এমি ন্যোটার

জার্মান গণিতবিদ

আমালিয়ে এমি ন্যোটার (মার্চ ২৩,১৮৮২ - এপ্রিল ১৪,১৯৩৫) ছিলেন একজন স্বনামধন্যা জার্মান গণিতবিদ। যদিও 'এমি ন্যোটার'- কেবল এই নামটুকুই বিদুষী এই বিজ্ঞানসাধিকা ব্যবহার করেছেন আজীবন। তিনি বিমূর্ত বীজগণিত এবং তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যায় ন্যোটার তত্ত্ব প্রবর্তন করেন।[১] আলবার্ট আইন্সটাইন, হারমান উইল প্রমুখ তাকে গণিতবিদ্যার ইতিহাসের অনন্যা বলে উল্লেখ করেছেন।[২] [৩]

এমি ন্যোটার
জন্ম
আমালিয়ে এমি ন্যোটার

(১৮৮২-০৩-২৩)২৩ মার্চ ১৮৮২
মৃত্যু১৪ এপ্রিল ১৯৩৫(1935-04-14) (বয়স ৫৩)
জাতীয়তাজার্মানি
মাতৃশিক্ষায়তনএরলাগেন বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণ
পুরস্কারAckermann–Teubner Memorial Award (1932)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রগণিত এবং পদার্থবিদ্যা
প্রতিষ্ঠানসমূহ
অভিসন্দর্ভের শিরোনাম (১৯০৭)
ডক্টরাল উপদেষ্টাপল গর্ডন
ডক্টরেট শিক্ষার্থী

ন্যোটার দক্ষিণ জার্মানির ফ্রাঙ্কোনিয়া প্রদেশের এরলাগেন শহরের এক ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মাক্স ন্যোটার ছিলেন এরলাগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক। প্রাথমিক ভাবে ইংরেজি এবং ফরাসী ভাষাসাহিত্যে শিক্ষকতার স্বপ্ন দেখলেও শেষপর্যন্ত ন্যোটার এরলাগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অঙ্ক নিয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯০৭ সালে পল গর্ডনের তত্ত্বাবধানে গবেষণা শেষ করে ম্যাথামেটিকাল ইন্সটিউট অফ এরলাগেনে অবৈতনিক শিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত হন। সেইসময় শিক্ষকতার সুযোগ থেকে মেয়েরা বঞ্চিত ছিলেন। পরে ১৯১৫ সালে ডেভিড হিলবার্ট এবং ফেলিক্স ক্লেইন তাকে গটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দিতে অনুরোধ করেন। যদিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপিকা হিসেবে নিয়োগপত্র পেতে তাকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই রক্ষণশীল দর্শন বিভাগের তুমুল বিরোধিতার মুখোমুখি পড়তে হয়। অবশেষে ১৯১৯ সালে ন্যোটার গটিঙেনের গণিতের অধ্যাপিকা রূপে স্বীকৃতি পান।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

১৯৩৩ সাল পর্যন্ত গটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতবিভাগের অন্যতম শিক্ষিকা ছিলেন এমি ন্যোটার। এই সময় তার গবেষণাপত্রগুলি সারা পৃথিবীতে জনপ্রিয়তা লাভ করে। এরপর জার্মান সর্বাধিনায়ক আডলফ হিটলারের ইহুদিবিদ্বেষের কারণে তিনি জার্মানি ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ১৯৩৫ সালে ডিম্বাশয়ে সিস্ট নিয়ে ন্যোটার হাসপাতালে ভর্তি হন। শল্যচিকিৎসায় আরোগ্যের ইঙ্গিত মিললেও মাত্র ৫৩ বছর বয়সে হঠাৎ অকালপ্রয়াত হন।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

 
পরিবারের সাথে ন্যোটার

এমি ন্যোটার ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ শে মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন সর্ববয়োজ্যেষ্ঠা। তার পিতৃদত্ত নাম 'আমেলিয়ে এমি ন্যোটার' হলেও খুব ছোট থেকেই তিনি 'এমি ন্যোটার' বলেই নিজের পরিচয় দিতেন। আত্মীয়স্বজন সকলেরই প্রিয়পাত্রী ছিলেন এমি। খুব কম বয়স থেকে মায়োপিয়া এবং উচ্চারণগত সমস্যাতে ভুগলেও তার বিচারধারা ছিল যুক্তিনির্ভর এবং বিশ্লেষণধর্মী। শোনা যায়, বিভিন্ন ধরনের ধাঁধাঁর সমাধানে এমি সবিশেষ পারদর্শিনী ছিলেন। তবু সেই সময়ের মেয়েদের মতো তাকেও প্রথম থেকেই ঘরকন্নার কাজ শেখানো হয়েছিল। এমি পিয়ানো বাজানোও শিখেছিলেন কিছুদিন। যদিও এসব কাজে এমির তেমন কোনো উৎসাহ কখনোই কারোর চোখে পড়েনি। তবে নৃত্যকলার ওপর তার এক স্বভাবজ দুর্বলতা ছিল।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "In her short life, mathematician Emmy Noether changed the face of physics"Science News (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৬-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৩ 
  2. Alexandrov, Pavel S. (১৯৮১)। "In Memory of Emmy Noether". Emmy Noether: A Tribute to Her Life and Work.। নিউ ইয়র্ক: মার্সেল ডেকার। পৃষ্ঠা ৯৯–১১১। আইএসবিএন 978-0-8247-1550-2 
  3. "Emmy Noether - NY Times obituary"Maths History (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৩