এলসা ল্যানচেস্টার

ব্রিটিশ-আমেরিকান অভিনেত্রী

এলসা সুলিভান ল্যানচেস্টার (২৮ অক্টোবর ১৯০২ - ২৬ ডিসেম্বর ১৯৮৬) ছিলেন একজন ইংরেজ অভিনেত্রী।[১] তিনি ব্রাইড অব ফ্রাঙ্কেস্টাইন (১৯৩৫) চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকায় অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি ১৯৪০ ও ১৯৫০-এর দশক জুড়ে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। কাম টু দ্য স্টেবল (১৯৪৯) ও উইটনেস ফর দ্য প্রসিকিউশন (১৯৫৭) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং দ্বিতীয় চলচ্চিত্রটির জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগ গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন। এই দুটি চলচ্চিত্রে তিনি চার্লস লটনের সাথে অভিনয় করেন। ১৯৬২ সালে লটনের মৃত্যুর পরও ল্যানচেস্টারের অভিনয় জীবন সাময়িকভাবে থমকে যায় এবং তিনি পুনরায় ডিজনির ম্যারি পপিন্স (১৯৬৪), দ্যাট ডার্ন ক্যাট! (১৯৬৫) ও ব্ল্যাকবেয়ার্ড গোস্ট (১৯৬৮) চলচ্চিত্র দিয়ে অভিনয়ে ফিরে আসেন। তার অভিনীত ভীতিপ্রদ চলচ্চিত্র উইলার্ড (১৯৭১) বেশ সফল হয় এবং তার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র হল মার্ডার বাই ডেথ (১৯৭৬)।

এলসা ল্যানচেস্টার
Elsa Lanchester
এলসা ল্যানচেস্টার
জন্ম
এলসা সুলিভান ল্যানচেস্টার

(১৯০২-১০-২৮)২৮ অক্টোবর ১৯০২
লুইশাম মেট্রোপলিটন বরা, লন্ডন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৬ ডিসেম্বর ১৯৮৬(1986-12-26) (বয়স ৮৪)
পেশাঅভিনেত্রী
কর্মজীবন১৯২৫-১৯৮৩
দাম্পত্য সঙ্গীচার্লস লটন (বি. ১৯২৯; মৃ. ১৯৬২)

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

এলসা সুলিভান ল্যানচেস্টার লন্ডনের লুইশামে জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার পিতা জেমস "শ্যামাস" সুলিভান (১৮৭২-১৯৪৫) এবং মাতা ইডিথ "বিডি" ল্যানচেস্টার (১৮৭১-১৯৬৬)। তারা দুজনেই নিজেদের বোহিমিয়ান বলে গণ্য করেন এবং সেই যুগের রক্ষণশীল সমাজের প্রথায় তাদের বিবাহবন্ধনকে আইনসিদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানান। ১৯৭০ সালে ডিক ক্যাভেটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ল্যানচেস্টার বলেন তার পিতামাতা দুজনেই সমাজবাদী ছিলেন। এলসার বড় ভাই ওয়ালডো সুলিভান ল্যানচেস্টার একজন পুতুলনাচ শিল্পী। উস্টারশায়ারের ম্যালভার্ন এবং পরবর্তীকালে স্ট্র‍্যাটফোর্ড-আপন-অ্যাভনে তার ম্যারিওনেট কোম্পানি ছিল।

কর্মজীবন সম্পাদনা

ল্যানচেস্টার থ্রিলারধর্মী দ্য বিগ ক্লক (১৯৪৮) চলচ্চিত্রে একজন চিত্রশিল্পী চরিত্রে হাস্যরসাত্মক ভূমিকায় অভিনয় করেন। এতে লটন গণমাধ্যম ধনপতি চরিত্রে অভিনয় করেন। পরের বছর তিনি কাম টু দ্য স্টেবল (১৯৪৯) চলচ্চিত্রে যিশুর জন্মবিষয়ক চিত্রের চিত্রশিল্পী চরিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি উইটনেস ফর দ্য প্রসিকিউশন (১৯৫৭) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগ গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

ল্যানচেস্টার ১৯২৯ সালে অভিনেতা চার্লস লটনকে বিয়ে করেন।[৩]

ল্যানচেস্টার লটনের সাথে তার সম্পর্ক নিয়ে চার্লস লটন অ্যান্ড আই নামে একটি বই প্রকাশ করেন। ১৯৮৩ সালের মার্চে তিনি এলসা ল্যানচেস্টার হারসেলফ নামে একটি আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। বইটিতে তিনি দাবী করেন তার ও লটনের কোন সন্তান ছিল না কারণ লটন সমকামী ছিলেন। তবে লটনের বান্ধবী ও সহশিল্পী মরিন ওহারা এই দম্পতির সন্তান না হওয়ার এই দাবী অস্বীকার করেন। তিনি দাবী করেন ল্যানচেস্টার তার কর্মজীবনের শুরুতে বারলেস্ক পরিবেশনের কারণে গর্ভপাত করেছিলেন, সে কারণে তারা নিঃসন্তান ছিলেন। ল্যানচেস্টারও পরবর্তীকালে তার আত্মজীবনীতে যৌবনে তার দুইবার গর্ভপাতের বিষয়টি উল্লেখ করেন। কিন্তু দ্বিতীয় গর্ভপাতের কারণে তিনি সন্তান ধারণে অক্ষম হয়েছিলেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। তার জীবনীকার চার্লস হাইয়ামের ভাষ্য অনুসারে তার কোন সন্তান না থাকার কারণ হল তিনি কোন সন্তান চাননি।[৪]

মৃত্যু সম্পাদনা

এলসা ল্যানচেস্টার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৮৪ বছর বয়সে ১৯৮৬ সালের ২৬শে ডিসেম্বর ক্যালিফোর্নিয়ার উডল্যান্ড হিলসের মোশন পিকচার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৮৭ সালের ৫ই জানুয়ারি লস অ্যাঞ্জেলেসের চ্যাপল অব দ্য পাইন্সে তার মরদেহ পোড়ানো হয় এবং তার ছাই প্রশান্ত মহাসাগরে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।[৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "অবিচুয়ারি", ভ্যারাইটি, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৮৬।
  2. GRO Register of Births: MAR 1903 1d 1194 LEWISHAM - Elsa Sullivan Lanchester.
  3. GRO Register of Marriages: MAR 1929 1a 986 ST MARTIN - Charles Laughton=Elsa Sullivan or Lanchester
  4. হাইয়াম, পৃষ্ঠা ২৭।
  5. Mank 1999, p. 316.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা