কমল থাপা

নেপালী রাজনীতিবিদ

কমল থাপা (নেপালি: कमल थापा; জন্ম ৪ আগস্ট ১৯৫৫) নেপাল সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং ফেডারেল বিষয়ক ও স্থানীয় উন্নয়ন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নেপালের রাজতান্ত্রিক দল রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির বর্তমান সভাপতিও। ২০০৬ সালে রাজা জ্ঞানেন্দ্রের প্রত্যক্ষ শাসনকালে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন যতদিন না পর্যন্ত নেপালি কংগ্রেস পার্টি এবং এর সহযোগী নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (একীকৃত মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)একীকৃত কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) দল সম্মিলিতভাবে গিরিজা প্রসাদ কোইরালার নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজাকে বাধ্য করেছিল। তিনি এবং তার দল গণভোটের মাধ্যমে নেপালে পুনরায় রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছিলেন। [২] থাপা দাবি করেছেন যে নেপালের কোনও রাজনৈতিক দল নেপালি জাতীয়তা রক্ষা করার সাহস পাচ্ছে না। তার ভাষ্যমতে: "এখন নেপালি সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় ঐক্য রক্ষা করার জন্য রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই একমাত্র উপায়।"[৩]

কমল থাপা
कमल थापा
উপ-প্রধানমন্ত্রী, ফেডারেল বিষয়ক এবং স্থানীয় উন্নয়ন মন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
৯ মার্চ ২০১৭ – ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
নেপালের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী[১]
কাজের মেয়াদ
১২ অক্টোবর ২০১৫ – ০১-০৮-২০১৬
নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
জুন ২০০৬ – এপ্রিল ২০০৭
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1955-08-04) ৪ আগস্ট ১৯৫৫ (বয়স ৬৮)
মকবানপুর জেলা, নেপাল
রাজনৈতিক দলরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি (আরপিপি)
বাসস্থানকাঠমান্ডু, নেপাল

তিনি রাজকীয় গণহত্যার পুনর্তদন্তের জন্য সরকারকেও চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন: “যারা এই গণহত্যার জন্য প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে দোষ দিচ্ছেন তারা এখন সরকারে ক্ষমতা গ্রহণ করছেন। দোষীদের সন্ধান করার জন্য আমি তাদেরকে চ্যালেঞ্জ জানাই।" [৪] সংবিধানের সময়োপযোগী ঘোষণা, লোডশেডিংয়ের মতো বর্তমান সমস্যার অবসান এবং বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও নতুন সংবিধানে গণভোটসহ কয়েকটি মূল বিষয় নিয়ে গণভোটের দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসাবে আরপিপি-এন ২২ ফেব্রুয়ারি কাজ বন্ধ বা ধর্মঘটের আয়োজন করেছিল। সাংবিধানিক রাজতন্ত্র, হিন্দু জাতীয়তাবাদ এবং মৈত্রীতন্ত্রও এসব দাবির অংশ ছিল।[৫]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

কমল থাপা মূলত গোদর থাপা কাজি বংশীয়। তার জন্ম ১৯৫৪ সালের ৪ আগস্টে নেপালের মকবানপুর জেলায়। তিনি নেপালে পেশাদার ক্রীড়া হিসাবে ফুটবলের বিকাশের সঙ্গে জড়িত অখিল নেপাল ফুটবল সংঘের (অল নেপাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন) সভাপতি গণেশ থাপার বড় ভাই।

প্রাথমিক কর্মজীবন সম্পাদনা

কমল থাপা নেপালের হয়ে জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক এবং টেবিল টেনিস খেলোয়াড়ও ছিলেন।

কামাল থাপা ১৯৭৩-১৯৭৪ সালে জাতীয় ছাত্র সংস্থার সভাপতি পদে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। ১৯৭৭ সালে তিনি নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় অধীভুক্ত বনায়ন ইনস্টিটিউটের রাজনৈতিক অর্থনীতি বিভাগের সহকারী প্রভাষক ছিলেন। তিনি ১৯৮০ সালে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি জাতীয় যুব পরিষেবা তহবিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন তিনি। পঞ্চায়েত শাসনামলেও তিনি মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।[৬]

তিনি ১৯৮৬-১৯৯০ এবং ১৯৯৫-১৯৯৮ মেয়াদে সংসদ সদস্য ছিলেন। এছাড়া ১৯৯২-২০০২ সালে রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির মুখপাত্র এবং ২০০৩ সালে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

প্রথমদিকে তিনি জাতীয় পর্যায়ের ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি অখিল নেপাল ফুটবল সংঘের (১৯৭৮–৮৭) সভাপতি এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সদস্য (১৯৭৭-১৯৮৭) হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের নির্বাহী সদস্যও (১৯৮২-১৯৯০) ছিলেন।

বর্তমানে তিনি নবগঠিত রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

রাজনৈতিক পেশা সম্পাদনা

রাজা জ্ঞানেন্দ্রের সাথে সম্পর্ক সম্পাদনা

কমল থাপা প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের সাথে সুসম্পর্ক রাখেন বলে জানা যায়, কারণ কমল থাপা সক্রিয়ভাবে শাহের অধীনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে সরকারে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু, নেপাল প্রজাতন্ত্র হওয়ার পরে জ্ঞানেন্দ্র শাহ এবং কমল থাপাকে কখনও প্রকাশ্যে একসঙ্গে দেখা যায়নি।

উপ-প্রধানমন্ত্রী সম্পাদনা

 
১৯ অক্টোবর, ২০১৫-তে নয়া দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে উপ-প্রধানমন্ত্রী শ্রী কমল থাপা

থাপা ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ সালে খড়গা প্রসাদ শর্মা অলির মন্ত্রিসভায় নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

 
১৮ অক্টোবর, ২০১৫-তে নয়াদিল্লিতে রাজনাথ সিংয়ের সাথে কমল থাপা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Binaj Gurubacharya (২০১৫-১০-১২)। "Nepal's new premier names protest group leaders as deputies"News.yahoo.com। ২০১৬-০৩-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-০১ 
  2. "2009 sees monarchy down but not out in Nepal"The Times of India। ৩০ ডিসেম্বর ২০০৯। ২৫ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১০ 
  3. "Nepal monarchy can only safeguard national identity: Kamal Thapa"The Telegraph। Nepal। ২৫ মার্চ ২০০৯। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১০ 
  4. "You searched for Govt days numbered: Thapa"The Himalayan Times। ২০১০-০২-২৪। ২০১২-০২-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-০১ 
  5. [১][অকার্যকর সংযোগ]
  6. "Cable: 04KATHMANDU408_a"Wikileaks.org। ২০১৬-০৮-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-০১