ঐকবাদনদল (ইংরেজি: Orchestra) পাশ্চাত্য শাস্ত্রীয় সঙ্গীত পরিবেশনের একটি সম্মিলিত বাদকদলকে বোঝায় যারা মোটামুটি আদর্শ কিছু অনুপাতে বিভিন্ন শ্রেণীর বাদ্যযন্ত্র যেমন বংশীযন্ত্র (ফ্লুট, ওবো, ক্লারিনেট, বাসুন, ইত্যাদি), কংসযন্ত্র (তূর্য বা ট্রাম্পেট, শিঙ্গা বা হর্ন, ট্রম্বোন, টিউবা), ততযন্ত্র (ভায়োলিন, ভিয়োলা, চেলো, বেস, ইত্যাদি), ঘাতযন্ত্র-আনদ্ধযন্ত্র (ঢোল, টিম্পানি তথা নহবত বা নাকাড়া, ত্রিভুজ, পিয়ানো, ইত্যাদি) বাজিয়ে থাকেন এবং পশ্চিমা গীতিনাট্য বা অপেরাতে সাহচর্য প্রদান করেন কিংবা ধ্রুপদী ঐকতানসংগীত (সিম্ফনি) ও ঐকতানবাদনের অন্যান্য পশ্চিমা রূপগুলি বাদন করেন। কিছু আধুনিক সঙ্গীতরচনা পরিবেশন করার জন্য মাঝে মধ্যে অন্যান্য যন্ত্রপাতি যেমন পিয়ানো এবং সেলেস্তা পঞ্চম সারিকা বিভাগে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সপ্তদশ শতকের প্রথমদিক থেকে ঐকবাদনদলের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকে।

জালিসকো ফিলহারমোনিক ঐকবাদনদল।
সজ়ক্জ়েসিং, পোল্যান্ডে অবস্থিত ঐকবাদনদলের সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য একটি আধুনিক মিলনায়তন।

ঐকবাদনদলের প্রকারভেদ আছে। ঐকতানিক (সিম্ফনীয়) ঐকবাদনদলে সাধারণত ৯০-এর বেশি বাদক থাকে, যারা কোনও বিস্তৃত সঙ্গীতকর্ম পরিবেশন করেন। কক্ষীয় ঐকবাদনদল (চেম্বার অর্কেস্ট্রা) অপেক্ষাকৃত ছোট একটি দল (১৫ থেকে ৪০ জন বাদক); এরা সাধারণত বারোক বা ধ্রুপদী যূগের সঙ্গীত বাজিয়ে থাকে। তত-ঐকবাদনদল কেবলমাত্র ততযন্ত্র বাদন করে। মঞ্চ ঐকবাদনদল সাধাণত গীতিনির্ভর মঞ্চনাটকে বাজায়; এগুলিতে স্যাক্সোফোনের প্রয়োগ বেশি।[]

ঐকবাদনদলকে বাংলায় "সমবেত বাদকদল", "ঐকতান-বাদকদল", "বৃন্দবাদন", ইত্যাদি সমার্থক পরিভাষা দিয়ে নির্দেশ করা হতে পারে। ঐকবাদনদলের ইংরেজি অনুবাদ হল "অর্কেস্ট্রা"; এই পরিভাষাটি গ্রিক শব্দ ὀρχήστρα (অরখিসত্রা) থেকে এসেছে, প্রাচীন গ্রিক মঞ্চের সামনের সারি গ্রিক ঐকতান-গায়কদের জন্য সংরক্ষিত থাকত।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. The Oxford Dictionary of Music (৬ষ্ঠ সংস্করণ), Oxford University Press, ২০১৩ 
  2. ὀρχήστρα, Henry George Liddell, Robert Scott, A Greek-English Lexicon, on Perseus

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা