পুরুষ উপাসকরা বিশু কমসলে নামক এক ধরনের নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে ভগবানের উপাসনা করে যার সাথে কমসলে নাচের গভীর সাদৃশ্য আছে।[২]

উৎপত্তি ও পরিবেশনা সম্পাদনা

কমসলে এক ধরনের ধাতুর তৈরি বাদ্যযন্ত্র। এর উৎপত্তির কথা পৌরাণিক কাহিনীতে পাওয়া যায়।[২] কমসলে এক জোড়া ছোট বৃত্তাকার ধাতব (তামা) চাকতি যার কেন্দ্রে সামান্য অভিক্ষেপ থাকে। এই দুই ধাতব চাকতিকে পরস্পর আঘাত করলে সুমধুর শব্দ উৎপন্ন হয়।[১]

স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে নৃত্যশিল্পীরা কমসলে হাতে নিয়ে নৃত্য পরিবেশনা করেন। ভজন/ভক্তিমূলক গান গেয়ে তারা ছন্দে ছন্দে নাচে এবং নাচের ফাঁকে ফাঁকে কমসলের দুই ধাতব চাকতিতে আঘাত হেনে সুরেলা শব্দ তৈরি করতে থাকে।[১] সাধারণত ১০ থেকে ১২ জন নর্তকের দল এই নৃত্য পরিবেশনায় অংশ নেন। কমসলে নৃত্যকে সাধারণত ঈশ্বর উপাসনার প্রতীক হিসাবে গন্য করা হয় ও নৃত্যে ব্যবহৃত সংগীত ঈশ্বরকে উৎসর্গ করে গাওয়া হয়।[১] কমসলে নৃত্য কর্নাটকের হালু কুরুবা সম্প্রদায়ের ভগবান মহাদেশ্বর শিবের উপাসনার ঐতিহ্যের সাথে গভীরভাবে যুক্ত।[২] চামরাজানগর জেলার হালু কুরুবা উপজাতির পুরুষরা কমসলে নৃত্যের জন্য সুপরিচিত।[১] মাইসোর শহরের বহির্ভাগে অবস্থিত মহাদেশ্বরের পার্বত্য মন্দিরে দেবতার উপাসনার এক অপরিহার্য অঙ্গ হিসাবে বহু শতাব্দী ধরে কমসলে নৃত্যের পরিবেশনা হয়ে আসছে। দীপাবলির সময়ে মহাদেশ্বরা মন্দিরে যে ৩ দিন ব্যাপী বার্ষিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয় তার এক গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ এই কমসলে নৃত্য পরিবেশনা।[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Kamsale dance" 
  2. "Kamsale Nrutya"