এক্কালাম
এক্কালাম হল মূলত ভারতের তামিলনাড়ুতে ব্যবহৃত একটি সুশীর যন্ত্র। এটি মন্দিরের উৎসব এবং মিছিলের সময় বাজানো একটি বাদ্যযন্ত্র। নাগপট্টিনামের শ্রী সৌন্দররাজা পেরুমল মন্দিরে পুরাত্তাসির সময় উদযাপিত দশ দিনের মানাওয়ালা মামুনিগাল উৎসব চলাকালীনও এটি বাজানো হয়। এটি সাধারণত ড্রাম বা অন্য এক্কালামের সাথে বাজানো হয়।[১]
বর্ণনা
সম্পাদনাএক্কালাম হল পিতল বা তামা দ্বারা তৈরি তূরী। এটিতে চারটি কপাটিকা রয়েছে যেগুলি একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকে, এর এক প্রান্তে একটি ঘণ্টা থাকে। বাদক যখন এটি বাজায় তখন তা থেকে বেরিয়ে আসা কম্পনের দ্বারা শব্দ উৎপাদিত হয়। ঠোঁটের টান পরিবর্তন করে এবং এর মধ্যে প্রবাহিত বায়ুর শক্তি পরিবর্তিত করে স্বর পরিবর্তন করা হয়।[১] উৎপাদিত শব্দের বেশিরভাগ ঘণ্টা থেকে সরাসরি বাইরের দিকে বেরিয়ে আসে।
শ্রীরঙ্গম মন্দিরে এই যন্ত্রের দুটি বৈচিত্র্য রয়েছে — একটি রৌপ্য নির্মিত (ভেলী এক্কালাম), যেটি বৈকুণ্ঠ একাদশী উৎসব চলাকালীন তিরুচিনামের সময় বাজানো হয়, এবং অন্যটি পিতলনির্মিত (সেম্বু এক্কালাম)। বৈকুণ্ঠ একাদশী উৎসব ছাড়াও, পাগল পাথু, কৈশিকা একাদশী উৎসব, থায়ারের জন্য নবরত্রি উৎসব এবং ভগবান রঙ্গনাথের শোভাযাত্রার সময়, পাঁচ ফুট দীর্ঘ ভেলি এক্কালাম বাজানো হয়।[১]
ইতিহাস
সম্পাদনাএর আগে পবিত্রতা, থের উৎসব এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উৎসব চলাকালীন এক্কালাম অনুষ্ঠিত হত। পড়াপ্পাইয়ের মরিয়ম্মান মন্দিরে আদি তিরুভিজার সময়, দেবতাকে শোভাযাত্রায় এক্কালামের সাথে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাচীন লোকশৈলী এক্কালা কুঠুতে, শিল্পীরা এই যন্ত্রটি বাজানোর সময় নৃত্য করতেন। থোটিপতি নায়াকাররা বিবাহ ও অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে এই যন্ত্রটি বাজাতেন। এখন এক্কালা কুঠুর অস্তিত্ব নেই।[১]
লোকেরা শিকারের জন্য গেলে এবং শিকার করা প্রাণীটি আনার সময়ে মিছিলে এক্কালাম বাজানো হত। তথ্যসূত্র বলছে যে তিরুচিনাম, উদাল, ব্রহ্মতালম, সাঙ্গু সহ এই যন্ত্রটি ভগবান শিবের প্রিয়। বহু প্রাচীন মন্দিরে এবং পেরিয়াপুরনমে পাথরের শিলালিপিতে এই প্রাচীন বাদ্যযন্ত্রটি সম্পর্কে উল্লেখ পাওয়া যায়।[১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- Premalatha, V. (1985) Music Through the Ages. Sundeep Prakashan. আইএসবিএন ৮১৭৫৭৪০৬৯৮