উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা
এই নিবন্ধটিতে কোনো উৎস বা তথ্যসূত্র উদ্ধৃত করা হয়নি। |
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা শিক্ষার একটি ধরন। মূলত উন্নয়নশীল দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটের আলোকে এই ধারার উৎপত্তি। সাধারণত আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতি বা প্রতিষ্ঠানের বাইরে, সুনির্দিষ্ট জনগোষ্টির জন্য, বিশেষ উদ্দেশ্যে সংগঠিত এবং বিশেষ শিখন চাহিদা পূরণের জন্য, আলাদাভাবে বা সমন্বিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরিচালিত শিক্ষামূলক কার্যক্রমই হচ্ছে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা (non formal education)।
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার ধারণা নতুন নয়। উন্নয়নশীল দেশে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করার আগেই অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে (drop out) বা কোন না কোন কারণে প্রাথমিক শিক্ষাচক্র (primary education cycle) সমাপ্ত করার আগেই স্কুল থেকে ঝরে পরে। ফলে এইসব দেশে এইভাবে নিরক্ষর জনগণের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। তাই তাদের মানে এইসব দেশের বিশাল নিরক্ষর জনগোষ্ঠীর অন্তর্গত অসুবিধাগ্রস্থ (disadvantaged) ছেলে-মেয়ে, কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকদের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার দ্বিতীয় সুযোগ (second chance of education) প্রদান করা যায়। তাই উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাকে শিক্ষার দ্বিতীয় সুযোগ দানকারী কার্যক্রমও বলা হয়।
আবার উন্নয়নশীল দেশসমূহে দেখা যায় সরকারের একার পক্ষে সকল শ্রেণির সকল মানুষের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয় না। তাই সেইসব ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সহায়ক/সম্পূরক ও পরিপূরক (supplementary and complementary) হিসেবেও কাজ করে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা। তবে কখনোই উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সমান্তরাল শিক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করতে পারে না।
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার উল্লেখ্যযোগ্য কিছু বৈশিষ্ট্য-
১। এটি একটি সুশৃঙ্খল নিয়ম-কানুন ও পদ্ধতির মাধ্যমে পরিচালিত উন্মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা।
২। শিক্ষাক্রম নির্দিষ্ট নয়, আর থাকলেও শিথিলযোগ্য।
৩। ডিগ্রীমুখী বা সার্টিফিকেটমুখী শিক্ষা নয়।
৪। এটি স্থানীয় সুযোগ-সুবিধা ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম
৫। শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুসারে বিষয়বস্তু নির্ধারিত হয়।
৬। ব্যবহারিক দিকগুলোর প্রতি বেশি লক্ষ রাখা হয়।
৭। আলাদাভাবে পরীক্ষা পদ্ধতির ব্যবস্থা নেই তবে ধারাবাহিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা আছে।